জনবল-সংকটের কারণে দুই বছর ধরে জামালপুরে পাঁচটি রেলস্টেশনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এতে ট্রেনে যাতায়াত ও টিকিট কাটা নিয়ে যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়ছেন। এ ছাড়া এই কারণে স্টেশনে মূল্যবান সরঞ্জাম চুরি ও নষ্ট হওয়াসহ নাশকতার আশঙ্কা রয়েছে।
রেলস্টেশন সূত্র জানায়, জামালপুরে ১০৮ কিলোমিটার রেলপথে ১৯টি স্টেশন রয়েছে। এর মধ্যে দুই বছর ধরে জামালপুর কোর্ট স্টেশন, মেলান্দহের দুরমুঠ স্টেশন, ইসলামপুরের মোশারফগঞ্জ স্টেশন, সরিষাবাড়ীর বাউসী স্টেশন ও শহীদ নগর বারইপটল স্টেশন বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া পিয়ারপুর স্টেশন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খোলা থাকে। বাকি সময় ওই স্টেশন বন্ধ থাকে। এদিকে প্রতিটি রেলস্টেশনে একজন স্টেশনমাস্টার ও সহকারী মাস্টার এবং চারজন করে পয়েন্টম্যান থাকার কথা। কিন্তু এসব স্টেশনে কেউ নেই। এ কারণে রাতের বেলা ট্রেনের চালককে সংকেত দেওয়া, যাত্রীদের সহায়তা করা ও টিকিট কাটার কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে এসব স্টেশনে ট্রেন থামছে, যাত্রীরাও ওঠা-নামা করছেন।
কয়েকজন ট্রেনযাত্রী বলেন, স্টেশনগুলো বন্ধ থাকায় যাত্রীদের দুর্ভোগের সীমা নেই। কারণ, একটি ট্রেন যখন ইসলামপুর স্টেশন থেকে ছেড়ে আসে, তখন অন্য আরেকটি ট্রেন জামালপুর বা মেলান্দহ স্টেশনে না আসা পর্যন্ত সেটিকে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষ রেলপথের ওপরই নির্ভরশীল। কিন্তু রাতে এসব স্টেশন বন্ধ থাকায় নানা অপরাধমূলক কাজ চলে।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, জামালপুর কোর্ট স্টেশন জনশূন্য। চারদিকে সুনসান নীরবতা। স্টেশনের সব কক্ষই তালাবদ্ধ। ভবনের বারান্দায় খড় রাখা হয়েছে। প্ল্যাটফর্ম ময়লা-আবর্জনায় ভরে গেছে। স্টেশনে থাকা কয়েকটি দোকানও বন্ধ।
কোর্ট স্টেশন এলাকার চন্দ্রা গ্রামের হাফিজুর রহমান বলেন, দুই বছর আগেও সব সময় স্টেশনে লোকজনের সমাগম ছিল। স্টেশন বন্ধ হওয়ার পর প্রথম দিকে যাত্রীরা স্টেশনে এলেও, এখন আর তেমন একটা আসেন না। ট্রেন একাই দাঁড়ায়, একাই ছেড়ে যায়।
জামালপুর স্টেশনে সোহেল রানা নামের এক যাত্রী বলেন, তিনি জামালপুর থেকে সরিষাবাড়ী যাবেন একটি লোকাল ট্রেনে। ট্রেনটি স্টেশনে প্রায় ৩০ মিনিট ধরে দাঁড়িয়ে আছে। কারণ, স্টেশন বন্ধ থাকায় সরিষাবাড়ী স্টেশন থেকে ছেড়ে আসা অন্য একটি ট্রেন জামালপুর না পৌঁছা পর্যন্ত এই ট্রেন যাবে না। তাই সময় নষ্ট হলেও ট্রেনেই যাওয়ার অপেক্ষায় আছেন তিনি। জনবল নিয়োগ দিয়ে বন্ধ থাকা স্টেশনগুলো খুলে দেওয়ার দাবি তাঁর।
জামালপুরের স্টেশনমাস্টার জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘দুই বছর ধরে জনবল-সংকটের কারণে স্টেশনগুলো বন্ধ। এতে প্রতিনিয়ত ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটছে।