ধর্ষণের প্রমাণ অনেকাংশে ডাক্তারি পরীক্ষার ওপর নির্ভরশীল
ধর্ষণের প্রমাণ অনেকাংশে ডাক্তারি পরীক্ষার ওপর নির্ভরশীল। মেয়েটির পুরো শরীরে জোরজবরদস্তির লক্ষণ পরীক্ষা করা হয়। যোনিপথ, যৌনাঙ্গ ও আশপাশ থেকে নমুনা নিয়ে বীর্যের উপাদান খোঁজা হয়।
অভিযোগকারীর রক্তসহ আলামতের বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়। বয়সও নির্ণয় করা হয়। ডিএনএর নমুনা পেলে সেটার পরীক্ষা হয়।
বাংলাদেশে ফরেনসিক ডাক্তাররা আঘাত ও জোরজবরদস্তি বোঝার জন্য আঙুল দিয়ে যোনিপথ পরীক্ষা করেন, যোনিপথের প্রবেশযোগ্যতা ও পর্দার অবস্থা দেখেন। এর ব্যাখ্যা ভুক্তভোগীর চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ করে দেয়।
একটি রিট মামলার রায়ে গত সপ্তাহে হাইকোর্ট ধর্ষণের ক্ষেত্রে ডাক্তারি পরীক্ষায় এই ‘দুই-আঙুলি’ পদ্ধতিটি নিষিদ্ধ করেছেন। এর আগে ঢাকার দুটি মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডাক্তাররা প্রথম আলোকে বলেছিলেন, তাঁদের কাছে পদ্ধতিটির বিকল্প নেই।
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া) সাবেক উপদেষ্টা ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মোজাহেরুল হক বলেছেন, এ ক্ষেত্রে পদ্ধতিটি যথাযথ বা বিজ্ঞানসম্মত নয়। এটা ভুক্তভোগীর শারীরিক ও মানসিক ক্ষত-আঘাত বাড়িয়ে দিতে পারে। বাইরের দুনিয়ায় এখন ধর্ষণের ক্ষেত্রে এ পরীক্ষা করা হয় না। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘জবরদস্তি সঙ্গম হয়েছে কি না, তা যৌনাঙ্গসহ শরীরের লক্ষণ দেখে বা আলামতের অন্য পরীক্ষাগুলো থেকে বোঝা সম্ভব।’
ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পরীক্ষা করালে আলামত সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়। দেরি হতে থাকলে, ভুক্তভোগী যৌনাঙ্গ, গা বা পরনের কাপড় ধুয়ে ফেললে, ঠিকমতো সংরক্ষণ না করলে অনেক আলামত নষ্ট হয়ে যায়। ডিএনএর আলামতও নষ্ট হতে পারে।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান আ ম সেলিম রেজা বলেছেন, প্রাপ্তবয়স্ক বিবাহিত বা যৌনসংসর্গে অভ্যস্ত নারীর বেলায় সব সময় জোরজবরদস্তির চিহ্ন বোঝা না-ও যেতে পারে। তখনো কিন্তু সুনিশ্চিত বলা যাবে না যে ধর্ষণ হয়নি। তাঁর কথায়, ধর্ষণ প্রমাণ করা কঠিন, অপ্রমাণ করা কঠিনতর।
আরও পড়ুন...
ধর্ষণের বিচারে নারীর সামনে পদে পদে বাধা
একটি আপসের ময়নাতদন্ত