রেল কোন পথে-৩
চড়া সুদের ঋণে উন্নয়ন, প্রকল্পে বিলাসী ব্যয়
চীনের সঙ্গে জিটুজি পদ্ধতির প্রকল্প নিয়ে প্রশ্ন। কঠিন শর্ত, প্রতিযোগিতাহীন দরপত্র, ঠিকাদারও চীনের।
পদ্মা সেতুর দুই পাড়ের মধ্যে রেল সংযোগ স্থাপনে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত নতুন রেললাইন নির্মাণে প্রতি কিলোমিটারের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৯ কোটি ৪১ লাখ টাকা। এই কাজের চুক্তি হয় ২০১৬ সালে। এর এক বছর পর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার পথে নতুন রেললাইন নির্মাণে প্রতি কিলোমিটারের জন্য ব্যয় ঠিক করা হয় ৪৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা। প্রায় একই ধরনের কাজে প্রতি কিলোমিটারে ব্যয়ের ব্যবধান প্রায় ৩৫ কোটি টাকা।
কক্সবাজারে রেললাইন নির্মাণকাজ হচ্ছে উন্মুক্ত আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে। এর অর্থায়নকারী এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। আর পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে রেল সংযোগ হচ্ছে চীনা অর্থায়নে, জিটুজি (এক দেশের সরকারের সঙ্গে অন্য দেশের সরকারের চুক্তি) পদ্ধতিতে। বাণিজ্যিক এই ঋণের সুদ বেশ চড়া। ঠিকাদারও ঠিক করে দিয়েছে চীনা সরকার।
এই দুটি প্রকল্প উদাহরণমাত্র। রেলের প্রায় সব উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয়ই এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। চড়া সুদের ঋণ আর কঠিন শর্তের ফেরে খরচ যেন আকাশছোঁয়া।
গত এক দশকে রেলে সবচেয়ে বেশি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে রেললাইন ও অবকাঠামো নির্মাণে। সমাপ্ত ও বাস্তবায়নাধীন বড় প্রকল্পগুলোর প্রায় সব কটিতেই এমন অস্বাভাবিক ব্যয়ের চিত্র পাওয়া যায়।
এসব প্রকল্পে অনেক সুবিধাভোগী। ব্যয় বা পণ্যের মূল্যের কোনো ঠিকঠিকানা থাকে না। প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র ছাড়া কোনো কাজই করা উচিত নয়।
এর মধ্যে চীন সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের দ্বিপক্ষীয় চুক্তিতে নেওয়া তিনটি (জিটুজি) প্রকল্পে অতীতের প্রায় সব নজির ছাড়িয়ে গেছে। চীনের সঙ্গে আরও বেশ কিছু প্রকল্প জিটুজি পদ্ধতিতে বাস্তবায়নের আলোচনা চলছে।
এডিবির ঋণে ছয়টি প্রকল্প চলমান। তাদের অর্থায়নে ২০১০ সালে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার নতুন রেললাইন নির্মাণ প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল ১ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা। কাজ বৃদ্ধি, নকশা পরিবর্তনসহ নানা অজুহাতে ২০১৬ সালে ব্যয় দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি সামান্যই। এডিবির অর্থায়নে সাম্প্রতিক সময়ে সম্পন্ন হওয়া টঙ্গী-ভৈরববাজার ডাবল লাইন নির্মাণকাজ শেষে ২০০ শতাংশ ব্যয় বেড়েছে।
জাপানি সংস্থা জাইকার ঋণে বর্তমানে দুটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। ৪ দশমিক ৮০ কিলোমিটার ডাবল লাইনের রেলসেতু নির্মাণে ২০১৬ সালে প্রকল্প নেওয়া হয়। শুরুতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা। ঠিকাদার জাপানের।
এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত সূত্র বলছে, এর আগে যত রেলসেতু হয়েছে, সেগুলোর প্রতি কিলোমিটারের ব্যয়ের সঙ্গে তুলনা করলে এই সেতুর ব্যয় অনেক বেশি।
ভারতের ঋণে সাতটি প্রকল্প চলমান। জিটুজি পদ্ধতি না হলেও এসব প্রকল্পের পণ্য ও সেবা ৬৫ থেকে ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত ভারত থেকে নেওয়ার শর্ত আছে। ভারতীয় ঋণে রেলে ছয়টি প্রকল্প সম্পন্ন হয়েছে। বেশির ভাগই ইঞ্জিন-কোচ ও মালবাহী ওয়াগন বা ট্যাংকার কেনার প্রকল্প। ফলে প্রায় শতভাগ পণ্য ভারত থেকেই কেনা হয়েছে।
জানতে চাইলে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, যেসব প্রকল্পের কথা বলা হচ্ছে, সব কটিই তিনি মন্ত্রী হওয়ার আগে নেওয়া। সরকারের অনেকগুলো সংস্থা যাচাই-বাছাই করেই নিয়েছে। সরকার উন্নয়নে জোর দিয়েছে। ত্রুটিবিচ্যুতি থাকলে তা থেকে ভবিষ্যতে শিক্ষা নেওয়া হবে।
গত এক দশকে রেলে ছোট-বড় ৬৪টি প্রকল্প সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে ৩৭টি ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠনের পর নেওয়া হয়। বাকিগুলো আগেই নেওয়া। তবে শেষ হয় ২০০৯ সালের পর। বড় প্রকল্পের প্রায় সব কটিই বিদেশি অর্থায়নে বাস্তবায়িত হয়েছে।
এ বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, একই ধরনের রেললাইন নির্মাণকাজে কিলোমিটারপ্রতি ব্যয়ের পার্থক্য ৩৫ কোটি টাকা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। খরচের অনিয়ম দেখার জন্য সরকারের অডিট বিভাগ আছে। প্রকল্প মূল্যায়নের দায়িত্বে রয়েছে আইএমইডি। এমনকি বিদেশি ঋণের খরচ তদারকিরও ব্যবস্থা আছে। কিন্তু কোনো সংস্থাই এখন আর কার্যকর নেই। অনেক ক্ষেত্রে সরকারের তদারকি সংস্থার কর্মকর্তারা নিজেরাই অনিয়মের অংশীদার হয়ে যাচ্ছেন।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, মনে রাখতে হবে, উন্নয়নটা হচ্ছে চড়া সুদে নেওয়া ঋণে। দুর্নীতি বা অপচয়ের বোঝাটা জনগণের ঘাড়ে চাপছে। এখনই তা আটকাতে না পারলে জনগণের বোঝাটা দিন দিন ভারী হবে।
যেভাবে ব্যয় বাড়ে
কীভাবে প্রকল্পের ব্যয় বাড়ে, এর একটা চিত্র পাওয়া যায় বিভিন্ন প্রকল্পে মাটির কাজের দর দেখে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে করা চুক্তি ও প্রকল্প প্রস্তাব বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পে প্রতি ঘনমিটার মাটি ভরাটে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮১৩ কোটি টাকা। একই দর আখাউড়া-সিলেট মিশ্র গেজ ডাবল লাইন নির্মাণ প্রকল্পে মাটির কাজেও। এ দুটিই হচ্ছে চীনের সঙ্গে জিটুজি পদ্ধতিতে।
সম্প্রতি শেষ হওয়া পাবনা-ঢালারচর নতুন রেললাইন নির্মাণে মাটির ব্যয় ছিল প্রতি বর্গফুটে ৩০৫ টাকা। আখাউড়া-লাকসাম মিশ্র গেজ ডাবল লাইন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে ২০১৬ সালে। এই প্রকল্পে মাটির দর ছিল ২৮০ টাকা।
এখন ওই প্রকল্পে মাটির বাড়তি কাজ করতে হবে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পদ্মা রেল লিংকসহ অন্য প্রকল্পে বাড়তি দরের অজুহাতে ৬৫০ টাকা ঘনমিটার করার চাপ দিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে বাস্তবায়ন হওয়া রেলের অন্য প্রকল্পগুলোরও মাটির দর ২৫০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে।
অতীতে সাপ্লায়ার্স ক্রেডিট (যে দেশ টাকা দেবে, সে দেশ থেকে পণ্য কেনা) বাংলাদেশের জন্য খারাপ অভিজ্ঞতা নিয়ে এসেছে। এখন জিটুজি পদ্ধতিও মনে হয় সেদিকেই যাচ্ছে। এই পদ্ধতিতে প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র হয় না। চড়া সুদ, কঠিন শর্ত ও কৌশলী ক্রয় নীতিমালা ব্যয় বাড়িয়ে দিচ্ছে। মনে রাখতে হবে, এগুলো সহায়তা নয়, ঋণ। টাকাটা সুদে-আসলে ফেরত দিতে হবে। ভেবেচিন্তে এগোনো দরকার
জিটুজি প্রকল্পে চুক্তিতে এমন কিছু শর্ত রাখা হয়েছে, যার ফলে কৌশলে শতকোটি টাকা ঠিকাদারের পকেটে চলে যাচ্ছে। যেমন পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পে প্রতিবছর পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৩০ শতাংশ। আখাউড়া-সিলেট মিশ্র গেজ ডাবল লাইন প্রকল্পে এই হার ২৭ শতাংশ। জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী মিশ্র গেজ ডাবল লাইন প্রকল্পে ২৫ শতাংশ। ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি সইয়ের ১৮ মাস পর থেকেই সরকারকে প্রতিটি পণ্যের এই বাড়তি মূল্য দিতে হবে।
পদ্মা রেল লিংকের কাজ চুক্তির প্রায় আড়াই বছর পর শুরু হয়েছে। বাকিগুলোর কাজ এখনো শুরু হয়নি। অর্থাৎ কাজ শুরুর আগেই পণ্যের মূল্য ৩০ শতাংশ হারে বেড়ে গেছে। প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত মেয়াদে না হলে প্রতিবছরই এভাবে বাড়তি টাকা দিতে হবে।
একাধিক বিদেশি ঋণ চুক্তির শর্ত নিয়ে কাজ করা একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, সব মিলিয়ে চীনা ঋণের জন্য ৩ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে। ভারতের ঋণের সুদ কিছুটা কম হলেও শর্ত কড়া। এডিবি ও জাইকার ঋণ সে তুলনায় সহজ।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ সামছুল হক প্রথম আলোকে বলেন, অতীতে সাপ্লায়ার্স ক্রেডিট (যে দেশ টাকা দেবে, সে দেশ থেকে পণ্য কেনা) বাংলাদেশের জন্য খারাপ অভিজ্ঞতা নিয়ে এসেছে। এখন জিটুজি পদ্ধতিও মনে হয় সেদিকেই যাচ্ছে। এই পদ্ধতিতে প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র হয় না। চড়া সুদ, কঠিন শর্ত ও কৌশলী ক্রয় নীতিমালা ব্যয় বাড়িয়ে দিচ্ছে। মনে রাখতে হবে, এগুলো সহায়তা নয়, ঋণ। টাকাটা সুদে-আসলে ফেরত দিতে হবে। ভেবেচিন্তে এগোনো দরকার।
জিটুজি তিন প্রকল্প নিয়েই প্রশ্ন বেশি
চীনের সঙ্গে জিটুজি পদ্ধতিতে রেলের তিনটি প্রকল্প চলমান। এগুলো হচ্ছে পদ্মা রেল লিংক প্রকল্প, জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী মিশ্র গেজ ডাবল লাইন প্রকল্প ও আখাউড়া-সিলেট মিশ্র গেজ ডাবল লাইন প্রকল্প।
পদ্মা রেল লিংক প্রকল্পটির ঠিকাদার হচ্ছে চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড। প্রকল্পের ব্যয় ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা। এর আওতায় মূল ও শাখা লাইনসহ ২১৫ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে প্রায় ২২ কিলোমিটার হবে উড়ালপথে। জমি অধিগ্রহণ, বেতন-ভাতা, ভ্যাটসহ আনুষঙ্গিক খরচ বাদে শুধু রেললাইন নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ৯১ কোটি টাকা। প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় দাঁড়ায় ৭৯ দশমিক ৪১ কোটি টাকা। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত কাগজে-কলমে অগ্রগতি ২২ শতাংশ। তবে এর বেশির ভাগই জমি অধিগ্রহণসহ প্রস্তুতিমূলক কাজ বলে রেলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
আখাউড়া-সিলেট পথে মূল, শাখা লাইনসহ ২৩৯ দশমিক ১৪ কিলোমিটার মিটারগেজ রেলপথ মিশ্র গেজে রূপান্তর করার প্রকল্প সরকার অনুমোদন দিয়েছে। ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা। ঋণের শর্ত অনুসারে, চায়না রেলওয়ে কনস্ট্রাকশন কোম্পানিকে ঠিকাদার হিসেবে বাছাই করে চীন সরকার।
ঠিকাদারের সঙ্গে করা চুক্তির নথিপত্র বলছে, রেলপথ নির্মাণ ও এ-সংক্রান্ত আনুষঙ্গিক ব্যয় হচ্ছে ১৩ হাজার ৯৬৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রতি কিলোমিটারের ব্যয় পড়বে ৫৮ কোটি টাকার বেশি। এই প্রকল্পের ভৌত কাজ এখনো শুরু হয়নি।
জিটুজি প্রকল্পে চুক্তিতে এমন কিছু শর্ত রাখা হয়েছে, যার ফলে কৌশলে শতকোটি টাকা ঠিকাদারের পকেটে চলে যাচ্ছে। যেমন পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পে প্রতিবছর পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৩০ শতাংশ। আখাউড়া-সিলেট মিশ্র গেজ ডাবল লাইন প্রকল্পে এই হার ২৭ শতাংশ। জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী মিশ্র গেজ ডাবল লাইন প্রকল্পে ২৫ শতাংশ। ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি সইয়ের ১৮ মাস পর থেকেই সরকারকে প্রতিটি পণ্যের এই বাড়তি মূল্য দিতে হবে।
রেলওয়ে সূত্র বলছে, আখাউড়া-সিলেট পথে যে কাজের জন্য চুক্তি হয়েছে, প্রায় একই কাজ চলমান ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের আখাউড়া থেকে লাকসাম অংশে। এর অর্থায়ন করেছে এডিবি। ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে। এই প্রকল্পের আওতায় মূল ও শাখা লাইন মিলিয়ে নতুন ১৮৪ দশমিক ৬০ কিলোমিটার মিশ্র গেজ লাইন নির্মিত হচ্ছে। পাশাপাশি বিদ্যমান রেলপথকে মিশ্র গেজে রূপান্তর করা হচ্ছে। প্রকল্পের মোট ব্যয় সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি। শুধু লাইন নির্মাণকাজে ব্যয় ৩ হাজার ৪৯৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় ১৯ কোটি টাকার কম।
গাজীপুরের জয়দেবপুর-পাবনার ঈশ্বরদীর মধ্যে মিশ্র গেজ ডাবল লাইন নির্মাণের ব্যয় ১৪ হাজার ২৫০ কোটি টাকা। ঠিকাদার চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি। ঠিকাদারের সঙ্গে মূল কাজের চুক্তি ১০ হাজার ৩০২ কোটি টাকার। মূল লাইনসহ শাখা লাইন নির্মিত হবে ১৭৪ কিলোমিটার। সে হিসেবে প্রতি কিলোমিটারের পেছনে ব্যয় হবে প্রায় ৫৯ কোটি টাকা। এখনো ঠিকাদার কাজ শুরু করেনি।
সাবেক সচিব ও বৃহৎ প্রকল্প বিষয়ে বিশেষজ্ঞ মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিটি জিটুজি প্রকল্পের জন্য এ দেশে এজেন্ট রয়েছে। তারা রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী। নির্দিষ্ট কোনো ঠিকাদারের হয়ে তারা প্রকল্প গ্রহণ থেকে শুরু করে সরকারি অনুমোদন—সব স্তরে ভূমিকা রাখে। এসব প্রকল্পে অনেক সুবিধাভোগী থাকে। এ জন্য এর ব্যয় বা পণ্যের মূল্যের কোনো ঠিকঠিকানা থাকে না। প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র ছাড়া কোনো কাজই করা উচিত নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন। (শেষ)