জেলা প্রশাসক নিয়োগের প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে সচিবালয়ে বিক্ষোভ–হট্টগোল
দুই দফায় ৫৯ জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ দিয়ে জারি করা প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন এ পদে যেতে আগ্রহী একদল কর্মকর্তা। এ নিয়ে আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সামনে তিন ঘণ্টার বেশি সময় হট্টগোল করেছেন তাঁরা। পরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবের কাছ থেকে দুটি প্রজ্ঞাপন বাতিলের আশ্বাস পেয়ে সচিবালয় ছাড়েন নিজেদের বঞ্চিত দাবি করা এই কর্মকর্তারা। আজ এ ঘটনা ঘটে।
গত সোমবার দেশের ২৫ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ দেয় সরকার। আজ আরও ৩৪ জেলায় ডিসি নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে ডিসি হিসেবে নতুন নিয়োগ পাওয়া এই ৫৯ জনকে নিয়ে তীব্র আপত্তি ও ক্ষোভ জানান বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তারা। তাঁরা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকার নতুন যাঁদের জেলা প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে, তাঁরা বিগত সরকারের সুবিধাভোগী ও আশীর্বাদপুষ্ট। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়েও এসব কর্মকর্তা ভালো পদে ছিলেন। নতুন নিয়োগ পাওয়া ডিসিদের প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবি জানান তাঁরা।
আজ বেলা দুইটার দিকে ৫০ থেকে ৬০ জন কর্মকর্তা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ পদোন্নতি ও প্রেষণ অনুবিভাগ (এপিডি) শাখায় গিয়ে হট্টগোল করেন। তাঁরা প্রথমে যান ওই শাখার যুগ্ম সচিব কে এম আলী আযমের কক্ষে। বঞ্চিত কর্মকর্তাদের বাদ দিয়ে কেন সুবিধাভোগীদের ডিসি করা হলো, সে প্রশ্ন তুলে ওই কর্মকর্তার কাছে জবাব চান তাঁরা। পরে সেখান থেকে তাঁরা যান পাশের কক্ষে আরেক যুগ্ম সচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদের কাছে।
বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে রক্ষা পেতে যুগ্ম সচিব কে এম আলী আযম এক পর্যায়ে সেখান থেকে সরে যান। বিক্ষোভকারী কর্মকর্তারা বিসিএস ২৪তম, ২৫ ও ২৭তম ব্যাচের কর্মকর্তা। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত তাঁদের এই বিক্ষোভ চলে।
ডিসি হতে আগ্রহী, এমন বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, যে ৫৯ জনকে ডিসি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তাঁদের বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের সময়ে ভালো পদে ছিলেন। তাঁরা এ সরকারের সময়েও ডিসি হলেন। ডিসি হতে আগ্রহী বিসিএস ২৪তম ব্যাচের কর্মকর্তা উপসচিব রেবেকা খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডিসি হতে যত ধরনের যোগ্যতা লাগে, সবই আমার কাছে। কিন্তু ডিসি করা হয়নি। বিগত সরকারের সময়েও বঞ্চিত ছিলাম। এবারও বঞ্চিত করা হলো।’
পরে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে বঞ্চিত কর্মকর্তারা মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেনের সঙ্গে দেখা করতে যান। আধা ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে বঞ্চিত কর্মকর্তারা বের হয়ে জানান, তাঁরা আশ্বস্ত হয়েছেন যে ডিসি পদে নিয়োগ দেওয়া দুটি প্রজ্ঞাপন বাতিল করা হবে। এই আশ্বাসে তাঁরা ফিরে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কে এম আলী আযম প্রথম আলোকে বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব জানিয়েছেন তিনি বিষয়টি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলবেন।