২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

নিজেদের অধিকার আদায়ে নারীদের যোগ্যতা অর্জনের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথির ভাষণ দেন
ছবি: পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের নারীসমাজকে নিজ নিজ অধিকার আদায়ে নিজেদের যোগ্যতর হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী আজ সোমবার (৮ মার্চ) আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এই আহ্বান জানান। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠান আয়োজন করে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের এই সমাজকে যদি আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই, তাহলে নারী-পুরুষনির্বিশেষে সকলে এক হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি নারীদের একটা কথাই বলব, নারীদের অধিকার দাও, অধিকার দাও বলে চিৎকার করা, বলা আর বক্তৃতা দেওয়া—এতে কিন্তু অধিকার আদায় হয় না। অধিকার আদায় করে নিতে হবে। অধিকার আদায়ের মতো যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেই যোগ্যতা আসবে শিক্ষাদীক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে। যে কারণে দেশ স্বাধীন হওয়ার পরই এ দেশে নারীশিক্ষা বাধ্যতামূলক ও অবৈতনিক করে দেন জাতির পিতা।’

বর্তমান সরকার ২ কোটি ৫ লাখ ছেলেমেয়েকে বৃত্তি-উপবৃত্তি দিচ্ছে। যার মধ্যে বেশির ভাগই নারী বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘সমাজকে যদি গড়ে তুলতে হয়, তবে নারী-পুরুষ সকলকেই শিক্ষা দিতে হবে। যে কারণে আমরা প্রতিটি প্রশিক্ষণকেন্দ্রেও নারী-পুরুষনির্বিশেষে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি।’

শেখ হাসিনা অতীত স্মরণ করে বলেন, তিনি ১৯৯৬ সালে সরকারে এসে দেখেন, কোনো নারী ডিসি-এসপির পদ পান না। উপজেলায় কোনো নারী ইউএনওর পদ পান না। কিন্তু তাঁর সরকার ক্ষমতায় আসা পর থেকে সব পদে নারীরা আসীন হয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন, জাতীয় সংসদের স্পিকার, সংসদ নেতা, বিরোধী দলীয় নেতা, সংসদীয় উপনেতা সবাই নারী। এটাই বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় অর্জন।

শেখ হাসিনা বলেন, অতীতে ধর্মের নাম নিয়ে বা সামাজিকতার কথা বলে নারীকে পশ্চাৎপদ করে রাখার অপচেষ্টা সমাজ থেকে দূর হয়েছে।

বিভিন্ন প্রতিকূলতাকে পাশ কাটিয়ে জীবনসংগ্রামে জয়ী নারীদের সম্মাননা দেওয়ার একটি বিশেষ উদ্যোগ ‘জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ’। সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখায় প্রতি বছর আন্তর্জাতিক নারী দিবসে পাঁচজন ‘জয়িতা’কে এই কর্মসূচির মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ে সম্মাননা দেওয়া হয়। এবারও পাঁচজনকে জয়িতা সম্মাননায় ভূষিত করা হয়েছে।

সম্মাননা পাওয়া নারীরা হলেন অর্থনৈতিকভাবে সফল নারী ক্যাটাগরিতে হাছিনা বেগম নীলা, শিক্ষা ও চাকরির সাফল্যের ক্যাটাগরিতে মিফতাহুল জান্নাত, সফল জননী নারী ক্যাটাগরিতে মোসাম্মাৎ হেলেন্নেছা বেগম, নির্যাতিতা-বিজয়ী নারী ক্যাটাগরিতে বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা রবিজান ও সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য অঞ্জনা বালা বিশ্বাস।

প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বেগম ফহিলাতুননেসা ইন্দিরা বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার হিসেবে এক লাখ টাকার চেক, সম্মাননা ক্রেস্ট ও সনদ তুলে দেন।

মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সেপ্পো বিশেষ অতিথির বক্তৃতা দেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম স্বাগত বক্তব্য দেন। জয়িতা পদকপ্রাপ্তদের পক্ষে অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তৃতা দেন হাছিনা বেগম নীলা।

মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য, পদস্থ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা, বিভিন্ন কূটনৈতিক মিশন-দূতাবাসের প্রতিনিধি ও আমন্ত্রিত অতিথিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা পর্বের মধ্যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।