ঢাকায় অস্বাস্থ্যকর বায়ুর সকাল
ঢাকার বায়ুর মান আজ রোববার সকাল থেকে অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় রয়েছে। বায়ুর মান পর্যালোচনাকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা এয়ার ভিজ্যুয়ালের তথ্যে এই চিত্র উঠে এসেছে।
আজ সকাল ১০টায় ঢাকায় বায়ুর মানের সূচক ছিল ১৯৫। এ সময় বিশ্বের প্রধান শহরগুলোর মধ্যে বায়ুর মান খারাপের দিক থেকে ঢাকার অবস্থান ছিল অষ্টম।
এয়ার ভিজ্যুয়ালের তথ্য অনুযায়ী, আজ সকাল আটটার দিকে ঢাকায় বায়ুর মানের সূচক ছিল ২১৮। সকাল ৬টার দিকে তা ছিল ২২০। আর গতকাল শনিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে এই সূচক ছিল ২৫১।
এয়ার ভিজ্যুয়ালের সূচকে বায়ুর মান ৫০ থাকলে তা স্বাস্থ্যকর বলে ধরা হয়। এই সূচকে ১৫১ থেকে ২০০ অস্বাস্থ্যকর হিসেবে গণ্য। ২০১ থেকে ৩০০ খুবই অস্বাস্থ্যকর। আর ৩০০-এর বেশি হলে তা বিপজ্জনক।
বায়ুর মান গবেষকেরা বলছেন, তাপমাত্রা কমে গেলে বায়ুর মান খারাপ হয়। বিশেষ করে ভোরে বা রাতের দিকে বাতাসে দূষিত বস্তুকণার পরিমাণ বেড়ে যায়। ঢাকার বায়ুদূষণের উৎস অবশ্য সব সময় একই থাকে। তবে বায়ুদূষণের তারতম্য কমবেশি হয় বাতাসে বায়ুর চাপ, প্রবাহ ও তাপমাত্রার ভিত্তিতে। বায়ুর চাপ বেশি, অন্যদিকে প্রবাহ ও তাপমাত্রা কম হলে দূষণ বাড়ে।
এ বিষয়ে স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) পরিচালক অধ্যাপক আহম্দ কামরুজ্জামান মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঢাকার বায়ুদূষণ কোনোভাবেই আমরা এড়াতে পারছি না। তার প্রধান কারণ—বায়ুদূষণের উৎসগুলো কখনোই পোক্তভাবে নিয়ন্ত্রণ বা হস্তক্ষেপে টেকসই উদ্যোগ নেওয়া হয় না। বরং বায়ুদূষণের আবহাওয়াজনিত কারণের ওপর দোষ চাপানো হয়। উৎসকে নিয়ন্ত্রণ করলেই বায়ুদূষণ কমে যাবে।’
গবেষকেরা বলছেন, গতকাল থেকে ঢাকার বায়ুর অবস্থা খারাপ। গতকাল রাতে বায়ুর মান ৩০০-এর বেশি উঠে যায় বেশ কয়েকবার। বায়ুতে ক্ষুদ্র কণার পরিমাণ বেশি ছিল। এগুলো দ্রুত বায়ুস্তরের ওপরে ওঠে। গতকাল ঢাকার বাতাসে ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার বিস্তৃত একটি ধুলার স্তর ছিল। এটি রাতেও সরেনি। ফলে বায়ুর মান খারাপ হয়। আজ ছুটির দিনের সকালে যান চলাচল কম ও নির্মাণকাজ বন্ধ থাকায় বায়ুদূষণ একটু কমেছে। তবে তা অস্বাস্থ্যকরই রয়েছে।
চলতি সপ্তাহে গরম খানিকটা বাড়বে
একুশের ভোর ছিল কিছুটা মেঘে আচ্ছন্ন। দিনের আলো ফুটতেই তা সরে দেখা মেলে রোদের। বেলা বাড়তে রোদ খানিকটা চড়া হয়। সঙ্গে হিমেল হাওয়া। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, সারা দেশের কোথাও আজ বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। তবে চলতি সপ্তাহে গরম খানিকটা বাড়বে। রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমবে। রাত ও দিনের তাপমাত্রার পার্থক্য বাড়বে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ হিমালয়ের পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশ দেখা যেতে পারে।
আবহাওয়াবিদ এ কে এম রুহুল কুদ্দুস আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ভোরের দিকে সারা দেশের নদী অববাহিকার কোথাও কোথাও হালকা কুয়াশা পড়তে পারে। সারা দেশের রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। তবে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে। পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় রাত ও দিনের তাপমাত্রা বাড়তে পারে।
চট্টগ্রাম ও রাঙামাটির আকাশে মেঘ আছে। তবে ঢাকায় মেঘ নেই। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, গতকাল দেশে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়। সেখানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। গতকাল ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বনিম্ন ছিল ১৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।