নাজুক সড়কে যানবাহন চলে হেলেদুলে

>

কার্পেটিং উঠে গেছে বহু আগে। সৃষ্টি হয়েছে ছোট–বড় গর্ত। ছবিটি সম্প্রতি পাইকগাছা উপজেলার দরগা মহল এলাকা থেকে তুলেছেন সাদ্দাম হোসেন
কার্পেটিং উঠে গেছে বহু আগে। সৃষ্টি হয়েছে ছোট–বড় গর্ত। ছবিটি সম্প্রতি পাইকগাছা উপজেলার দরগা মহল এলাকা থেকে তুলেছেন সাদ্দাম হোসেন

দেশের বিভিন্ন জেলায় সড়কগুলো বেহাল হয়ে পড়েছে। কোথাও কোথাও নির্মাণের অল্প দিনের মধ্যেই পিচ–খোয়া উঠে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে গর্তের। কোথাও সড়ক ধসে পড়েছে। এসব সড়ক নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদন

পিচঢালাই ওঠা সড়কে বহু গর্ত। গর্ত ভরা সড়কে ইট বিছিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। তিন বছর ধরে সড়কটি ইট বিছিয়ে জোড়াতালি দিয়ে সংস্কার করা হচ্ছে। খুলনা-পাইকগাছা-কয়রা সড়কের এই অবস্থা।

জেলা সদরে যাতায়াতে পাইকগাছা ও কয়রা উপজেলার মানুষের জন্য এটা প্রধান সড়ক। সম্প্রতি ওই সড়কে গিয়ে দেখা গেছে, সড়কের পাইকগাছা অংশের কপিলমুনি বাজারের এক কিলোমিটার পর থেকে আলমতলা পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার সড়কের অবস্থা নাজুক। সেখানকার বেশির ভাগ অংশে ইট বিছানো। কিছু কিছু জায়গায় পিচ থাকলেও সেটুকুতে আছে ছোট-বড় গর্ত। এতে বাস-ট্রাকসহ সব ধরনের যানবাহন ভাঙা জায়গার পাশ কাটিয়ে হেলেদুলে চলছে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলা সদর থেকে পাইকগাছার দূরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার। আর কয়রার দূরত্ব ১০০ কিলোমিটারেরও বেশি। এর মধ্যে খুলনা-সাতক্ষীরার বেতাগ্রাম পর্যন্ত আঞ্চলিক মহাসড়ক রয়েছে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার।

পাইকগাছা উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম সিদ্দিকী বলেন, অফিসের কাজে প্রতি মাসে কমপক্ষে একবার জেলা সদরে যেতে হয়। সড়কের যে অবস্থা তাতে এক দিন গেলেই শরীর ব্যথা হয়ে যায়। তা ছাড়া সড়কের এ বেহাল দশার কারণে বাসগুলোও সময়মতো আসা-যাওয়া করে না। ফলে পাইকগাছা থেকে খুলনায় যেতে চার ঘণ্টার বেশি সময় লাগে।

স্থানীয় ব্যক্তিরা বলেন, খুলনার উপজেলাগুলোর মধ্যে এই সড়কটি সবচেয়ে ব্যস্ত। ২০০৯ সাল থেকে সড়কটি বেহাল। ২০১২ সালে একবার জরুরি ভিত্তিতে কিছু অংশে পিচঢালাই করা হয়। কিন্তু সেটা মাত্র এক বছর টিকেছিল। কখনো একসঙ্গে পুরো সড়ক সংস্কার করা হয়নি। ফলে সব সময় সড়কের কোনো না কোনো অংশে তাঁদের যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়। ওই ১৬ কিলোমিটার পার হতে যেকোনো বাস বা গাড়ির দেড় ঘণ্টার বেশি লেগে যায়।

তমা ইসলামের বাড়ি পাইকগাছায়। তবে পড়াশোনার জন্য থাকেন খুলনায়। তিনি বলেন, ‘সড়কের নাজুক অবস্থার কারণে দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে বাড়ি যাইনি। যেতে ইচ্ছা হলেও রাস্তার কথা মনে হলে সে ইচ্ছা মাঠে মারা যায়।’

কপিলমুনি এলাকার ট্রাকচালক শেখ শফিকুল ইসলাম বলেন, ওই সড়কে ট্রাক নিয়ে গেলে ট্রাকের অনেক ক্ষতি হয়।

পাইকগাছা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান স ম বাবর আলী বলেন, উপজেলা পরিষদ থেকে সড়কটি সংস্কারের ব্যাপারে বিভিন্ন দপ্তরে বহুবার যোগাযোগ করা হয়েছে। কিন্তু তাঁরা অবহেলার শিকার হচ্ছেন।

খুলনা সওজ উপবিভাগ-২-এর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মামুন কাওসার বলেন, সড়কটি সংস্কারের ব্যাপারে পাঠানো প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। অনুমোদন হয়ে গেলে যত দ্রুত সম্ভব দরপত্র আহ্বান করা হবে। পাশাপাশি দীর্ঘ এ সড়কটির জন্য একটি প্রকল্পও জমা দেওয়া হয়েছে।