খায়রুজ্জামানকে দ্রুত দেশে ফেরানোর চেষ্টা চলছে: শাহরিয়ার আলম
মালয়েশিয়ায় ইমিগ্রেশন আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে গ্রেপ্তার এম খায়রুজ্জামানকে যত দ্রুত সম্ভব বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে সরকার কাজ করছে। আজ বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়ায় আটক খায়রুজ্জামানের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এ তথ্য জানান।
মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন পুলিশ গতকাল বুধবার সকালে জেলহত্যা মামলার খালাসপ্রাপ্ত আসামি এবং কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত এম খায়রুজ্জামানকে সেলাঙ্গর প্রদেশের আমপাং এলাকা থেকে আটক করে। দেশে ফেরা আদেশ অগ্রাহ্য করে ২০০৯ সাল থেকে মালয়েশিয়ায় শরণার্থী হিসেবে রয়েছেন খায়রুজ্জামান।
প্যারিসভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটসের এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক গতকাল দুপুরে তাঁর টুইটে জানান, বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত ও জাতিসংঘের শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃত এম খায়রুজ্জামানকে ইমিগ্রেশন পুলিশ কুয়ালালামপুরের উপকণ্ঠ থেকে আটক করেছে। তিনি বাংলাদেশে প্রত্যাবাসনের ঝুঁকিতে রয়েছেন। বাংলাদেশে ফিরে গেলে তিনি বিচারের মুখোমুখি হতে পারেন।
আজ বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হামযা জয়নুদ্দীন পুত্রজায়ায় সংবাদ সম্মেলনে খায়রুজ্জামানের আটকের বিষয়ে বলেন, ‘আমি অবশ্যই তাঁর আটকের বিষয়টি সম্পর্কে অবগত রয়েছি। বিধি মেনেই তাঁকে আটক করা হয়েছে। বাংলাদেশে সংঘটিত অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ততার (খায়রুজ্জামান) কারণে তাঁকে আটকের জন্য বাংলাদেশ অনুরোধ জানিয়েছে।’
খায়রুজ্জামানের গ্রেপ্তারের কারণ জানতে চাইলে শাহরিয়ার আলম তাঁর দপ্তরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেখানে বাংলাদেশ দূতাবাসকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে তিনি সে দেশের ইমিগ্রেশন আইনের একটি ধারা লঙ্ঘন করেছেন। এই অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি মিশনকে জানানো হয়েছে। ইমিগ্রেশন আইন লঙ্ঘন করলে কোনো ব্যক্তিকে নিজের দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য ডিটেনশন সেন্টারে রাখা হয়। তাঁকেও অন্তরীণ রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আমরা মালয়েশিয়ায় আমাদের মিশনকে জানিয়েছি।’
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘মালয়েশিয়া প্রকৃত খুনিদের আশ্রয় দেয় না। তবে আমরা যত দ্রুত সম্ভব তাঁকে বাংলাদেশে আনার জন্য কাজ করছি। আশা করছি, আমরা দ্রুত তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পারব।’
খায়রুজ্জামান জেল হত্যা মামলায় খালাস পেয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো রেড অ্যালার্ট ছিল কি না, জানতে চাইলে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘তিনি যেহেতু খালাসপ্রাপ্ত তাই রেড অ্যালার্ট ছিল না। আমি যতটা বুঝি তাঁকে সশরীর জিজ্ঞাসাবাদ করার এবং এই মামলাটিকে আবার খতিয়ে দেখার সুযোগ আছে। এ বিষয়টি আইন মন্ত্রণালয় ভালো বলতে পারবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয় ঠিক করবে কোন পর্যায়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বা মামলা পুনরুজ্জীবিত করা হবে কি না।’
খায়রুজ্জামানের কাছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার শরণার্থী কার্ড থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তাঁর কাছে ইউএনএইচসিআরের কার্ড আছে কি না, তা আমার জানা নেই।’