নির্বাচন কমিশন বিড়ালে পরিণত হবে: মাহবুব তালুকদার
জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচন সংক্রান্ত আইনের সংস্কার প্রস্তাবে ভিন্নমত জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। আজ সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বৈঠকে তিনি লিখিত আকারে তাঁর মত তুলে ধরেন বলে জানা গেছে।
আজ ‘স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন পরিচালনা আইনের খসড়া অনুমোদন' করার জন্য বৈঠকে বসেছিল ইসি। এই খসড়ায় স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও পদের নাম বাংলায় করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এই প্রস্তাবের পাশাপাশি গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২ (আরপিও) এর সংস্কার প্রস্তাবেরও ভিন্নমত পোষণ করে বক্তব্য (নোট অব ডিসেন্ট) দেন মাহবুব তালুকদার। তিনি বলেন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধন করে প্রার্থিতা বাতিলে ইসির ক্ষমতা বাদ দেওয়া হলে ইসি নখ দন্তহীন বাঘ নয়, বিড়ালে পরিণত হবে। প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা এককভাবে সরাসরি ইসির হাতে রাখতে হবে। তিনি গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর নাম পরিবর্তন করে 'গণপ্রতিনিধিত্ব আইন, ২০২০' করারও বিরোধিতা করেন।
প্রসঙ্গত, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে কিছু সংস্কারসহ বাংলায় রূপান্তরের জন্য ইসি একটি খসড়া আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিল। মন্ত্রণালয় কিছু পর্যবেক্ষণসহ সেটি ফেরত পাঠিয়েছে। তবে আজকের বৈঠকে এই খসড়া নিয়ে আলোচনা হয়নি।
স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন আইন সংস্কারের প্রস্তাবের বিষয়ে মাহবুব তালুকদার বলেন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর কাঠামো, মেয়াদকাল ইত্যাদি পরিবর্তন নির্বাচন কমিশনের কর্তব্য নয়। বিশেষত স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পদ ও পদবি পরিবর্তন নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার নয়। এই সংস্কার কার্যক্রম নিতান্তই স্থানীয় সরকারের বিষয়।
বৈঠক শেষে মাহবুব তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, আমি নির্বাচন কমিশনের সভায় নোট অব ডিসেন্ট পড়েছি এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য নির্বাচন কমিশনারদের হাতে এর কপি তুলে দিয়েছি।'
বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকে অন্য একজন নির্বাচন কমিশনার বলেন, স্থানীয় সরকার আইন সংস্কারে ইসির এখতিয়ার আছে কি না তা দেখা উচিত। অন্য একজন বলেন, সংশ্লিষ্টরা আাইন সংস্কার করলে ইসি নির্বাচন পরিচালনার বিধিমালা করতে পারে।
বৈঠক শেষে ইসি সচিব মো. আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, এই আইনের খসড়া চূড়ান্ত হয়নি। এটি নিয়ে আরও বৈঠক হবে।
ইসি সচিব বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে ইসির কথা হয়েছে। স্থানীয় সরকারের আইনগুলো হালনাগাদ করতে কমিশন গঠনের একটি প্রস্তাব সরকারে উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। ওই কমিশন গঠন হলে তখন হয়তো এই সংশোধনীর বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হবে।