২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

খেতাবপ্রাপ্ত, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার ভাতা বাড়ল

বীরশ্রেষ্ঠ মাসে ৩০ হাজার, বীর উত্তম ২৫ হাজার, বীর বিক্রম ২০ হাজার, বীর প্রতীক ১৫ হাজার, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ২২ হাজার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা তিন শ্রেণিতে ভাতা পাবেন

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ছবি: সংগৃহীত

মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের রাষ্ট্রীয় সম্মানী ভাতাসহ সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়েছে সরকার। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে তাঁরা এই ভাতা পাবেন। এর আগে ২০১৩ সালে এই সম্মানী ভাতা বাড়ানো হয়েছিল। খেতাবপ্রাপ্ত, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের মোট সংখ্যা ৮ হাজার ৫০৭।

বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা মাসিক ১২ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৩০ হাজার টাকা, বীর উত্তমদের ভাতা ১০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২৫ হাজার টাকা, বীর বিক্রমদের ভাতা ৮ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২০ হাজার এবং বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্তদের ভাতা ৬ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১৫ হাজার টাকা করা হয়েছে।

তবে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা জানুয়ারিতে ৮ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা হওয়ার কথা থাকলেও এ বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
ভাতা বাড়ানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, তাঁদের অবদানের তুলনায় ভাতা খুবই কম ছিল। তাই বাড়ানো হয়েছে।
অর্থ ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্র বলেছে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাজেট অনুবিভাগ শাখা থেকে ভাতা বাড়ানো-সংক্রান্ত চিঠি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর ফলে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সার্বিক বাজেট বরাদ্দ থেকে সমন্বয় করতে হবে। এ ছাড়া ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত সিলিংয়ের মধ্যে থেকে সংশ্লিষ্ট খাতে প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান রাখতে হবে।
ভাতা বাড়ানো-সংক্রান্ত চিঠি অনুযায়ী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের বিদ্যমান চারটি শ্রেণিকে তিনটি শ্রেণিতে রূপান্তর করে তাঁদের ভাতা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ‘এ’ শ্রেণির (যাঁরা ৯৬ থেকে ১০০ শতাংশ পঙ্গু) ২০ জনের মাসিক ভাতা ৩০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৪৮ হাজার টাকা করা হয়েছে। ‘বি’ শ্রেণির যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা ৩৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আগের ‘বি’ ও ‘সি’ শ্রেণিকে একীভূত ‘বি’ করা হয়েছে। এই শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ২ হাজার ৪৭৫ জন।
‘সি’ শ্রেণির (আগের ‘ডি’) ২ হাজার ৫৩২ জন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার সম্মানী ভাতা ১৮ হাজার টাকা করা হয়েছে। আগে ‘বি’ শ্রেণির যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা ২০ হাজার, ‘সি’ শ্রেণি ১৬ হাজার এবং ‘ডি’ শ্রেণির যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা ৯ হাজার ৭০০ টাকা ভাতা পেতেন।

এবারও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও মৃত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের ভাতা একই রাখা হয়েছে। তাঁরা মাসিক ২২ হাজার টাকা ভাতা পাবেন। আগে পেতেন ১৫ হাজার টাকা। বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ পরিবারকে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট মাসে ৩৫ হাজার টাকা দেবে, আগে ছিল ২৮ হাজার। এ ছাড়া তারামন বিবি, বীরপ্রতীক ২৫ হাজার টাকা ভাতা পাবেন, আগে পেতেন ১৫ হাজার টাকা।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে অসীম সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৭৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর গেজেটের মাধ্যমে সাতজনকে বীরশ্রেষ্ঠ, ৬৮ জনকে বীর উত্তম, ১৭৫ জনকে বীর বিক্রম এবং ৪২৬ জনকে বীর প্রতীক খেতাব দেওয়া হয়। ২০১১ সালে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে বিভিন্ন বাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বাড়ানো হয়। এই সুবিধা পাচ্ছিলেন সেনাবাহিনীর ২৫১ জন, নৌবাহিনীর ২১ জন, বিমানবাহিনীর ২৩ জন, বিজিবির ১১৮ জন এবং আনসারের একজন সদস্য। কিন্তু বেসামরিক খেতাবপ্রাপ্ত ২১৭ জন মুক্তিযোদ্ধা আগের হারে সম্মানী ভাতা পাচ্ছিলেন। এটি সমন্বয় করতে ২০১৩ সালের ২২ জুলাই খেতাবপ্রাপ্ত বেসামরিক মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক ভাতা বাড়ানো হয়, যা তাঁরা এখন পাচ্ছেন।