পদ্মার পানি বৃদ্ধি, দৌলতদিয়ার ৭ নম্বর ঘাট বন্ধ

পদ্মা নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধির ফলে র‌্যামের মাথা তলিয়ে যাওয়ায় রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ার ৭ নম্বর ফেরিঘাট বন্ধ হয়েছে। ৭ নম্বর ফেরিঘাট, দৌলতদিয়া, রাজবাড়ী, ৭ জুলাই
ছবি: প্রথম আলো

পদ্মা নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধির ফলে র‌্যামের মাথা তলিয়ে যাওয়ায় রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ার ৭ নম্বর ফেরিঘাট বন্ধ হয়েছে। ৭ নম্বর ফেরিঘাট, দৌলতদিয়া, রাজবাড়ী, ৭ জুলাই। ছবি: প্রথম আলোপদ্মা নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মা নদীর গোয়ালন্দ পয়েন্টে ১০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি বৃদ্ধির ফলে পন্টুনের র‍্যামের মাথা তলিয়ে যাওয়ায় আজ বুধবার সকাল থেকে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ার ৭ নম্বর ফেরিঘাটটি বন্ধ হয়েছে। একই সঙ্গে ৩ নম্বর ঘাটের র‍্যামের মাথা তলিয়ে যাওয়ায় বন্ধের উপক্রম হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) গোয়ালন্দ কার্যালয়ের গেজপাঠক সালমা খাতুন বলেন, প্রতিদিন পদ্মা নদীর পানি বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ভাগ্যকূল গোয়ালন্দ পয়েন্টে ১০ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে গোয়ালন্দ পয়েন্টে পানির লেভেল হচ্ছে ৮ মিটার। গতকাল মঙ্গলবার এখানে পানির লেভেল ছিল ৭ দশমিক ৯০ মিটার। বর্তমানে বিপৎসীমার মাত্র ৬৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পানি বৃদ্ধির কারণে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর সড়ক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ার চলমান পাঁচটি ফেরিঘাটের মধ্যে ৭ নম্বর ঘাট আজ সকাল থেকে বন্ধ হয়েছে। এর আগে তিন দিন ধরে ৭ নম্বর ঘাটের পন্টুনের র‍্যামের মাথা তলিয়ে যায়। তার ভেতর দিয়ে ফেরিতে যানবাহন ওঠানামা অব্যাহত থাকে। গতকাল দিবাগত রাত থেকে পানির গভীরতা আরও বাড়ায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়াতে কর্তৃপক্ষ আজ সকালে ঘাট বন্ধ করে দেয়। পাশেই বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) মিডওয়াটার লেভেলের একটি ঘাট নির্মাণ করছে। আগামী ৬ মাস মেরামতসহ ঘাট তৈরিতে আনুষঙ্গিক ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২০ লাখ টাকা।

পানি বাড়ায় ৩ নম্বর ঘাটের পন্টুনের র‍্যামের মাথা তলিয়ে গেছে। সেখানে গতকাল বিআইডব্লিউটিএ ইটের আদলা ফেলে যানবাহন ফেরিতে ওঠানামার ব্যবস্থা করেছে। তবে পানির মাত্রা আরও বাড়তে থাকলে এই ঘাটও যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বাকি ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ঘাট দিয়ে ফেরিতে স্বাভাবিক গতিতেই গাড়ি ওঠানামা করছে।

আজ সরেজমিনে দেখা যায়, দৌলতদিয়ার ৩, ৪, ৫, ৬ ও ৭ নম্বর ঘাটের মধ্যে ৭ নম্বর ঘাটটি বন্ধ রাখা হয়েছে। সেখানে বিআইডব্লিউটিএর একটি টাগবোট রাখা হয়েছে। এ ছাড়া কয়েকটি জেলেনৌকা সেখানে নোঙর করে রাখা হয়েছে। ঘাটে পন্টুনের সঙ্গে বেঁধে রাখা বিআইডব্লিউটিএর বোটে লোকজন অপেক্ষা করছেন। পাশেই মূল সড়ক থেকে প্রায় ৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি অ্যাপ্রোচ সড়ক বা সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে। শ্রমিকেরা ইটের আদলা ও বালুভর্তি বস্তা ফেলছে। ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ঘাট চালু রয়েছে। ৩ নম্বর ঘাট চালু থাকলেও র‍্যামের মাথা তলিয়ে যাওয়ায় তার ভেতর দিয়েই ফেরিতে যানবাহন ও যাত্রী ওঠানামা করছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় যেকোনো মুহূর্তে ঘাট বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে ৯টি ফেরি চললেও আজ আরও একটি ইউটিলিটি ফেরি কমানো হয়েছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (মেরিন) আবদুস সাত্তার বলেন, ৭ নম্বর ঘাটের র‍্যামের পানির গভীরতা বেশি হওয়ায় দুর্ঘটনা এড়াতে ঘাটটি বন্ধ রাখা হয়েছে। ৩ নম্বর ঘাটের র‍্যামের মাথা তলিয়ে গেলেও ইটের আদলার বস্তা ফেলে সচল রাখা হয়েছে। তবে বেশি পানি বাড়লে বিকল্প চিন্তা করা হবে। বাকি ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ঘাট সচল রয়েছে।

আবদুস সাত্তার আরও বলেন, বর্তমানে দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া নৌপথে ৯টির পরিবর্তে ৪টি রো রো (বড়), ৩টি ইউটিলিটি (ছোট) এবং ১টি কে–টাইপ (মাঝারি) ফেরি চলাচল করছে। গতকাল ৯টি চললেও যান্ত্রিক ত্রুটিতে আজ সকাল থেকে ১টি ছোট ফেরি বসা রয়েছে। তবে যানবাহনের সংখ্যা বাড়লে প্রয়োজনে ফেরিসংখ্যা বাড়ানো হবে।