নিরাপত্তা চেয়ে সেই প্রকৌশলীর জিডি
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আলিমুজ্জামান সার্বিক নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে আজ বুধবার দুপুরে তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানায় এ জিডি করেন। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি পাঁচ দিনের ছুটির আবেদন করেছেন। তবে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত সেই ছুটি মঞ্জুর হয়নি।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম আবদুল লতিফ বিকেল পাঁচটায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রকৌশলীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর লিখিত জিডি থানায় দেওয়া হয়েছে। ছুটির আবেদনটি দেখা হচ্ছে।’
এর আগে গত সোমবার রাতে প্রকৌশলী আলিমুজ্জামান পদত্যাগ করবেন বলে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস দেন। তিনি সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, ক্যাম্পাসের অবকাঠামো উন্নয়নে ৫৩৭ কোটি টাকার মেগা প্রকল্পের কাজ ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠানকে পাইয়ে দিতে তাঁকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তথ্যপ্রমাণসহ বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানানোর কথা ভাবছেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্র জানায়, প্রকৌশলীর ঘটনাকে কেন্দ্র শিক্ষক সমিতির সভাপতি কাজী আখতার হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন উপাচার্য। আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে দোষী ব্যক্তিদের শনাক্ত করার জন্য এ তদন্ত কমিটি করা হয়।
জিডিতে প্রকৌশলী উল্লেখ করেন, ১৫ দিন ধরে বিভিন্ন সময় তাঁকে ‘আনসিন’ নম্বর থেকে ফোন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেগা প্রকল্পের কাজ তাদের পাইয়ে দিতে বলে। না দিলে তাঁর (প্রকৌশলী) সন্তানদের ক্ষতি করা হবে বলে জানায়। পাশাপাশি বলা হয়, তাঁকে অপমানিত হতে হবে এবং তাঁর বিরুদ্ধে পত্রপত্রিকায় খারাপ কিছু লিখে সামাজিকভাবে হেয় করা হবে। এ ছাড়া কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন নারীর নম্বর দিয়ে ফোন করে এবং ফেসবুকের মেসেঞ্জারে বার্তা পাঠিয়ে ব্ল্যাকমেল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এতে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। একই কারণে তিনি গত বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারিও থানায় জিডি করেছিলেন।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আরিপ বলেন, থানায় জিডি হয়েছে। কারও নাম উল্লেখ নেই। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মেগা প্রকল্পের পরিকল্পনা পরিচালক আলী হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রকৌশলী আলিমুজ্জামানের বিষয়টি জেনেছি। তবে তিনি (প্রকৌশলী) খুবই সৎ মানুষ। তিনিসহ আমি থাকতে এই প্রকল্পে কোনো অনিয়ম হতে দেব না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. হারুন-উর-রশিদ আসকারী প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রকৌশলী নিজে আজ আমার সঙ্গে দেখা করেছেন। তাঁকে তদন্ত কমিটির কাছে বিস্তারিত বলতে বলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে যাতে ব্যাঘাত না ঘটে, সে বিষয়ে যা যা করার প্রয়োজন, তার সবই করা হবে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’