নির্বাচন এলেই ভারতে ছোটেন যশোরের ইদ্রিস
মুহম্মদ ইদ্রিস আলি শেখ। বয়স এখন ৫১ বছর। পেশায় হরবোলা। দীর্ঘদিন ধরেই ইদ্রিস এই পেশায় আছেন। স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে বাংলাদেশের যশোর জেলায় তাঁর বসবাস। ভারতের লোকসভা নির্বাচন এলেই ইদ্রিস হরবোলা পূর্ববাংলা থেকে ছুটে আসেন পশ্চিম বাংলায়। শৈল্পিক নৈপুণ্য প্রদর্শন করে তিনি অর্থ আয় করেন। মানুষও মুগ্ধ হয় তাঁর হরবোলা বিদ্যা উপভোগ করে। সিনেমার বড় বড় সংলাপ থেকে বিখ্যাত সব শিল্পীর গানও নকল করতে পারেন ইদ্রিস। কণ্ঠে বাজাতে পারেন তবলা, হারমোনিয়াম, গিটার, ড্রাম, অক্টোপ্যাডের বাজনা। এ ছাড়া দেখাতে পারেন জাদুবিদ্যাও।
পাসপোর্ট-ভিসাসহ সব আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেই ইদ্রিস পশ্চিমবঙ্গে এসেছেন। ইদ্রিস আলি বলেন, ছোটবেলা থেকে তিনি হরবোলা বিদ্যা আয়ত্ত করেন। অর্থের অভাবে বেশি দূর পড়তে পারেননি তিনি। স্কুল থেকে বিদায় নিয়ে হরবোলা শিল্পচর্চা শুরু করেন। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে হরবোলার কারুকাজ দেখিয়ে যে অল্প-স্বল্প টাকা আয় করেন, তা দিয়েই দিন গুজরান করেন। মাঝেমধ্যে ইদ্রিস জাদু দেখিয়েও আয় করেন। হরবোলাবিদ্যা দেখানোর জন্য তিনি কিনেছেন একটি হ্যান্ডমাইক। আগের চেয়ে এখন তাঁর অর্থনৈতিক সচ্ছলতাও বেড়েছে।
কদিন আগে ইদ্রিস আলি যশোর থেকে পশ্চিমবঙ্গে এসে এরই মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনা ঘুরেছেন। তিনি বলেন, ২০ বছর ধরে তিনি হরবোলা হয়ে ভারতে আসছেন। তবে ভোটের প্রচার করছেন ২০১১ সাল থেকে। তিনি সব দলের নেতাদের চেনেন। কিন্তু কোনো রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন। যে তাঁকে ডাকেন, সেখানেই ছুটে গিয়ে অর্থের বিনিময়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালান তিনি।
২০১১ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা এবং ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনেও তিনি এসেছিলেন। শেষবার এসেছেন ২০১৬ সালের রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনে। আর এবার এলেন ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে। হরবোলা ইদ্রিস আলি শেখ বলেন, বাংলাদেশের একটি সিনেমাতেও তিনি অভিনয় করেছেন। তিনি যেকোনো সময় যে কাউকে নিয়ে বাঁধতে পারেন গান। তাইতো তাঁর মতো হরবোলাদের ডাক পড়ে। গলায় বাজাতে পারেন গিটার ও ড্রাম। বিদেশের মাটিতে এখন তাঁর অপেক্ষা পরবর্তী কাজের জন্য কখন তাঁর ডাক পড়ে।