জাহাজ থেকে ভিডিও দিয়ে বাংলাদেশি নাবিকের আকুতি ‘আমাদের বাঁচান’
ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দর জলসীমায় গোলা হামলার শিকার বাংলাদেশি জাহাজ এমভি বাংলার সমৃদ্ধি থেকে উদ্ধারের আকুতি জানিয়ে দুটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন নাবিকেরা।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে এক নাবিককে বারবার বলতে শোনা যায়, ‘আমাদের বাঁচান। আমাদের কোনো জায়গা থেকে সাহায্য আসেনি।’
ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দর জলসীমায় নোঙর করে রাখা জাহাজটিতে গতকাল বুধবার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত ৯টার দিকে) গোলা আঘাত হানে। এতে এক বাংলাদেশি নাবিক নিহত হন। ওই নাবিকের নাম হাদিসুর রহমান। তিনি জাহাজটিতে থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাঁর বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ গ্রামে।
উদ্ধারের আকুতি জানিয়ে ভিডিও বার্তা দেওয়া এক বাংলাদেশি নাবিক নিজেকে জাহাজের দ্বিতীয় প্রকৌশলী হিসেবে পরিচয় দেন।
২৭ সেকেন্ডের এই ভিডিওতে বাংলাদেশি নাবিককে বলতে শোনা যায়, ‘আমি বাংলার সমৃদ্ধির সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার। আমাদের জাহাজে একটু আগে রকেট হামলা হয়েছে। একজন অলরেডি ডেড। আমাদের পাওয়ার সাপ্লাই নেই। ইমার্জেন্সি জেনারেটরে পাওয়ার সাপ্লাই চলছে। আমরা মৃত্যুর মুখে সম্মুখীন। আমাদের এখনো উদ্ধার করা হয়নি। দয়া করে আপনারা আমাদের বাঁচান। আমরা সবাই আছি এখানে। দেখেন।...আমাদের কোনো জায়গা থেকে সাহায্য আসেনি। আমাদের বাঁচান।’
ছড়িয়ে পড়া এ ভিডিও জাহাজের একটি কক্ষ থেকে করা হয়েছে। সেখানে আরও ১২ নাবিককে দেখা যায়।
জাহাজটির অপর এক নাবিক আরেকটি ভিডিও নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। তাঁর নাম আসিফুল ইসলাম। ৩১ সেকেন্ডের এ ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘আমি আসিফুল ইসলাম আসিফ।...আমরা নাকি পোল্যান্ডে চলে গেছি নিরাপদভাবে। এটা ভুল নিউজ। আমাদের প্লিজ এখান থেকে উদ্ধারের ব্যবস্থা করেন।’
ইউক্রেনে আটকে পড়ার পর জাহাজটির নাবিকেরা এত দিন নাম প্রকাশ না করে তাঁদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও উদ্ধারের আকুতির কথা এত দিন বলছিলেন। তবে গতকাল জাহাজটিতে গোলা হামলায় এক নাবিক নিহত হওয়ার পর এবার প্রকাশ্যে ভিডিও দিয়ে তাঁরা উদ্ধারের আকুতি জানাচ্ছেন।
এমভি বাংলার সমৃদ্ধি বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের জাহাজ। শিপিং করপোরেশন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সরকারি সংস্থা। এ সংস্থার সাধারণ পণ্যবাহী জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে পৌঁছানোর পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে সেখানে রয়েছে। ওই দিন ভোরেই ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়া।
জাহাজটিতে বাংলাদেশের ২৯ নাবিক ছিলেন। এখন সেখানে ২৮ নাবিক রয়েছেন।