নুসরাত হত্যার বিচার আইনের শাসনের ইতিহাসে দৃষ্টান্ত: গণপূর্তমন্ত্রী
খুলনা বিভাগীয় আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির অনুষ্ঠানে বক্তব্যে দিচ্ছেন গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। সুপ্রিম কোর্ট বার মিলনায়তন, ঢাকা, ২৪ অক্টোবর। ছবি: প্রেস বিজ্ঞপ্তি
গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, নুসরাত হত্যাকাণ্ডের বিচারের মাধ্যমে বাংলাদেশে আইনের শাসনের ইতিহাসে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডে দ্রুততার সঙ্গে তদন্ত ও বিচার শেষ হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচারে আইনজীবীরা গৌরবময় ভূমিকা পালন করেছেন। এভাবে সভ্য সমাজ বিনির্মাণে আইনজীবীরা বিশাল ভূমিকা পালন করতে পারেন।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর সুপ্রিম কোর্ট বার মিলনায়তনে খুলনা বিভাগীয় আইনজীবী সমিতির ২০১৯-২০–এর কার্যনির্বাহী কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গণপূর্তমন্ত্রী এসব কথা বলেন। মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, ‘নৈতিকতা ও মূল্যবোধের চরম অবক্ষয়ের জায়গা থেকে আমরা বেরিয়ে এসেছি। এ দেশে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের বিচার, বিশ্বজিৎ হত্যার বিচার, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচার আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হয়েছে। এ সরকারের আমলেই প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিরা দুর্নীতির দায়ে দল থেকে বহিষ্কৃত হচ্ছেন, গ্রেপ্তার হচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ক্ষেত্রে কে প্রভাবশালী, কে দলের লোক, কে আত্মীয়—এসব বিবেচনা করছেন না। ক্ষমতাসীন দলের হলেই সবকিছুর ঊর্ধ্বে থাকব, এটা হতে পারে না। বাংলাদেশ উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় আরও এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। দুর্নীতি ও নৈতিকতাবিবর্জিত কর্মকাণ্ড আমাদের পিছিয়ে রেখেছে।’
আইনজীবীদের উদ্দেশে শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় আপনারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। এ অঙ্গনে পরস্পরের মধ্যে সৌহার্দ্য, শ্রদ্ধা ও সম্প্রীতি থাকতে হবে। তা না হলে এখানে শূন্যতা সৃষ্টি হতে পারে। আইন অঙ্গনে সবার মধ্যে সম্পর্কের যে গৌরব, তা পুনরুদ্ধার করা দরকার। এ জন্য মৌলিক সুকুমারবৃত্তির চর্চা দরকার, আত্মসমালোচনা আর আত্মশুদ্ধি দরকার।’
খুলনা বিভাগীয় আইনজীবী সমিতির সভাপতি সৈয়দ আমজাদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে সূচনা বক্তব্য দেন খুলনা বিভাগীয় আইনজীবী সমিতির প্রধান উপদেষ্টা ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকার, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম আমিন উদ্দিন প্রমুখ।
আলোচিত মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান ওরফে রাফি হত্যা মামলায় ১৬ জনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মামুনুর রশিদ। তাঁরা হলেন সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা, সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি রুহুল আমিন, সোনাগাজী পৌরসভার কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম, মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ আবদুল কাদের, প্রভাষক আফসার উদ্দিন, মাদ্রাসার ছাত্র নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, সাইফুর রহমান মোহাম্মদ যোবায়ের, জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ, কামরুন নাহার মনি, উম্মে সুলতানা পপি ওরফে তুহিন, আবদুর রহিম শরিফ, ইফতেখার উদ্দিন রানা, ইমরান হোসেন মামুন, মোহাম্মদ শামীম ও মহি উদ্দিন শাকিল।