নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর সরকারি কলেজে শিক্ষক-সংকটের কারণে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। কলেজের তিনটি বিভাগে কোনো শিক্ষক নেই। কয়েকটি বিভাগে উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায়ে একজন করে শিক্ষক দিয়ে পাঠদান চলছে। ফলে কলেজটির সাড়ে তিন হাজার শিক্ষার্থীর পাঠদান চলছে জোড়াতালি দিয়ে।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, প্রাণিবিজ্ঞান, উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগে কোনো শিক্ষক নেই। এ ছাড়া বাংলা, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, দর্শন, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, গণিত ও ভূগোল বিভাগে একজন করে শিক্ষক আছেন। অন্যান্য বিভাগে দুজন করে শিক্ষক রয়েছেন। অর্থনীতি বিভাগে পাঠদান করান অতিথি শিক্ষক। এ ছাড়া গ্রন্থাগারিক ও শরীরচর্চা শিক্ষক, হিসাবরক্ষক ও নিম্নমান সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক পদগুলো প্রায় ১০ বছর ধরে শূন্য। রসায়নের ল্যাবরেটরি পরিচালনার প্রদর্শকও নেই দুই বছর ধরে।
১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এ কলেজটি হয় ১৯৮৫ সালে জাতীয়করণ হয়। বর্তমানে এখানে উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক (পাস) এবং দুটি বিভাগে (রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ইসলামের ইতিহাস) স্নাতক (সম্মান) শ্রেণি রয়েছে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৩ হাজার। শিক্ষকের ৩৩টি পদের মধ্যে ১২টি শূন্য।
গণিতের শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতক (পাস) পর্যায়ের জন্য যেখানে ন্যূনতম তিনজন শিক্ষক থাকার কথা, সেখানে আমাকে একাই সবকিছু সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়।’
একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের তিনজন শিক্ষার্থী বলে, কলেজে প্রাণীবিজ্ঞান বিভাগের কোনো শিক্ষক না থাকায় উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক বর্তমানে প্রাণীবিদ্যা পড়াচ্ছেন। উচ্চমাধ্যমিকে বাধ্যতামূলক বিষয় তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি। এ বিষয়ের শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ভূগোলের শিক্ষক তাদের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি পড়ান। এ ছাড়া অন্যান্য বিষয়েও প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক না থাকায় প্রায়ই ক্লাস হয় না।
কলেজের অধ্যক্ষ শামশুল হক বলেন, ‘নজিপুর শহর হিসেবে এগিয়ে গেলেও এখানকার একমাত্র সরকারি কলেজ নানা সমস্যার কারণে এগোতে পারছে না। এর মধ্যে প্রধান সমস্যা হচ্ছে শিক্ষক-সংকট। এ ছাড়া ছাত্রী হোস্টেলসহ আরও বেশ কিছু অবকাঠামো হওয়া প্রয়োজন আমাদের। শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বিষয়গুলো নিয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে। এসব সমস্যার সমাধান না হওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।’