পারিবারিক নির্যাতনে পিষ্ট হয়ে অনেক নারী ভাগ্য ফেরাতে বিদেশ যাচ্ছেন। স্বামীর নিগ্রহের শিকার নারীদের কেউ কেউ বিদেশে গিয়েও পড়ছেন নানা নিপীড়নের মধ্যে। বাধ্য হয়ে, পালিয়ে, শারীরিক বা মানসিক অসুস্থ হয়ে কিংবা লাশ হয়ে ফিরে আসছেন অনেকে। করোনাকালে এমন ফিরে আসা নারীর সংখ্যা গত বছরের চেয়ে বেড়ে গেছে। দেশে ফিরে সামাজিক, অর্থনৈতিকসহ নানা দুর্ভোগে আছেন নারী কর্মীরা।
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সূত্র বলছে, ২০১৯ সালে বিভিন্ন দেশ থেকে খালি হাতে ৩ হাজার ১৬৪ জন নারী দেশে ফিরে এসেছিলেন। আর গত বছর ফিরে এসেছেন ৫০ হাজারের বেশি নারী কর্মী, তবে এর মধ্যে চুক্তি শেষে ফিরে আসা নারীরাও আছেন। ওয়েজ আর্নাস কল্যাণ বোর্ডও একই তথ্য দিচ্ছে। তাদের হিসাব অনুযায়ী, গত বছর জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিন মাসে ফিরেছেন ৬৯৫ জন নারী কর্মী। এরপর এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত নানা কারণে দেশে ফিরে এসেছেন আরও প্রায় ৫০ হাজার নারী।
বেশির ভাগ নারী কর্মী যান সৌদি আরবে। যাঁরা কর্মস্থল থেকে পালিয়ে যান বা অবৈধ হয়ে পড়েন, তাঁদের উদ্ধার করে বিভিন্ন বহির্গমন শিবিরে রাখে সৌদি পুলিশ। আর গৃহকর্তা মামলা করলে কারাগারে যেতে হয় নারী কর্মীদের। এরপর তাঁদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়।
জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) কর্মকর্তারা বলছেন, পাঁচ বছর ধরে প্রতিবছরই এক লাখের বেশি নারী কর্মী বিভিন্ন দেশে কাজ নিয়ে গেছেন। এর মধ্যে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ কর্মী যান সৌদি আরবে। তবে গত বছর করোনার কারণে নারী কর্মীরও যাওয়া কমেছে। এ সময় ২০ হাজারের মতো নারী কর্মী কাজ নিয়ে বিদেশ গেছেন।
বাংলাদেশ অভিবাসী মহিলা শ্রমিক অ্যাসোসিয়েশন (বমসা) ও বাংলাদেশ নারী শ্রমিক কেন্দ্র বলছে, যাঁরা বাসায় থেকে কাজ করেন, তাঁদের ওপর করোনাকালে কাজের চাপ ও নির্যাতন বেড়েছে। অনেক নারী যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। পালিয়ে হলেও তাঁরা ফিরে আসছেন। আর যাঁরা মেসবাড়িতে থেকে কাজ করতেন, তাঁরা করোনার শুরুতেই কাজ হারিয়েছেন।
এদিকে প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের দুজন কর্মকর্তা বলছেন, সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে গৃহকর্মী নারীদের ওপর নির্যাতন কমিয়ে আনা হয়েছিল। করোনার প্রভাবে নারীদের ফিরে আসা ও অভিযোগ কিছুটা বেড়েছে।
ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচি বলছে, ২০১৬ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত চার বছরে ৪১০ নারী কর্মীর লাশ এসেছেন দেশে। এর মধ্যে শুধু সৌদি আরবে মারা গেছেন ১৫৩ জন। আর গত বছরের প্রথম ৯ মাসে দেশে এসেছে ৬৩ প্রবাসী নারীর লাশ, যার মধ্যে সৌদি থেকে এসেছে ২২টি। দেশে আসা লাশের ১৪টির ক্ষেত্রে মৃত্যুর কারণ বলা হয়েছে ‘আত্মহত্যা’। এর মধ্যে ৮ নারী কর্মীর লাশ এসেছে সৌদি আরব থেকে। ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সন্দেহ, এগুলো আত্মহত্যা নয়।
নির্যাতনের চিহ্ন নিয়ে ফেরা
নিয়োগকর্তা ছাদ থেকে ফেলে দেয় সৌদিপ্রবাসী তানিয়া আক্তারকে। এরপর লাথি মেরে পা ভেঙে দেন। তিন বছর আগে দেশে ফিরে আসেন ঢাকার কাজলা এলাকার তানিয়া। এখনো হাঁটতে পারেন না। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তিনবেলা ভাত খাওয়ার মতো অবস্থা নেই। চিকিৎসার টাকা জোগাতে হিমশিম অবস্থা। কোনো সাহায্য পাননি। ঋণ নিতে ব্যাংকে যাওয়ার মতো অবস্থাও নেই তাঁর।
তানিয়ার মতো অনেকেই নির্যাতনের চিহ্ন নিয়ে প্রতিবছর ফিরে আসেন। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোনো বিচার পান না তাঁরা। কেউ কেউ ফেরেন লাশ হয়ে। ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচি বলছে, ২০১৬ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত চার বছরে ৪১০ নারী কর্মীর লাশ এসেছেন দেশে। এর মধ্যে শুধু সৌদি আরবে মারা গেছেন ১৫৩ জন। আর গত বছরের প্রথম ৯ মাসে দেশে এসেছে ৬৩ প্রবাসী নারীর লাশ, যার মধ্যে সৌদি থেকে এসেছে ২২টি। দেশে আসা লাশের ১৪টির ক্ষেত্রে মৃত্যুর কারণ বলা হয়েছে ‘আত্মহত্যা’। এর মধ্যে ৮ নারী কর্মীর লাশ এসেছে সৌদি আরব থেকে। ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সন্দেহ, এগুলো আত্মহত্যা নয়।
প্রায় সাত মাস খোঁজাখুঁজির পর মুন্সিগঞ্জের মিনা বেগম জানতে পারেন, তাঁর মেয়ে মনিরা বেগম সৌদিতে আত্মহত্যা করেছেন। গত বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি মারা যাওয়ার পর সেপ্টেম্বরে দেশে আসে লাশ। মেয়ে আত্মহত্যা করেছেন, এটা বিশ্বাস করেন না মা। মিনা বেগম বলেন, কফিল (নিয়োগকর্তা) ভালো না বলে অভিযোগ করত মনিরা।
এ বিষয়ে নারী শ্রমিক কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুমাইয়া ইসলাম বলেন, যৌন নির্যাতনের দায়ে সৌদি আরবের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। কিন্তু সরকারের গাফিলতিতে সেখানে বিচার হয় না। কঠোর শাস্তির দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারলে নির্যাতন কমে যাবে। কিন্তু বিচার হয় না বিদেশে, বিচার হয় না দেশে।
বিএমইটির মহাপরিচালক মো. শামছুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, বিদেশে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে না থাকায় সব অভিযোগ সুরাহা করা যায় না। কিন্তু দেশে কোনো নারী কর্মী হয়রানির অভিযোগ করলে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়। প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের যেকোনো দপ্তরে অভিযোগ করা যায়।
মানসিক প্রতিবন্ধী হয়ে দেশে
সৌদি থেকে ফরিদা খাতুন, জর্ডান থেকে ডলি বেগম ও আম্বিয়া খাতুন মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে গত বছর ফিরে এসেছেন দেশে। তাঁদের মতো অনেকেই ঢাকায় বিমানবন্দরে নেমে অসহায়ের মতো এদিক-ওদিক ঘোরাঘুরি করেন। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির স্বেচ্ছাসেবীরা তাঁদের উদ্ধার করেন। এরপর ঠিকানা সংগ্রহ করে স্বজনের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কাজটি করছেন। বিদেশফেরতদের মধ্যে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেরা কর্মীদের আলাদা করে কোনো হিসাব নেই সরকারি দপ্তরে। তবে ব্র্যাক বলছে, ২০১৮ সালের জুন থেকে বিদেশফেরত ৬৭ জন মানসিক প্রতিবন্ধীকে বিমানবন্দর থেকে উদ্ধার করে স্বজনের কাছে পৌঁছে দিয়েছে তারা। এর মধ্যে ৬০ জন নারী কর্মী।
যৌন নির্যাতনের দায়ে সৌদি আরবের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। কিন্তু সরকারের গাফিলতিতে সেখানে বিচার হয় না। কঠোর শাস্তির দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারলে নির্যাতন কমে যাবে। কিন্তু বিচার হয় না বিদেশে, বিচার হয় না দেশে।নারী শ্রমিক কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুমাইয়া ইসলাম
সুনামগঞ্জের এক নারী সৌদি থেকে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফিরেছেন গত ২৪ সেপ্টেম্বর। তাঁর চাচাতো ভাই বলেন, ১৬ বছর হলেও বয়স বেশি দেখিয়ে বিদেশে গেছে। নিয়োগকর্তার ঘরে ছয়জন পুরুষ মিলে নিয়মিত যৌন ও শারীরিক নির্যাতন করেছে। প্রায় ছয় মাস কোনো স্মৃতিশক্তি ছিল না। টানা কয়েক মাস চেষ্টা করে পরিচিত একজনের মাধ্যমে উদ্ধার করে দেশে আনা হয়। দেশে আসার পর কাউকে চিনতে পারেনি। ডাক্তার, কবিরাজ দেখানোর পর এখন কিছুটা উন্নতির দিকে।
ছাপরাঘরে আয়হীন জীবন
ঝিনাইদহের নাজমা আক্তার জর্ডান থেকে ফিরেছেন গত সেপ্টেম্বরে। ১১ মাস সেখানে কাজ করেও কোনো বেতন পাননি। নিয়মিত নির্যাতিত হয়েছেন নিয়োগকর্তার হাতে। মাথায় আঘাত নিয়ে ফিরেছেন, ভুগছেন এখনো। স্থানীয় এক সাংবাদিক একটি ছাপরাঘরে তাঁর থাকার ব্যবস্থা করে কিছু বাজার করে দিয়েছেন। ওষুধেরও ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। ঘরহীন, আয়হীন জীবন কাটাচ্ছেন নাজমা। বিদেশে যাওয়ার আগেই স্বামী ছেড়ে গিয়ে অন্যত্র বিয়ে করেছেন। দুই সন্তানের খরচও দিচ্ছেন না স্বামী। পুনর্বাসন ঋণের বিষয়েও কোনো ধারণা নেই তাঁর।
নাজমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুটি সন্তান নিয়ে চরম অশান্তির মধ্যে আছি। মাঝে না খেয়েও ছিলাম কয়েক দিন। নিজের মা–বাবা বেঁচে থাকলে এত কষ্টে পড়তে হতো না। একটা থাকার ঘর হলে কোনো না কোনো কাজ করে বাচ্চা দুটিকে নিয়মিত খাবার দিতে পারতাম। এখন বাঁচতেও পারছি না, মরতেও পারছি না।’
পদে পদে যুদ্ধ
অভিবাসন–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, টাকার লোভে রিক্রুটিং এজেন্সি ও দালালেরা বিভিন্ন জালিয়াতি করে নারী কর্মীদের বিদেশে পাঠায়। তাই নারী কর্মীকে পদে পদে হয়রানি হতে হয়। নারী কর্মীরা জানেন না রিক্রুটিং এজেন্সি গড়ে দালালদের কর্মীপ্রতি ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা দেয়।
নারী শ্রমিক কেন্দ্রের সুমাইয়া ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বিদেশ যাওয়ার পর নারী কর্মীরা কোনো নজরদারির মধ্যে থাকে না। তাই তাঁরা নির্যাতন বা নিপীড়ন নিয়ে কাউকে অভিযোগও করতে পারেন না।
দেশে ফিরে আসা নারী কর্মীরাও সামাজিক, আর্থিক চাপে মানসিক পীড়নের মধ্যে আছেন। শিক্ষার অভাব, তথ্যের ঘাটতি, দক্ষতার অভাবে তাঁরা কোনো কাজে জড়াতে পারছেন না। সরকারিভাবে ঋণে নারীদের সুযোগ থাকলেও তা নিতে পারছেন না। নারীদের আলাদা করে প্রশিক্ষণ দরকার।
দুটি সন্তান নিয়ে চরম অশান্তির মধ্যে আছি। মাঝে না খেয়েও ছিলাম কয়েক দিন। নিজের মা–বাবা বেঁচে থাকলে এত কষ্টে পড়তে হতো না। একটা থাকার ঘর হলে কোনো না কোনো কাজ করে বাচ্চা দুটিকে নিয়মিত খাবার দিতে পারতাম। এখন বাঁচতেও পারছি না, মরতেও পারছি না
এদিকে নারী শ্রমিক কেন্দ্র বলছে, বিদেশে যাওয়া নারীদের একটি বড় অংশ তালাকপ্রাপ্ত। দেশে ফিরে কোনো কাজ নেই, ছোট বাচ্চার খাবার জোগাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। দেশে-বিদেশেও কোথাও শান্তি নেই প্রবাসী নারী কর্মীর।
বমসার পরিচালক ফরিদা ইয়াসমিন প্রথম আলোকে বলেন, নারী কর্মী সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা আছে। সমাজের মানসিকতা বদলাতে হবে। তাঁদের দক্ষতা বাড়াতে হবে, শিক্ষার সনদ দিতে হবে। প্রবাসী নারীদের আয় আলাদা করে দেখানো দরকার। এতে অর্থনীতিতে তাঁদের অবদান স্পষ্ট হবে।
ঋণে পিছিয়ে নারীরা
বিদেশফেরত কর্মীদের জন্য ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে বিশেষ পুনর্বাসন ঋণ চালু করেছে সরকার। এ ছাড়া আরও ৫০০ কোটি টাকা পুনর্বাসন ঋণ বরাদ্দ হয়েছে। বিএমইটির মহাপরিচালক মো. শামছুল আলম বলেন, ফিরে আসা কর্মীদের পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে নারীদের জন্য আলাদা করে কোনো প্রকল্প নেই। তবে নারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
তবে নারী শ্রমিক কেন্দ্র ও অভিবাসী মহিলা শ্রমিক অ্যাসোসিয়েশন বলছে, নারীরা যথাযথ তথ্য থেকে অনেক পিছিয়ে থাকে। তাই ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের উপস্থিতি কম। নারীদের বিভিন্ন কাজের প্রশিক্ষণ দিয়ে ঋণের আবেদন করতে সহায়তা দিচ্ছে নারী শ্রমিক কেন্দ্র।
সৌদি আরব থেকে ফেরা সিলেটের সাহেরা খাতুন বলেন, স্বামী মারা যাওয়ার কয়েক বছর পর ভাগ্য ফেরাতে সৌদি আরব যান। ১৬ মাস ছিলেন। নিয়োগকর্তার আয় না থাকায় চার মাসের বেতন না দিয়ে দেশে পাঠিয়ে দিয়েছেন। গত মার্চে ফিরলেও কোনো কাজ পাননি। পুনর্বাসন ঋণের বিষয়ে জানা নেই তাঁর।
ভিসা করেও দেশে আটকা
সাবিনা আক্তার ও তাসলিমা আক্তার দুই বোন। পরিবারের উন্নতির আশায় সৌদি আরবে যেতে ভিসা করেন গত বছরের শুরুতে। এপ্রিলেই ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। দুজন মিলে প্রায় চার লাখ টাকা খরচ করে হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতাকর্মীর ভিসা নিয়েছিলেন। করোনার কারণে যেতে পারেননি। উড়োজাহাজ চালুর পর আবার নতুন করে ৫০ হাজার টাকা খরচ করে ভিসা নেন। গত ২০ ডিসেম্বর রওনা দেন সৌদি আরব। কিন্তু নতুন করে আবার ফ্লাইটে বিধিনিষেধ আসায় আরব আমিরাতের আবুধাবি বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠানো হয় তাঁদের। সাবিনা আক্তার বলেন, ভিসার মেয়াদ আছে এক মাস। এর মধ্যে টিকিট পেলে যেতে পারবেন।
কাতারের ভিসা করেও যেতে পারেননি নারায়ণগঞ্জের শান্তা ইসলাম। গত বছরের মার্চে যাওয়ার কথা ছিল, এপ্রিলে ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। আড়াই লাখ টাকা খরচ করে ভিসা নিয়েছিলেন। এখন নতুন করে আবার ৫০ হাজার টাকা চাইছে দালাল।
বিদেশে ফিরে যাওয়ার স্বপ্ন
ফিরে আসার পর আবার বিদেশ যেতে চান অনেক নারী কর্মী। তাঁদের বড় অংশের নিয়মিত আয় ছিল। তাই চুক্তির মেয়াদ শেষে ফিরে আবারও সেখানে ফিরে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন তাঁরা।
প্রায় ২ বছর ৮ মাস সৌদি আরবে ছিলেন মাদারীপুরের শিবচরের শিউলি আক্তার। এর মধ্যে প্রথম ১০ মাস কাটিয়ে নিয়োগকর্তার বাসা থেকে বের হয়ে যান। টাকার বিনিময়ে নিয়োগকর্তার কাছ থেকে ইকামা (কাজের বৈধ অনুমতিপত্র) নিয়ে নিজে আলাদা থেকে বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতেন।
সৌদি আইনে এটি অবৈধ হওয়ায় শিউলি ধরা পড়েন পুলিশের হাতে। গত বছরের ২৬ নভেম্বর দেশে ফিরেছেন। কিন্তু কোনো কাজ নেই এখানে। স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগও নেই। দুই বাচ্চার ভবিষ্যৎ ভেবে আবার যেতে চান সৌদি আরবে। শিউলি বলেন, তিনি ফিরে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।