ট্রেন আটকে রেখে টিলাগাঁও স্টেশন চালুর দাবি
ট্রেন আটকে রেখে আট বছর ধরে বন্ধ থাকা মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার টিলাগাঁও রেলস্টেশন চালু করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। গতকাল শনিবার টিলাগাঁও ঐক্যবদ্ধ নাগরিক সমাজ নামের একটি সংগঠন টিলাগাঁও স্টেশন এলাকায় এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
গতকাল সকাল ৯টা ৫৫ মিনিট থেকে ১০টা ৫ মিনিট পর্যন্ত ১০ মিনিট সিলেটমুখী জালালাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেন আটকে রাখেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় স্টেশন চালুসহ কয়েকটি দাবিতে টিলাগাঁও স্টেশনে মানববন্ধন ও সমাবেশ চলছিল।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঐক্যবদ্ধ নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক আব্দুস ছালাম চৌধুরী। নাগরিক সমাজের সদস্য সেলিম আহমদের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন টিলাগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল মালিক, টিলাগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালিক, ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিভাস ভট্টাচার্য, ইউপি সদস্য নিজাম উদ্দিন, কলেজছাত্রী মনি বেগম, টিলাগাঁও উচ্চবিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য মোজাম্মেল আলী প্রমুখ।
আব্দুস ছালাম চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন। এগুলো হচ্ছে স্টেশনটি পুনরায় চালু করা, পর্যাপ্ত লোকবল নিয়োগ, ডেমু ট্রেন এবং সিলেট থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামগামী দুটি আন্তনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির ব্যবস্থাসহ স্টেশনের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা। সমাবেশে আরও বলা হয়, অবিলম্বে এসব দাবি পূরণ না হলে ২২ মে থেকে রেলপথ অবরোধসহ কঠোর আন্দোলন কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, লোকবলের অভাবে ২০০৯ সালের দিকে টিলাগাঁও রেলস্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ রেলস্টেশন দিয়ে লোকাল ও মেইল ট্রেনে উপজেলার রাউৎগাঁও, টিলাগাঁও ও হাজীপুর ইউনিয়নের লোকজন বিভিন্ন স্থানে চলাচল করত। এ ছাড়া আশপাশের লংলা ও তারাপাশা চা-বাগানের চা এ স্টেশন দিয়ে ট্রেনে করে বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হতো।
ইউনিয়নের আশ্রয়গ্রামের শমশের আলী (৬০) প্রথম আলোকে বলেন, এই স্টেশন বন্ধ থাকায় শমশেরনগর বা কুলাউড়ায় গিয়ে টিকেট কেটে ট্রেনে উঠতে হচ্ছে।
টিলাগাঁও ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুল মালিক বলেন, টিলাগাঁও রেলস্টেশন পুনরায় চালুসহ স্টেশনে ডেমু ট্রেনের স্টপেজের ব্যাপারে ২০১৫ সালে প্রয়াত সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী রেলমন্ত্রী মুজিবুল হককে চিঠি দিয়েছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে রেলমন্ত্রী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে রেল অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে লিখিত নির্দেশও দিয়েছিলেন। কিন্তু এখনো এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
কুলাউড়া জংশন রেলস্টেশনের স্টেশনমাস্টার হরিপদ সরকার বলেন, টিলাগাঁও স্টেশনে একজন স্টেশনমাস্টার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। দু-তিন দিনের মধ্যে তিনি দায়িত্ব বুঝে নেবেন। অন্য দাবিদাওয়ার ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে।