নাইকোর সঙ্গে চুক্তি কেন বাতিল নয়

গ্যাস উত্তোলন ও সরবরাহের জন্য প্রায় এক যুগ আগে সরকারি প্রতিষ্ঠান বাপেক্সের সঙ্গে কানাডার প্রতিষ্ঠান নাইকোর করা যৌথ উদ্যোগ (জয়েন্ট ভেনচার) চুক্তি কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে আদালত ওই চুক্তির কার্যকারিতা স্থগিত করেছেন।
জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল সোমবার এই রুল ও স্থগিতাদেশ দেন। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান এবং নাইকো কানাডা ও নাইকো বাংলাদেশকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তানজীব-উল আলম। তাঁকে সহায়তা করেন আইনজীবী ইমরান আনোয়ার। পরে ইমরান আনোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, ২০০৩ সালে বাংলাদেশে গ্যাস উত্তোলন ও সরবরাহের জন্য নাইকোর সঙ্গে দুটি চুক্তি করে বাপেক্স ও পেট্রোবাংলা। একটি বাপেক্সের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগের চুক্তি, অপরটি পেট্রোবাংলার সঙ্গে গ্যাস সরবরাহ ও কেনাবেচার চুক্তি। চুক্তি দুটিকে চ্যালেঞ্জ করে জনস্বার্থে এই রিট আবেদনটি করেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম। আদালত প্রাথমিক শুনানি শেষে রুল ও স্থগিতাদেশ দিয়েছেন।
দেশের কয়েকটি প্রান্তিক গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন ও সরবরাহের জন্য ওই চুক্তি দুটি হয়েছিল। সেই অনুসারে ফেনী গ্যাসক্ষেত্র থেকে নাইকো গ্যাস উত্তোলন ও সরবরাহ করে এবং সুনামগঞ্জের ছাতকের টেংরাটিলায় কূপ খনন করতে গিয়ে দুবার বিস্ফোরণ ঘটায়। এরপর থেকে পেট্রোবাংলা নাইকোর কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করে আসছে। আর নাইকো ইকসিডে (বিনিয়োগ বিরোধ নিষ্পত্তিসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক আদালত) গিয়ে ক্ষতিপূরণ না দেওয়ার জন্য মামলা করে।
আর ফেনী থেকে যে গ্যাস উত্তোলন করে নাইকো সরবরাহ করেছিল, তার দাম হিসেবে আড়াই মিলিয়ন মার্কিন ডলার তারা এখনো পায়নি। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) করা একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ওই দাম পরিশোধের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছেন।