ডেঙ্গু পরীক্ষায় অযৌক্তিক ফি
ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে মানুষের ভিড়ও বাড়ছে। হাসপাতালে পৌঁছে মানুষ প্রথমেই জানতে চান, ডেঙ্গু হয়েছে কি হয়নি। ঠিক এই সুযোগটাই কিছু বেসরকারি হাসপাতাল নিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারা ডেঙ্গু পরীক্ষার ফি বেশি রাখছে। তাদের ওপর সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।
সরকারি হাসপাতালে পেইং বেড ও কেবিন ছাড়া অন্য রোগীর ক্ষেত্রে বিনা মূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষা হচ্ছে। শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক উত্তম কুমার বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, পেইং বেড ও কেবিনের রোগীদের কাছ থেকে ২৫০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।
ঢাকা শিশু হাসপাতালের বহির্বিভাগে এই পরীক্ষা হচ্ছে বিনা মূল্যে। কিন্তু কেবিনের রোগীদের জন্য এই পরীক্ষা ৮৫০ টাকায় করা হচ্ছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
এনএস১ নামের পরীক্ষায় সহজেই ডেঙ্গু শনাক্ত করা যায়। শরীর থেকে রক্ত নিয়ে এই পরীক্ষা করা হয়। রাসায়নিক ব্যবহার করে রক্তে ভাইরাস শনাক্ত করা হয়। রক্ত নেওয়ার চার ঘণ্টার মধ্যে ফলাফল জানানো সম্ভব। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার ছয় ঘণ্টা পর রক্ত নিলেও ফলাফল জানা সম্ভব।
চিকিৎসা সরঞ্জাম ব্যবসায়ীদের একটি সংগঠনের সভাপতি প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, বাজারের সবচেয়ে ভালো কোম্পানির একটি কিটের দাম ১৪৫ টাকা।
তবে অভিযোগ পাওয়া গেছে, কিছু বেসরকারি হাসপাতাল এই পরীক্ষার জন্য বেশি টাকা নিচ্ছে। একটি বড় হাসপাতালের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানিয়েছে, তাঁরা আড়াই হাজার টাকা নিচ্ছেন। ধানমন্ডি–গ্রিন রোড এলাকার কিছু হাসপাতাল নিচ্ছে ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা। ধানমন্ডির একটি হাসপাতাল কিছুদিন আগেও নিয়েছে ৭০০ টাকা। হঠাৎ তারা এ পরীক্ষার ফি দ্বিগুণ করেছে। পান্থপথের একটি হাসপাতাল নিচ্ছে ১ হাজার টাকা।
এ ব্যাপারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল হাসান খান প্রথম আলোকে বলেন, মানুষের চরম বিপদের সুযোগ নিয়ে যারা ব্যবসা করে, তাদের আইনের আওতায় আনা উচিত। তিনি বলেন, সরকার হৃদ্রোগ চিকিৎসা সরঞ্জামের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে, মানুষ উপকার পাচ্ছে। এ ক্ষেত্রেও দাম নির্ধারণ করা দরকার।
সরকারের নজরদারির ব্যাপারে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ (বুধবার) সরকারি–বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। খুব শিগগির এ ব্যাপারে সরকারের নির্দেশনা সব হাসপাতালে পাঠানো হবে। পরীক্ষা ফি যৌক্তিক সীমায় রাখতে হবে।’