নিক্সন বিধি লঙ্ঘন করেছেন, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা: সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, স্বতন্ত্র সাংসদ মুজিবর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসককে (ডিসি) হুমকি ও নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের গালিগালাজ করার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন সিইসি কে এম নূরুল হুদা।
এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে সিইসি নূরুল হুদা বলেন, ‘আমরা জানি, অভিযোগ আছে। অভিযোগটা আমরা সাথে সাথে জেনেছি। কমিশনারদের সাথে আলোচনা করেছি। করণীয় বিষয় নির্ধারণ করেছি। আজ বা কালকের মধ্যেই করণীয়, যেটা সিদ্ধান্ত নিয়ে, সেটা যাবে। অবশ্যই যে আচরণ সংসদ সদস্য করেছেন, নির্বাচন পরিচালনা করার সময় সেটা কাম্য নয়। আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন। আইনে যে রকম বিধিবিধান আছে, তাঁর ব্যাপারে আইনের বিধিবিধান প্রযোজ্য হবে। এতটুকু বলতে পারি।’
সাংসদ মুজিবর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, মামলার বিধান থাকলে করা হবে। এখনো এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি।
ফরিদপুরের ডিসি অতুল সরকারকে ‘দাঁতভাঙা জবাব’ দেওয়ার হুমকি দেন সাংসদ মুজিবর রহমান। এ ছাড়া চরভদ্রাসনের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) ফোনে ফোন করে গালিগালাজ করেছেন ভাঙা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি)-এসি ল্যান্ডকে। চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত শনিবার এ ঘটনা ঘটে।
এই দুই ঘটনার ভিডিও ও অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনায় বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের ফরিদপুর জেলা শাখা গত রোববার সভা করে এ ঘটনার প্রতিকার চেয়েছে। জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ ঘটনায় নিন্দা প্রস্তাব আনা হয়। এবং এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।
নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে এক ব্যক্তিকে আটক করার জের ধরে সাংসদ এসি ল্যান্ডকে গালিগালাজ করেন বলে অভিযোগ। তবে এ বিষয়ে সাংসদ মুজিবর রহমান প্রথম আলোকে বলেছেন, ভাঙ্গার এসি ল্যান্ড তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এতে তিনি খুব ক্ষুব্ধ হন। বিষয়টি ইউএনওকে জানান এবং ইউএনও ফোন করে জানান এসি ল্যান্ড ফোন ধরছেন না। তখন এসি ল্যান্ড সম্পর্কে ‘বকাবাজি’ করেন।
জেলা প্রশাসক সম্পর্কে বক্তব্যের বিষয়ে মুজিবর রহমানের ভাষ্য, সারা দিনের ঘটনা এবং তাঁর অন্তত ১০ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার, কাউকে জরিমানা করায় জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। সেই ক্ষোভ প্রকাশ যাতে অন্য রকম না হয়, সে জন্য ডিসি সম্পর্কে এভাবে কথা বলেছেন।
চেয়ারম্যান পদের ওই উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কাওসার হোসেন (নৌকা) নির্বাচিত হন। তাঁকে সমর্থন দেন সাংসদ মজিবুর রহমান।
সাংসদের বক্তব্যের বিষয়ে জেলা প্রশাসক অতুল সরকারের ভাষ্য, বিষয়টি শিষ্টাচারবহির্ভূত। একজন সাংসদের কাছ থেকে এ-জাতীয় বক্তব্য প্রত্যাশিত নয়।