ঢাবিতে তরুণীকে ‘যৌন হয়রানির’ বিচারের দাবিতে ছাত্র ইউনিয়নের বিক্ষোভ

ঢাবি ক্যাম্পাসে ছাত্র ইউনিয়নের বিক্ষোভ। ১১ জুন, টিএসসি
ছবি: প্রথম আলো।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক তরুণীকে যৌন হয়রানির অভিযোগের ঘটনার বিচার দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়ন। তারা বলেছে, এ ঘটনা পিতৃতান্ত্রিক মনস্তত্ত্বের ফলাফল। এ মনস্তত্ত্ব তৈরি করেছে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ও রাষ্ট্র। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসসহ গোটা দেশে এখন কেউই নিরাপদ নন।

আজ শনিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক বিক্ষোভ সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়নের নেতারা এসব কথা বলেন। গত বুধবার মধ্যরাতে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে রিকশায় করে পুরান ঢাকার বাসায় যাওয়ার পথে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হলের সামনে ওই তরুণী এক হেলমেটধারী বখাটের যৌন হয়রানির শিকার হন বলে অভিযোগ ওঠে। তরুণী একটি এফএম রেডিও স্টেশনের রেডিও জকি (আরজে) হিসেবে কর্মরত।

বিক্ষোভ সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আদনান আজিজ চৌধুরী বলেন, পুরুষতান্ত্রিক সমাজকাঠামো গড়ে তোলার জন্য দায়ী রাষ্ট্র। রাষ্ট্রের সব সরঞ্জাম ও তার নিবর্তনমূলক সংস্থাগুলোও এর জন্য একযোগে কাজ করছে। এরই ফল হিসেবে একজন নারী হেনস্তার শিকার হলেন। রাষ্ট্রের কাছে নারীর নিরাপত্তার সব সরঞ্জাম থাকলেও রাষ্ট্র তা দিতে ব্যর্থ। ঘটনাস্থলে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলেও তা দেখে দোষী ব্যক্তিকে চিহ্নিত করার কোনো উদ্যোগ নেই।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক অর্ণি আনজুম বলেন, ‘যে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস নিরাপদ থাকার কথা, সেখানে একজন নারী হেনস্তার শিকার হলেন। সেদিন ওই নারীর সহযোগিতায় কেউ এগিয়ে আসেননি। এটিই আজকে বাংলাদেশ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্র। এ অবস্থা এক দিনে তৈরি হয়নি। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা ও রাষ্ট্রই এ ধরনের মনস্তত্ত্ব তৈরি করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যৌন নিপীড়নের ঘটনাগুলোর বিচার না হওয়ার কারণেই আজকে এই দিনটা দেখতে হচ্ছে। এ ঘটনা পিতৃতান্ত্রিক সংস্কৃতির ফলাফল। হেনস্তার ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলতে চাই, ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন, নয়তো দায়িত্ব ছেড়ে দিন।’

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সহসভাপতি শ্যামজিৎ পাল বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একজন নারী গণমাধ্যমকর্মীর জামা টেনে ছিঁড়ে ফেলা হলো। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রশাসন সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে পারেনি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এমন একটি ঘটনায় এখনো নিশ্চুপ। প্রতিবারের মতো এবারও তারা নিজেদের আসল রূপটাই দেখাচ্ছে। এই ক্যাম্পাসে কেউই নিরাপদ নন। এই ঘটনা আমাদের সবার জন্য লজ্জার।’

আরও পড়ুন