প্রাণ ফিরে পাবে দক্ষিণাঞ্চলের শিল্প-বাণিজ্য
গলাচিপায় গ্যাস মজুদের আভাস অনুসন্ধান কূপ খননের প্রস্তুতি
জ্বালানির প্রকট সমস্যায় জর্জরিত এবং শিল্প-বাণিজ্যে পিছিয়ে পড়া দেশের দক্ষিণাঞ্চলে প্রাকৃতিক গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। স্থলভাগের ৭ নম্বর ব্লকভুক্ত বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলার একাধিক স্থান গ্যাস মজুদের জন্য সম্ভাবনাময় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে বেশি সম্ভাবনাময় পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার চরকাজল।পেট্রোবাংলা সূত্র জানায়, ভোলার পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়ে তেঁতুলিয়া নদী যেখানে সাগরে মিশেছে, সেই জায়গার নাম আগুনমুখা। এই আগুনমুখার একটু উজানে নদীটির পশ্চিম পারে রতনদী তালতলী আর পূর্ব পারে চরকাজল। দ্বিমাত্রিক ভূকম্পন জরিপে এই চরকাজলে বিপুল পরিমাণ গ্যাস মজুদের আভাস পাওয়া গেছে। এর ভিত্তিতে এখন সেখানে অনুসন্ধান কূপ খননের প্রস্তুতি শুরু করা হয়েছে। এর অংশ হিসেবে চরকাজলে একটি ‘ড্রিলিং প্যাড’ স্থাপন করতে হবে, যেখানে পরে রিগ বসানো হবে।কোনো এলাকায় গ্যাস অনুসন্ধানের একেবারে প্রথম পর্যায় হচ্ছে কোনো উপগ্রহ চিত্র বা ভূতাত্ত্বিক মানচিত্র বিশ্লেষণ। এরপর দ্বিমাত্রিক এবং প্রয়োজনে ত্রিমাত্রিক ভূকম্পন জরিপ। এই জরিপে গ্যাসের মজুদ সম্পর্কে নিশ্চিত আভাস পেলে অনুসন্ধান কূপ খনন করে দেখতে হয়। অনুসন্ধান কূপ খনন করে যদি বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উত্তোলনযোগ্য মজুদ পাওয়া যায়, তাহলেই কেবল সেই গ্যাসক্ষেত্র উন্নয়ন করে উত্তোলন কূপ খনন করা হয়।চরকাজল ছাড়াও দ্বিমাত্রিক ভূকম্পন জরিপে বরিশাল সদর উপজেলায় কীর্তনখোলা নদীর পূর্ব পারে চন্দ্রমোহন ইউনিয়নে গ্যাস মজুদের একটি সম্ভাবনা (প্রোসপেক্ট) চিহ্নিত করা হয়েছে। একই রকম সম্ভাবনা চিহ্নিত করা হয়েছে বরগুনার আমতলী উপজেলায়। তবে চরকাজল বেশি সম্ভাবনাময় হওয়ায় সেখানেই প্রথম অনুসন্ধান কূপ খনন করা হচ্ছে।৭ নম্বর ব্লকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য মার্কিন কোম্পানি শেভরনের সঙ্গে পেট্রোবাংলার উত্পাদন অংশীদারি চুক্তি (পিএসসি) রয়েছে। এই পিএসসি অনুযায়ী, ওই অঞ্চলে আরও আগে অনুসন্ধান কার্যক্রম চালানোর কথা ছিল। কিন্তু এত দিন শেভরন অত্যধিক সম্ভাবনাময় বৃহত্তর সিলেটের বিবিয়ানা, মৌলভীবাজার ও জালালাবাদ গ্যাসক্ষেত্র উন্নয়ন ও উত্তোলনে বেশি মনোযোগী ছিল।গত বছর থেকে শেভরন ৭ নম্বর ব্লকে মোট ৪৫০ কিলোমিটার এলাকায় দ্বিমাত্রিক জরিপ চালিয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ২০০ কিলোমিটার হচ্ছে কুয়াকাটা এলাকার সমুদ্রবক্ষে। এখন চরকাজলে অনুসন্ধান কূপ খননের ব্যাপারে পেট্রোবাংলা ও শেভরনের মধ্যে আলোচনা চলছে।পিএসসি অনুযায়ী, তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের প্রতিটি পর্যায়ে পেট্রোবাংলার অনুমোদন ছাড়া কোনো কোম্পানিই কোনো রকম কার্যক্রম চালাতে পারে না।