২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

দুনিয়াকে নাড়া দেওয়া একাত্তরের সাক্ষ্য

১৯৭১ সালে পূর্ববঙ্গে চলছিল পাকিস্তানি হানাদার ও তাদের এদেশীয় দোসরদের নির্মম হত্যাযজ্ঞ। প্রাণে বাঁচতে ঘরবাড়ি-দেশ ছেড়ে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের শরণার্থীশিবিরে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশিরাও মানবেতর জীবন যাপন করছিল। সে সময় এই মানবিক সংকটের দিকে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণে একাত্তরের ভয়াবহতার প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান নিয়ে প্রকাশিত হয়েছিল দ্য টেস্টিমনি অব সিক্সটি অন দ্য ক্রাইসিস ইন বেঙ্গল। ব্রিটিশ দাতব্য সংস্থা অক্সফামের এই প্রকাশনা বিশ শতকের অন্যতম মানবিক সংকট সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ আকর্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ২০০৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে ষাটজনের সাক্ষ্য শিরোনামে এই ঐতিহাসিক প্রকাশনার হুবহু বাংলা প্রতিলিপি সংস্করণ প্রকাশ করেছিল প্রথম আলো। এই প্রকাশনার ৫০ বছর পূর্তি হচ্ছে ২১ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার)। পাশাপাশি এই সাক্ষ্যের পুরোটা যুক্তরাষ্ট্রে কংগ্রেশনাল রেকর্ড-এ প্রকাশিত হওয়ার ৫০ বছর পূর্তি হচ্ছে ২৮ অক্টোবর। এ উপলক্ষে টেস্টিমনি অব সিক্সটি প্রকাশের প্রেক্ষাপট নিয়ে লিখেছেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় অক্সফামের হয়ে ত্রাণ তৎপরতা সমন্বয় করা জুলিয়ান ফ্রান্সিস। একাত্তরের এই বিদেশি বন্ধু ‘মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু সম্মাননা’য় ভূষিত।

জুলিয়ান ফ্রান্সিস, বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু

১৯৭১ সালে বাংলায় (পূর্ব ও পশ্চিমবঙ্গ) যে মর্মান্তিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তার প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য নিয়ে প্রকাশিত হয়েছিল টেস্টিমনি অব সিক্সটি। সেই সময়ে এসব প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য সংগ্রহের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের মধ্যে একমাত্র আমি এখনো বাংলাদেশে বসবাস ও কাজ করে চলেছি। সে কারণে আমার মনে হয়েছে, ১৯৭১ সালে অক্সফাম-ইউকে কেন এ রকম প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য নথি আকারে প্রকাশ করেছিল, তা তরুণ প্রজন্মের জানা দরকার।

একাত্তরে ত্রিপুরা, মেঘালয়, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি, পশ্চিম দিনাজপুর, বালুরঘাট, বারাসাত ও বনগাঁওয়ে সীমান্তবর্তী এলাকার শরণার্থীশিবিরগুলোতে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ছয় লাখ বাংলাদেশিকে সহায়তা দেয় অক্সফাম-ইউকে। এই ত্রাণ কার্যক্রম সমন্বয়ের দায়িত্বে ছিলাম আমি। এই পরিস্থিতি কত দিন চলবে, সে বিষয়ে আমাদের কোনো ধারণা ছিল না। সে কারণে কর্মপরিকল্পনা তৈরির সময় আমরা প্রতিবার ছয় মাসের পরিকল্পনা ও বাজেট করতাম। সেপ্টেম্বরে আমরা পুরো শীতকাল ত্রাণ কার্যক্রম চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। শরণার্থীশিবিরগুলোর অনেক এলাকায় তীব্র শীত নামে। প্রতি মাসেই আমাদের ত্রাণকাজের জন্য নিয়মিতভাবে বড় অঙ্কের অর্থের জোগান লাগছিল।

একাত্তরে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের শরণার্থীশিবিরগুলোতে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশিদের জীবন বাঁচাতে বড় অঙ্কের তহবিল সংগ্রহের দরকার পড়ে ব্রিটিশ দাতব্য সংস্থা অক্সফামের। বাংলার মানুষের মর্মান্তিক অবস্থা বিশ্ববাসীর নজরে আনতে তারা প্রকাশ করেছিল প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান। ‘দ্য টেস্টিমনি অব সিক্সটি’ নামের এই প্রকাশনা বাংলাদেশিদের পক্ষে বিশ্ব জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

নাইজেরিয়ার গৃহযুদ্ধ বিয়াফ্রার (১৯৬৮-৭০) পর এবং কম্পুচিয়ার (১৯৭৯) আগে বাংলাদেশের শরণার্থীদের জন্য অক্সফাম-ইউকের এ ত্রাণ কার্যক্রমটি ছিল সবচেয়ে বড়। ফলে অক্সফামের বৃহত্তর পরিসরে তহবিল সংগ্রহের প্রচেষ্টা ও প্রচারণা দরকার ছিল। তখন মনে হয়েছিল, স্থায়ী এ সমস্যা মোকাবিলায় তহবিল সংগ্রহে দীর্ঘমেয়াদি একটি কর্মকৌশল নেওয়া দরকার। নেওয়া দরকার এমন একটি প্রচারণাকৌশল, যাতে পরিস্থিতি সম্পর্কে মানুষ অবগত হওয়ার পাশাপাশি সাহায্যেরও হাত বাড়িয়ে দেয়। শীত এগিয়ে আসায় শরণার্থীশিবিরের বাসিন্দা বাংলাদেশিদের জন্য কম্বল ও গরম কাপড়ের প্রয়োজন দেখা দেয়। তখন অক্সফাম প্রচারণা চালাতে লাগল, ‘আপনার বিছানা থেকে বাড়তি কম্বলটি তুলে নিন’, ‘বড়দিন উপলক্ষে নতুন একটি সোয়েটার কিনুন এবং আপনার পুরোনোটা অক্সফামকে দিন’। তখন ব্রিটিশ ডাক বিভাগ অক্সফামের ঠিকানায় পাঠানো কম্বল ও গরম কাপড়ের পার্সেলের জন্য কোনো পয়সা নিত না। ব্রিটিশ রয়াল এয়ারফোর্স সেসব কম্বল ও গরম কাপড় কলকাতায় পৌঁছে দিত।

৯০০ শরণার্থীশিবিরে আনুমানিক এক কোটি বাংলাদেশি ছিলেন। এত বছর পর আজও এত বিপুলসংখ্যক শরণার্থীর জন্য খাদ্য-বস্ত্রসহ বেঁচে থাকার উপকরণ সরবরাহ করাটা অত্যন্ত কঠিন। কীভাবে এটা করা সম্ভব হয়েছিল? এটা সম্ভব হয়েছিল অনেক মানুষের বীরোচিত ভূমিকার কারণে। ওই সব নারী ও পুরুষ এর জন্য কখনো খ্যাতি বা কৃতিত্ব নিতে চাননি। তাঁরা বলেছেন, যেটা করা দরকার ছিল, তাঁরা সেটাই করেছেন। তাঁদের অধিকাংশই ছিলেন শরণার্থী।

শরণার্থীদের দুর্দশা

এই ২০২১ সালেও অনেকে প্রশ্ন তোলেন পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের দোসররা এ দেশে গণহত্যা চালিয়েছিল কি না। তাদের উদ্দেশে আমি শুধু বলতে পারি, সাত মাসে বহুবার আমি শরণার্থীশিবিরে গিয়েছি। সেখানে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত অনেক পরিবারকে দেখেছি। এসব পরিবারের সদস্যরা তাঁদের প্রিয়জনকে হত্যা করতে দেখেছেন। যেসব শরণার্থীশিবিরের অবস্থার উন্নয়নে অক্সফাম কাজ করছিল, সেগুলোতে গিয়ে মৃতদেহ দেখতাম। সেগুলো ছিল সাধারণত শিশুদের মৃতদেহ। এসব শিবিরে শৌচাগার ব্যবহারসহ অনেক কিছুর জন্য মানুষ লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকত। পরিস্থিতির কারণে সেখানে ছড়িয়ে পড়ে ডায়রিয়া। ভারত সরকারের দেওয়া ত্রাণসহায়তার বাইরে শরণার্থীশিবিরগুলোতে আর কোনো সহায়তা দেওয়া হতো না। পরিস্থিতি ছিল খুবই নাজুক। আমি দেখলাম অনেক শরণার্থী মারা যাচ্ছে। তাদের অধিকাংশই ছিল বয়সে তরুণ ও প্রবীণ। তাদের এই মৃত্যু স্বাভাবিক মানুষের মৃত্যুর মতো ছিল না। তারা মারা যাচ্ছিল ক্ষুধায়, কাদামাটিতে। তারা মারা যাচ্ছিল কলেরায়, ঠান্ডায়।

তবে বাস্তবতা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক সংবাদপত্রগুলোর প্রথম পাতায় এ সংকটের চিত্র খুব সামান্যই তুলে ধরা হচ্ছিল। ২৫ মার্চের গণহত্যার সংবাদের পর শরণার্থীশিবিরগুলোতে মে-জুনে কলেরার প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ার খবরটি আবার আন্তর্জাতিক সংবাদপত্রগুলোর শিরোনামে ঠাঁই করে নেয়। পরে আবার ওই বছর শরণার্থীশিবিরগুলো বন্যায় প্লাবিত হলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি গুরুত্ব পায়। তবে ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বরে ব্রিটিশ সংবাদপত্রগুলোতে ‘মৃত্যু চলছেই’, ‘শরণার্থীরা কি আর কখনো বাড়ি ফিরতে পারবে?’, ‘পাকিস্তানের দুর্ভিক্ষ বিয়াফ্রার চেয়েও ভয়াবহ’—এ-জাতীয় শিরোনামে সংবাদ ছাপা হতে থাকে।

যা-ই হোক, অক্সফোর্ডে অক্সফামের প্রধান দপ্তর থেকে সিদ্ধান্ত হয়, বাংলাদেশে চলতে থাকা পরিস্থিতি সম্পর্কে বিশ্বনেতাদের চোখ খুলে দিতে ও তাঁদের সজাগ করতে উপায় খুঁজে বের করা হবে। এ লক্ষ্যেই স্বল্প সময়ের মধ্যে ওই ভয়াবহ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য সংগ্রহ করে দ্য টেস্টিমনি অব সিক্সটি অন দ্য ক্রাইসিস ইন বেঙ্গল নামের সংকলনটি ছাপানো হয়। সেই সংকলনে মাদার তেরেসা, সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডির মতো বিখ্যাত ব্যক্তি এবং অ্যান্থনি মাসকারেনহাস, জন পিলজার, নিকোলাস টোমালিন, ক্ল্যারি হলিংওয়ার্থ, জেমস ক্যামেরন ও মার্টিন উলাকটের মতো স্বনামধন্য সাংবাদিকদের বক্তব্য ও লেখা প্রকাশিত হয়। রোমানো ক্যাগনোনি ও ডোনাল্ড ম্যাককুলিনের মতো প্রখ্যাত আলোকচিত্র সাংবাদিকেরা হৃদয়বিদারক ছবি দেন।

আমি ব্যক্তিগতভাবে কলকাতা থেকে বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য সংগ্রহকারী। একটি দিনের কথা মনে পড়ে। সেদিন অক্সফামের সদর দপ্তরে একজন প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য পাঠাতে আমার পুরো সোয়া এক ঘণ্টা লেগেছিল। দ্য টেস্টিমনি অব সিক্সটির অনুলিপি বহু সরকারপ্রধানের হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়। কাকতালীয়ভাবে ওই বছর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন শুরুর প্রথম দিনই সংকলনটি প্রকাশিত হয়। ওই অধিবেশনে অংশগ্রহণকারী সব রাষ্ট্রদূতের মধ্যে এর একটি করে অনুলিপি বিতরণ করা হয়। সংকলনটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশনার আগের দিন ১৯৭১ সালের ২১ অক্টোবর ব্রিটিশ পোস্ট অফিস অক্সফামকে পুরো যুক্তরাজ্যের টেলিফোন ডিরেক্টরি দিয়ে সহায়তা করে। লন্ডনের ৪৯ পার্লামেন্ট স্ট্রিটে অবস্থিত অক্সফামের প্রদর্শনী কেন্দ্রে এসব ডিরেক্টরি জড়ো করা হয়। এখান থেকে বেছে নেওয়া হয় ৪ কোটি ৯০ লাখ নাম। বাংলাদেশে এই সমসংখ্যক মানুষ পাকিস্তানি বাহিনীর হামলায় ওই বছর উদ্বাস্তু হয়েছিল। এর মধ্যে ভারতে শরণার্থী হয়েছিল ৯০ লাখ আর দেশের ভেতর গৃহহারা হয়েছিল বাকি চার কোটি মানুষ। যুদ্ধ সেদিন এই বিপুলসংখ্যক মানুষকে প্রচণ্ড ক্ষুধা ও অভাবের মুখে ঠেলে দিয়েছিল।

এডওয়ার্ড কেনেডির ভূমিকা

এ সময় মজার একটি ঘটনা ঘটে। ১৯৭১ সালে যুক্তরাষ্ট্র ছিল পাকিস্তানের পক্ষে। কিন্তু ১৯৭১ সালের আগস্টে ভারত ও শরণার্থীশিবির ঘুরে যাওয়া মার্কিন সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডি দ্য টেস্টিমনি অব সিক্সটির প্রতি সিনেট সদস্যদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। যুক্তরাজ্যে অক্সফাম এটি প্রকাশের মাত্র এক সপ্তাহ পরই ১৯৭১ সালের ২৮ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রে কংগ্রেশনাল রেকর্ড-এ এটি প্রকাশিত হয়। রেকর্ডে দ্য টেস্টিমনি অব সিক্সটির পরিচয় তুলে ধরতে গিয়ে মার্কিন সিনেটর কেনেডি এ সংকলনের ওপর যে ভাষণ দিয়েছিলেন, সেটি তুলে ধরা হয়:

‘জনাব প্রেসিডেন্ট, পূর্ববঙ্গের সংকট আধুনিক বিশ্বের মানবেতিহাসের যেকোনো দুঃখজনক পরিস্থিতির চেয়েও ভয়াবহ। এটি পদ্ধতিগত ও সামরিক শক্তি প্রয়োগে গণহত্যার একটি ইতিহাস। এর ফলে লাখ লাখ সাধারণ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে ও গৃহহারা হয়েছে। এটি মৃত্যু আর জরার কাহিনি, এটি খাদ্যাভাব আর পানীয় জল না পাওয়ার কাহিনি, এটি আশাহীন শরণার্থীশিবির আর দুর্ভিক্ষপীড়িত মফস্বল এলাকার কাহিনি।

‘পূর্ব পাকিস্তানে সংঘটিত এ নৃশংসতায় সারা বিশ্বের নির্মমতাই যেন প্রকাশিত হয়েছে।

‘এ ধরনের দুঃখ-কষ্ট ও অন্যায় আমরা মেনে নিচ্ছি বলেই সম্ভবত এ পরিস্থিতি চলতে পারছে। কিন্তু অনেকের কাছেই বাঙালির দুর্দশা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া যুদ্ধবিধ্বস্ত মানুষেরই আরেকটি রূপ।

‘জনগণ এখনো নিশ্চুপ, কারণ তারা এখনো এ নৃশংসতার খবর জানে না।

‘জনসাধারণের কাছে দ্রুত এ ঘটনা তুলে ধরতে ব্রিটিশ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অক্সফাম সম্প্রতি দ্য টেস্টিমনি অব সিক্সটি অন দ্য ক্রাইসিস ইন বেঙ্গল নামের একটি হৃদয়গ্রাহী সংকলন প্রকাশ করে। এটি যিনি পড়বেন, তিনিই বাঙালি জনগোষ্ঠীর দুর্দশায় আলোড়িত হবেন। একে একে সবাই জানবে এ দুর্দশার কাহিনি।

‘এই মর্মস্পর্শী নথি সিনেট সদস্যদের কাছেও পৌঁছাতে আমি সর্বসম্মতিক্রমে রেকর্ড হিসেবে এ সংকলনটি ছাপানোর অনুরোধ জানাচ্ছি।

‘এরপর কোনো আপত্তি না ওঠায় সাক্ষ্যগুলো রেকর্ড আকারে ছাপা হলো।’

হৃদয়স্পর্শী বিবরণ

এই সংকলন কংগ্রেশনাল রেকর্ড হিসেবে রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। কারণ, সেই সময়ে মার্কিন সরকার পাকিস্তানের পক্ষ নিলেও মার্কিন জনগণের একটি বড় অংশ পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছিল। পাশাপাশি লাখ লাখ ডলারের মার্কিন চিকিত্সাসামগ্রী পাঠানো হচ্ছিল অক্সফামের কাছে। এসব ওষুধ ও চিকিত্সাসামগ্রী শরণার্থীশিবির এবং যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে ব্যবহার করা হয়।

অনেক রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে যে বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে, তার একজন সাক্ষী আমি। তাই এটা দেখে আমি বিস্মিত হই যে এখনো অনেকে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে গণহত্যার বিষয়টি অস্বীকার করে। তাদের প্রতি আমার পরামর্শ থাকবে দ্য টেস্টিমনি অব সিক্সটি পড়ার, সেখানকার প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ তাদের চোখে জল নিয়ে আসবে।

ইংরেজি থেকে অনুবাদ: আজিজ হাসান