জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করে যেকোনো বিনিয়োগকে স্বাগত জানাই: উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পাওয়া নতুন বাংলাদেশের উন্নয়নে জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করে, এমন যেকোনো বিদেশি বিনিয়োগকে স্বাগত জানানো হবে।
আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের কার্যালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স হেলেন লাফেভের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে নাহিদ ইসলাম এসব কথা বলেন।
যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, বিশেষ করে সাইবার সিকিউরিটি আইন সম্পর্কে জানতে চান। এ বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বিগত সরকার বেশ কিছু আইন দিয়ে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করেছে, বিশেষ করে সাইবার নিরাপত্তা আইন। আমরা এই আইন নিয়ে কাজ করছি। মূল কথা, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো আইন আমরা রাখব না।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে চায়। বিগত বছরগুলোতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান একেবারে নিচের দিকে ছিল। বিগত দিনে বাংলাদেশে সাংবাদিকেরা নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়েছেন। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রহসন করা হয়েছে।
এ সময় হেলেন লাফেভ উপদেষ্টার দুই মন্ত্রণালয় সম্পর্কে জানতে চাইলে নাহিদ ইসলাম বলেন, মন্ত্রণালয় দুটির প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের কথা ভাবছেন তিনি। সে অনুযায়ী প্রস্তাব তৈরি করে কাজ করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের পাবলিক অ্যাফেয়ার্স–বিষয়ক কর্মকর্তা স্টিফেন ইবেলি গণমাধ্যমগুলোর অভ্যন্তরে রাজনীতির বিষয়টি কীভাবে দেখা হচ্ছে, জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। সাংবাদিকেরা যদি এ বিষয়ে সংস্কারের জন্য এগিয়ে আসে, তাহলে এ সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করবে সরকার।
সাংবাদিকদের ওয়েজ বোর্ড বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, ওয়েজ বোর্ড নিয়ে অসন্তোষ আছে। বেতনকাঠামো কম হওয়ায় তরুণেরা সাংবাদিকতার প্রতি আকর্ষণ হারাচ্ছেন। তাই ওয়েজ বোর্ড সংস্কারের চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি মেটা, গুগল, মাইক্রোসফট ও ওরাকলের বিনিয়োগ প্রসঙ্গে দূতাবাসের প্রতিনিধিদল জানতে চাইলে নাহিদ ইসলাম বলেন, জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করে এমন যেকোনো বিনিয়োগকে সরকার স্বাগত জানায়। এ সময় উপদেষ্টার সঙ্গে থাকা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এসব কোম্পানির ডেটা সেন্টার ভারতের পরিবর্তে বাংলাদেশে স্থাপনের অনুরোধ জানান দূতাবাসের প্রতিনিধিদলের কাছে।
বৈঠকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. মুশফিকুর রহমান, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন, যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের পলিটিক্যাল-ইকোনমিক কাউন্সেলর এরিখ জিলান, অর্থনৈতিক কর্মকর্তা জেমস গার্ডিনার, কমার্শিয়াল কাউন্সেলর জন ফে, পাবলিক অ্যাফেয়ার্স–বিষয়ক কর্মকর্তা স্টিফেন ইবেলি ও প্রটোকল সুপারভাইজার নিশাত তাসনিম উপস্থিত ছিলেন।