গোপালগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া এক ছাত্রের বিরুদ্ধে নবম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ ও বন্ধুর সহযোগিতায় সে দৃশ্য ধারণ করে ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ার হুমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া লক্ষ্মীপুরে ঘরে ঢুকে বিধবাকে গণধর্ষণ এবং কুষ্টিয়া, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামে তিন স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার একটি গ্রামে গত শনিবার স্কুলছাত্রীকে (১৫) ধর্ষণ এবং সে দৃশ্য ভিডিও করার ওই অভিযোগ পাওয়া যায়। পরে ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে আজ সোমবার থানায় মামলা করেছেন। এ ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ছাত্রীর স্বজন ও স্থানীয় ব্যক্তিরা।
স্কুলছাত্রীর ভাষ্য, শনিবার সকালে স্কুলের এক স্যারের কাছ থেকে প্রাইভেট পড়ে স্থানীয় বাজারে কসমেটিকস কিনতে যায় সে। ফেরার পথে একটি ফাঁকা জায়গা থেকে পূর্ণবর্তী গ্রামের বাসিন্দা ও ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আলী হোসাইন এবং তাঁর বন্ধু একই গ্রামের মাসুদ হাওলাদার তাকে টেনে মোটরসাইকেলে তুলে একটি গ্রামের মাছের ঘেরে নিয়ে যান। সেখানে একটি অস্থায়ী ঘরে আলী হোসাইন তাকে মারধর করেন। একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে ধর্ষণ করেন। এ সময় মাসুদ মুঠোফোনে ওই দৃশ্য ধারণ করেন। এরপর ঘটনা প্রকাশ করলে ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেন তাঁরা।
ছাত্রীর বাবা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার মেয়ের সঙ্গে যে দুজন এই জঘন্য কাজ করেছে, আমি তাদের ফাঁসি চাই।’
কোটালীপাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জাকারিয়া বলেন, স্কুলছাত্রীর বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে থানায় একটি ধর্ষণের মামলা হয়েছে। ছাত্রীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য মঙ্গলবার হাসপাতালে পাঠানো হবে। ওই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
গৃহবধূকে ধর্ষণ করে হাত–পা বেঁধে পালিয়ে গেল দুর্বৃত্তরা
লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে ঘরে ঢুকে এক বিধবাকে গণধর্ষণ এবং পরে হাত–পা, মুখ বেঁধে ঘরের বাইরে ফেলে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে কয়েক দুর্বৃত্তের বিরুদ্ধে।
গত রোববার দিবাগত রাত একটার দিকে ওই গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। সকালে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় সোমবার দুপুরে ওই নারী থানায় ধর্ষণের মামলা করেন। জামাল হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে প্রধান আসামি করে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়। বিকেলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে জামাল (২৭) ও মো. সোহেল (২০) নামের আরেকজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
মামলার বরাতে পুলিশ বলেছে, বিধবা বাড়িতে একাই থাকেন। এ সুযোগে পাঁচ বখাটে যুবক দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে তাঁকে ধর্ষণ করেন। পরে হাত, পা ও মুখ বেঁধে ঘরের বাইরে বাগানে ফেলে রেখে পালিয়ে যান তাঁরা।
ধর্ষণের শিকার আরও ৩ ছাত্রী
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার একটি আবাসিক মাদ্রাসায় রোববার এক ছাত্রীকে (১৩) দুই দফা ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ওই মাদ্রাসায় ভাঙচুর চালিয়েছেন। তবে অভিযুক্ত মাদ্রাসা সুপার (প্রধান) পালিয়ে গেছেন। ধর্ষণের অভিযোগে ছাত্রীর বাবা মিরপুর থানায় মামলা করেছেন।
পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। সোমবার রাত ৯টার দিকে পোড়াদহ এলাকা থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য মেয়েটিকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় শনিবার নানির বাড়িতে কোমল পানীয় নিয়ে এসেছিলেন দুই মামাতো ভাই ও তাঁদের এক বন্ধু। সেই পানীয় পান করাতেই অচেতন হয়ে পড়েন নানি। পানীয় খেয়ে বাড়িতে বেড়াতে আসা স্কুলপড়ুয়া ফুফাতো বোনেরও একই অবস্থা। এ সুযোগে মেয়েটিকে জাহিদ নামের মামাতো ভাই (২১) ধর্ষণ করেন। এ অভিযোগে রোববার রাতে তিনজনকে আসামি করে বন্দর থানায় মামলা করেছেন ছাত্রীর মা।
এদিকে চট্টগ্রামের রাউজানে গত বৃহস্পতিবার ৩য় শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে (১১) ধর্ষণের অভিযোগে সোমবার বিকেলে সাধন বড়ুয়া (৬০) নামে প্রতিবেশী এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করেছেন শিশুটির বাবা।
[প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন: প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ, কুষ্টিয়া, নারায়ণগঞ্জ এবং রায়পুর, লক্ষ্মীপুর ও রাউজান, চট্টগ্রাম]