বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি-সংক্রান্ত দুর্নীতির মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-২-এর বিচারক এ এস এম রুহুল ইমরান এই আদেশ দেন।
আদালতের পেশকার দেওয়ান আশিক মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, এ মামলায় খালেদা জিয়ার পক্ষে তাঁর আইনজীবী হাজিরা দেন। অপরদিকে দুদকের পক্ষে খালেদা জিয়াকে হাজির করার পরোয়ানা চেয়ে আবেদন করা হয়। আদালত শুনানি শেষে খালেদা জিয়াকে আগামী ১৩ মার্চ হাজির করার জন্য নির্দেশ দেন। দেওয়ান আশিক জানান, খালেদা জিয়াকে হাজির করার পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
পৃথক দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কারাগারে রাখা হয়েছে। গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি এখানে আছেন। আদালত সূত্র বলছেন, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি-সংক্রান্ত দুর্নীতির মামলার আসামি বিএনপির নেতা আমিনুল হকের আবেদন গতকাল সোমবার খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে মামলাটি ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দেন। মামলাটি এখন অভিযোগ গঠনের শুনানির পর্যায়ে আছে।
আদালতের পেশকার জানান, আগামী শুনানির তারিখে উচ্চ আদালতের প্রাপ্তি সাপেক্ষে অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, মামলার ১৬ আসামির মধ্যে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান ও বিএনপির সাবেক মহাসচিব আবদুল মান্নান, বিএনপি নেতা এম কে আনোয়ার ও এম শামসুল ইসলাম মারা যাওয়ায় মামলার দায় থেকে তাঁদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। খালেদা জিয়াসহ নয়জন এখন মামলার আসামি। এর মধে আজ আদালতে হাজির ছিলেন বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, এ কে এম মোশাররফ হোসেনসহ পাঁচজন। একজন আসামি শুরু থেকে পলাতক আছেন। মামলার আসামি আমিনুল হক ও হোসাফ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন আইনজীবীর মাধ্যমে হাজিরা দেন।
২০১৫ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি-সংক্রান্ত দুর্নীতির মামলা বাতিল চেয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার করা আবেদন খারিজ করেন হাইকোর্ট। ২০১৬ সালের ২৫ মে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে দুর্নীতির অভিযোগে করা মামলায় হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়।
বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে উৎপাদন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ঠিকাদার নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় দুদক মামলাটি করে।