নিজেদের নামে থাকা দামি জমি ভাড়া দিয়ে ব্যবসায় নামছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এরই মধ্যে সরকারি-বেসরকারি যৌথ বিনিয়োগের (পিপিপি) জন্য ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বড় শহরের প্রাণকেন্দ্রে প্রায় ২০০ একর নিষ্কণ্টক জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। অর্থাৎ জমি দেবে রেল কর্তৃপক্ষ, আর অবকাঠামো বানাবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এমনই এক প্রকল্প হলো মাল্টিমোডাল হাব নির্মাণ প্রকল্প। এর জন্য ৬৫ বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী কমলাপুর রেলস্টেশন ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ইতিমধ্যে এ ধরনের ১২টি প্রকল্প সরকারের ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির নীতিগত অনুমোদন পেয়েছে। চট্টগ্রামে একটি হাসপাতাল ও একটি শপিং মল নির্মাণে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কমলাপুর স্টেশন ঘিরে মাল্টিমোডাল হাব প্রকল্পে আগ্রহ দেখিয়ে জাপানি একটি কোম্পানি প্রাথমিক নকশা করেছে। বাকি প্রকল্পে বিনিয়োগকারী নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। এর বাইরে আরও তিনটি প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
রেলের মূল কাজ যাত্রীসেবা বৃদ্ধি। রেল চাইলে কনটেইনার ও মালামাল পরিবহন করেও আয় বাড়াতে পারত। ভারতে মালামাল পরিবহন বাড়িয়ে রেল লাভজনক হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে রেল কর্তৃপক্ষ তা করেনি, করতে পারেনি।
রেলের কার্যক্রমকে মোটা দাগে দুই শ্রেণিতে ভাগ করা হয়। রেলওয়ে পরিচালনাসংক্রান্ত কাজ (কোর-বিজনেস) ও অপ্রধান কাজ (নন কোর-বিজনেস)। রেল পরিচালনা–সংক্রান্ত কাজ হচ্ছে, রেল নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ, যাত্রী ও মালামাল পরিবহন বাড়ানো এবং যাত্রীসেবা নিশ্চিত করা। অন্যদিকে অপ্রধান কাজের মধ্যে রয়েছে—রেলকে সরকার যে জমি দিয়েছে, সেগুলো ইজারা দিয়ে, ফাইবার অপটিক ব্যবস্থা ভাড়া দিয়ে এবং দোকান-মার্কেট বরাদ্দের মাধ্যমে কিছু আয় করা।
পিপিপি প্রকল্পসংক্রান্ত নথিপত্রে দেখা যায়, অনুমোদন পাওয়া ও অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা ১৫টি প্রকল্পের মধ্যে ১৩টিই রেলের অপ্রধান কাজের শ্রেণিভুক্ত। মাত্র দুটি প্রকল্প রেলওয়ে পরিচালনা-সংক্রান্ত বা প্রধান কাজের আওতায় পড়ে। এগুলো হলো ঢাকার চার পাশে বৃত্তাকার রেলপথ ও গাজীপুরের ধীরাশ্রমে একটি অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনাল (আইসিডি) নির্মাণ।
পরিবহন বিশেষজ্ঞ ও রেলের কর্মকর্তাদের কেউ মনে করছেন, সংস্থাটির প্রধান অগ্রাধিকার হওয়া উচিত যাত্রীসেবা বাড়ানো। এরপর মালামাল পরিবহন বাড়ানো গেলে প্রতিষ্ঠানের আয়ও বাড়বে। অপ্রধান কাজ বাড়িয়ে রেলকে টিকিয়ে রাখা যাবে না। পরে প্রধান ও অপ্রধান কাজের মধ্যে সমন্বয় করা একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।
সরকার গত ১১ বছরে রেলের উন্নয়নে প্রায় ৭৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে। ২০১২ ও ২০১৬ সালে দুই দফা যাত্রী ও মালামাল পরিবহনের ভাড়া বাড়িয়েছে। এরপরও গত অর্থবছরে রেলের পরিচালনা লোকসান (অপারেটিং লস) হয়েছে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা। বিপুল বিনিয়োগের পরও সময় মেনে ট্রেন চলার হার কমছে। বেড়েছে ট্রেনের যাত্রার সময়ও। লোকবলের অভাবে ১১১টি স্টেশন বন্ধ হয়ে আছে।
রেলওয়ের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের সূত্র বলছে, বিপুল বিনিয়োগের পরও রেলের লোকসানের পাল্লা ভারী হওয়ার পেছনে প্রকল্প বাস্তবায়ন ও কেনাকাটায় দুর্নীতি, অপরিকল্পিত প্রকল্প বাস্তবায়ন ও ব্যবস্থাপনার ঘাটতিই মূল কারণ। এমন পরিস্থিতিতে রেল নিজের দামি জমি দিয়ে ব্যবসার প্রকল্পে হাত দেওয়া যুক্তিযুক্ত নয়।
ঢাকার কমলাপুর ও বিমানবন্দর রেলস্টেশন ঘিরে মাল্টি মোডাল হাব নির্মাণে প্রকল্প নেওয়া হয় ২০১৮ সালে। প্রকল্পের আওতায় স্টেশন ঘিরে হোটেল ও বাণিজ্যিক কমপ্লেক্স নির্মাণ করার কথা রয়েছে। দুটি প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।
রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত আছে, ৭০ শতাংশ উন্নয়ন হবে ঋণে বা সরকারি টাকায়। বাকি ৩০ শতাংশ পিপিপিতে। রেলে বেসরকারি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতেই এসব প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এতে রেলের আয় বাড়বে। পাশাপাশি রেলের যেসব জমি বা স্থাপনার সদ্ব্যবহার করা যাচ্ছিল না, সেগুলো মানুষের কাজে লাগবে। তিনি বলেন, চলমান সেতু ও রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পগুলো সমাপ্ত হলে রেলের সেবা আরও বাড়বে।
কমলাপুর স্টেশন ভাঙার বিষয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, মেট্রোরেলের কারণে এমনিতেই কমলাপুর স্টেশন সৌন্দর্য হারাত। স্টেশনটি সরিয়ে আশপাশের এলাকাজুড়ে যে উন্নয়ন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, তা নজর কাড়বে।
লাভ-লোকসানের হিসাব নেই
অতীতে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে জমি দিয়েছে রেলওয়ে। আবার রাজনৈতিক বিবেচনায় পেট্রলপাম্প ও সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশন, এনজিওসহ ব্যক্তিপর্যায়েও জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বিনিময়ে রেল মাসে মাত্র দেড় থেকে দুই কোটি টাকা আয় করে। কারণ, জমি ইজারা দিয়ে যে টাকা রেল আয় করে, এর চেয়ে কয়েক গুণ বেশি টাকা চলে যায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের পকেটে।
এবার পিপিপি প্রকল্পের আওতায় পাঁচ তারকা হোটেল, অফিস কমপ্লেক্স, আবাসিক ভবন ও হাসপাতাল বানিয়ে রেলের বছরে কত টাকা লাভ হবে, তার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে রেল কোনো সমীক্ষাই করেনি।
চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ডে একটি বহুতল আবাসিক কাম বাণিজ্যিক কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণে জমি বরাদ্দ করা হয়েছে ১ দশমিক ২ একর। ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৫০ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম রেলস্টেশনের ভেতরে আইকন ভবন নির্মাণে জায়গা বরাদ্দ আছে আড়াই একর। ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৫০ কোটি টাকা। এ দুটি প্রকল্পের প্রস্তাব এখন রেলপথ মন্ত্রণালয়ে আছে।
সমীক্ষা না থাকায় যেসব স্থানে হোটেল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেখানে এর চাহিদা আছে কি না, তা–ও জানার সুযোগ নেই। বড় শহরগুলোতে এমনিতেই একাধিক সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল আছে। নতুন করে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল নির্মাণ করলে শিক্ষক, চিকিৎসক ও শিক্ষার্থী কোথায় পাবে, সেই প্রশ্নেরও উত্তর নেই।
পিপিপি প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, প্রতিটি প্রকল্পের জন্য বিনিয়োগকারীদের দেওয়া ধারণা থেকে দর-কষাকষি হচ্ছে। ফলে ভবিষ্যতে প্রকল্প লাভজনক না হলে এর দায় নিয়ে ঝামেলা তৈরি হতে পারে। তাঁরা বলছেন, জমিগুলো দামি এবং নিষ্কণ্টক। ভুল হলে জমিগুলো এসব কোম্পানিকে উপহার দেওয়ার মতো হয়ে যাবে।
হোটেল, শপিং মল ও গেস্টহাউস
নথিপত্র থেকে জানা গেছে, চট্টগ্রামে একটি পাঁচ তারকা হোটেল ও একটি শপিং মল কাম গেস্টহাউস নির্মাণের জন্য গত বছরের আগস্টে স্থানীয় আবাসন কোম্পানি ইপিক প্রোপার্টিজ লিমিটেডকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি রেলের চট্টগ্রাম আঞ্চলিক প্রধান কার্যালয়ের পাশের প্রায় আধা একর জমি পেয়েছে। চার বছরে অবকাঠামো নির্মাণকাজ শেষ করার কথা। ৪০ বছর পর রেলকে ওই সম্পদ ফিরিয়ে দেবে। এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৫ কোটি ২৪ লাখ টাকা।
চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ডে একটি বহুতল আবাসিক কাম বাণিজ্যিক কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণে জমি বরাদ্দ করা হয়েছে ১ দশমিক ২ একর। ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৫০ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম রেলস্টেশনের ভেতরে আইকন ভবন নির্মাণে জায়গা বরাদ্দ আছে আড়াই একর। ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৫০ কোটি টাকা। এ দুটি প্রকল্পের প্রস্তাব এখন রেলপথ মন্ত্রণালয়ে আছে।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী চট্টগ্রামে বড় ধরনের শপিং মল আছে ১১টি। এলাকাভিত্তিক মার্কেট অসংখ্য। র্যাডিসন ব্লু ও বেস্ট ওয়েস্টার্ন অ্যালায়েন্স নামে দুটি পাঁচ তারকা হোটেল রয়েছে। আরও তিনটি তারকা হোটেল নির্মাণের কাজ চলছে। এর বাইরে ঐতিহ্যবাহী পরিচিত হোটেল আছে অসংখ্য। এ অবস্থায় সেখানে আরও পাঁচ তারকা হোটেল বা শপিং মল করা লাভজনক হবে কি না, তার কোনো পরিষ্কার ধারণা রেলের কাছে নেই।
ঢাকার কমলাপুর ও বিমানবন্দর রেলস্টেশন ঘিরে মাল্টি মোডাল হাব নির্মাণে প্রকল্প নেওয়া হয় ২০১৮ সালে। প্রকল্পের আওতায় স্টেশন ঘিরে হোটেল ও বাণিজ্যিক কমপ্লেক্স নির্মাণ করার কথা রয়েছে। দুটি প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।
এ দুটি প্রকল্প বাস্তবায়নে জাপানের কাজিমা করপোরেশনের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এর মধ্যে কমলাপুর প্রকল্পের প্রাথমিক নকশাও প্রণয়ন করেছে কাজিমা। বিস্তারিত সম্ভাব্যতা যাচাই করতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে যুক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত সূত্রগুলো বলছে, এর জন্য ঐতিহ্যবাহী কমলাপুর রেলস্টেশন ভাঙা পড়বে। উত্তর দিকে নতুন একটি স্টেশন নির্মাণ করা হবে। পাশাপাশি শাজাহানপুর রেলওয়ে কলোনিসহ আশপাশের এলাকায় প্রকল্পের আওতায় চলে আসবে। নির্মাণ করা হবে বহুতল ভবন। একই পরিকল্পনা বিমানবন্দর স্টেশন ঘিরেও। কিন্তু সেখানে পর্যাপ্ত জমি নেই। তাই বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষের কাছে জমি চাওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে পাঁচ তারকা হোটেলের সংখ্যা ১৮। এর মধ্যে ঢাকায় আটটি, কক্সবাজারে চারটি, চট্টগ্রামে দুটি এবং যশোর, বগুড়া, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারে একটি।
সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত আছে, ৭০ শতাংশ উন্নয়ন হবে ঋণে বা সরকারি টাকায়। বাকি ৩০ শতাংশ পিপিপিতে। রেলে বেসরকারি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতেই এসব প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এতে রেলের আয় বাড়বে। পাশাপাশি রেলের যেসব জমি বা স্থাপনার সদ্ব্যবহার করা যাচ্ছিল না, সেগুলো মানুষের কাজে লাগবে।
কমলাপুর স্টেশনের আশপাশে অসংখ্য আবাসিক হোটেল রয়েছে। কাছাকাছি মতিঝিলে ঐতিহ্যবাহী পূর্বাণী হোটেল রয়েছে, যেটি অনেকটা নিবু নিবু করে জ্বলছে। বিমানবন্দর স্টেশনের কাছাকাছি পাঁচ তারকা লা-মেরিডিয়ান ও র্যাডিসনসহ বেশ কয়েকটি বড় হোটেল রয়েছে। করোনার কারণে এখন হোটেল ব্যবসায় প্রায় ধস নেমেছে। কত বছর এই পরিস্থিতি থাকবে কেউ জানে না। বনানীর নির্মাণাধীন পাঁচ তারকা হোটেল শেরাটনকে ঢাকা হাসপাতালে রূপান্তর করতে যাচ্ছে উদ্যোক্তারা।
খুলনা রেলস্টেশনের পাশে শপিং মল ও গেস্টহাউস নির্মাণের জন্য ১ দশমিক ৭৮ একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ব্যয় ধরা হয়েছে ১২০ কোটি টাকা। ইতিমধ্যে চুক্তিপত্র ও দরপত্র দলিল তৈরি করা হয়েছে। অথচ ওই শহরে বেসরকারি উদ্যোগে একটি শপিং কমপ্লেক্স চলছে। আছে আরও ছোট-বড় অসংখ্য মার্কেট। সরকারি-বেসরকারি হোটেল ও গেস্টহাউস আছে ৩৬টি। রেলের জমিতে আরও হোটেল ও শপিং কমপ্লেক্স কতটা জরুরি বা ব্যবসাসফল হবে, সেই প্রশ্ন থেকেই যায়।
কোর-বিজনেস প্রকল্পে গতি নেই
ঢাকায় বৃত্তাকার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন হয় ২০১৮ সালে। এটির সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৭০ হাজার কোটি টাকা। চীনের চায়না রেলওয়ে সিউন সার্ভে অ্যান্ড ডিজাইন গ্রুপ পরামর্শক হিসেবে কাজ করছে। দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে জিটুজি পদ্ধতি বাস্তবায়নে চেষ্টা চলছে। গাজীপুরের ধীরাশ্রমে আইসিডি নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে ২০১৩ সালে। ২০০৯ সাল থেকেই প্রকল্পটি নিয়ে রেলে আলোচনা চলছে। এটি বাস্তবায়িত হলে রেলের মালামাল পরিবহন বেড়ে যাবে। তাতে বাড়বে রেলের আয়।
রেলওয়ে সূত্র বলছে, এই দুই প্রকল্প রেলের জন্য দরকার। কিন্তু বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান আগ্রহ দেখাচ্ছে না। কারণ, এখানে রেলের জমি নেই। উল্টো মোটা অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। রেলের জমির প্রকল্পগুলোর প্রতি বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের আগ্রহ বেশি।
পরিবহন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সামছুল হক প্রথম আলোকে বলেন, রেলের মূল কাজ যাত্রীসেবা বৃদ্ধি। রেল চাইলে কনটেইনার ও মালামাল পরিবহন করেও আয় বাড়াতে পারত। ভারতে মালামাল পরিবহন বাড়িয়ে রেল লাভজনক হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে রেল কর্তৃপক্ষ তা করেনি, করতে পারেনি।
পিপিপি প্রকল্প সম্পর্কে তাঁর মূল্যায়ন, রেলের জমিগুলো নিষ্কণ্টক, শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত এবং দামি। তাই পিপিপি প্রকল্পে বিনিয়োগকারীর চেয়ে রেলের লাভের ভাগ বেশি হওয়া উচিত। বিনিয়োগকারীর সঙ্গে দর-কষাকষির সময় এটি নিশ্চিত করার দায়িত্ব রেলের। নতুবা রেলের দামি জমি বেসরকারি কোম্পানিকে উপহার দেওয়ার মতো হয়ে যাবে। এ ছাড়া শত শত হোটেল ও শপিং মলের ভিড়ে রেলের হোটেল, শপিং মলগুলো লাভজনক না হলে এর দায় যাতে রেলকে নিতে না হয়, তা–ও নিশ্চিত করতে হবে।
আগামীকাল পড়ুন: ব্যবসার স্বার্থে ভাঙা পড়বে কমলাপুর স্টেশন