গোপন কক্ষে একজন করে ‘ডাকাত’ দাঁড়িয়ে থাকে, এটাই ইভিএমের চ্যালেঞ্জ: ইসি আহসান হাবিব
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট নেওয়ার ক্ষেত্রে ভোটের গোপন কক্ষে ‘ডাকাত’, ‘সন্ত্রাসী’ দাঁড়িয়ে থাকাকেই চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান। এর বাইরে তিনি আর কোনো চ্যালেঞ্জ দেখেন না।
আজ সোমবার রাজধানীর নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আহসান হাবিব এ মন্তব্য করেন। তবে তিনি আশাবাদী, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এটি হবে না। এর আগে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রতিনিধিদের ইভিএমের কাস্টমাইজেশন (কেন্দ্রভিত্তিক ভোটার ও প্রার্থীদের তথ্য ইনপুট দেওয়া) প্রক্রিয়া দেখানো হয়।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আহসান হাবিব খান বলেন, ‘ইভিএমের মধ্যে চ্যালেঞ্জ একটাই, আর কোনো চ্যালেঞ্জ আমি দেখি না। চ্যালেঞ্জ সেটা হচ্ছে যে ডাকাত, সন্ত্রাসী গোপন কক্ষে একজন করে দাঁড়িয়ে থাকে, “আপনার ভোট হয়ে গেছে চলে যান।” দিস ইজ দ্য চ্যালেঞ্জ।’
সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এমনটা হবে না মন্তব্য করে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, সিসি ক্যামেরা থাকবে, সাংবাদিকদের ভোটকেন্দ্রে যেতে দেওয়া হবে। তাঁরা ভেতরে গিয়ে এমন কিছু পেয়ে ছবি দিলে সঙ্গে সঙ্গে ভোট বন্ধ করে দেওয়া হবে। দায়ী প্রিসাইডিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আহসান হাবিব বলেন, নির্বাচনে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। তাঁদের কোনো দুর্বলতা নেই, কোনো চাপ নেই। তাঁরা পুরোপুরি স্বাধীন। স্বাধীনভাবেই কাজ করবেন।
ইসি সূত্র জানায়, কাস্টমাইজেশন দেখতে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের ২১ জন প্রতিনিধি নির্বাচন ভবনে এসেছিলেন। এর মধ্যে দুজন ছিলেন বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত মনিরুল হকের (সাক্কু) প্রতিনিধি। কাস্টমাইজেশন প্রক্রিয়ার পাশাপাশি ইভিএম কীভাবে কাজ করে, সেটিও প্রতিনিধিদের দেখানো হয়। কাস্টমাইজেশন দেখার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি মনিরুল হকের প্রতিনিধিরা। কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রতিনিধিরা এই প্রক্রিয়া দেখে সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন। অবশ্য কেউ কেউ বলেছেন, তাঁরা ইভিএমের সোর্স কোড জানতে চেয়েছিলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে তা প্রকাশ করা হবে না বলে তাঁদের জানানো হয়েছে। কেউ কেউ ভোট দেওয়ার পর যে ডেটা স্টোরেজ থাকে, সেটা দেখতে চেয়েছিলেন, তবে তা দেখানো হয়নি।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী কাজী মাহবুবুর রহমানের প্রতিনিধি কাজী মশিউর রহমান বলেন, তিনি ইভিএমের কারিগরি দিকগুলো নিয়ে জানতে চেয়েছিলেন। এসব বিষয়ে উত্তর পেয়েছেন। তিনি বলেছিলেন, ইভিএমের সফটওয়্যারের সোর্স কোড যেন তাঁদের দেখানো হয়। এটি দেখলে বোঝা যাবে, এর ভেতরে কিছু করার সুযোগ আছে কি না, যেমন ১০ ভোট এক প্রতীকে পড়বে, এর পরের ভোট আরেক প্রতীকে পড়বে—এ ধরনের কিছু করা সম্ভব কি না। তবে ইসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সোর্স কোড প্রকাশ করা হবে না। তবে সব মেশিনে একই সোর্স কোড ব্যবহার করা হবে।
এ বিষয়ে ইভিএম প্রকল্পের পরিচালক সৈয়দ রাকিবুল হাসান বলেন, সোর্স কোড নিরাপত্তার বিষয়। এটি কখনো কাউকে দেওয়া হবে না। কারণ, এর সঙ্গে নিরাপত্তার বিষয় জড়িত। তবে মেশিন ঠিকভাবে কাজ করছে কি না, সেটা যাচাইয়ের সুযোগ থাকছে। ভোটের ফলাফল থেকে বোঝা যায়, এটা ঠিকভাবে কাজ করছে কি না।