খালেদা জিয়াকে বাসায় থাকতে দিয়েছি, চিকিৎসা করতে দিয়েছি, এটাই কি বেশি নয়: প্রধানমন্ত্রী
বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করানোর সুযোগ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এখানে তাঁর কিছু করার নেই। এটা এখন আইনের ব্যাপার। ‘খালেদা জিয়াকে যে কারাগার থেকে বাসায় থাকতে দিয়েছি, চিকিৎসা করতে দিয়েছি এটাই কি বেশি নয়?’ এমন মন্তব্য করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার হাতে যেটুকু পাওয়ার, সেটুকু আমি দেখিয়েছি। আর কত চান, আমাকে বলেন। এখন সে অসুস্থ, ওই যে বললাম না রাখে আল্লাহ মারে কে, মারে আল্লাহ রাখে কে। সেটাই মনে করে বসে থাকেন। এখানে আমার কিছু করার নাই। আমার যেটা করার, আমি করেছি। এটা এখন আইনের ব্যাপার।’
আজ বুধবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সাম্প্রতিক স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৬ এ অংশগ্রহণ এবং লন্ডন ও ফ্রান্সে দু-সপ্তাহের সফর বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। সেখানে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা করাতে বিদেশে যাওয়ার আবেদনের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেবেন—এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি গণভবনে থাকা জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে সরাসরি এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে থাকা সাংবাদিকদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি এই প্রশ্নোত্তরপর্বে অংশগ্রহণ করেন।
এই প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমার কাছে চান কীভাবে? বলুন তো। খালেদা জিয়াকে যে কারাগার থেকে বাসায় থাকতে দিয়েছি, চিকিৎসা করতে দিয়েছি, এটাই কি বেশি নয়? আপনাকে যদি কেউ হত্যার চেষ্টা করত, আপনি কি তাকে গলায় ফুলের মালা দিয়ে নিয়ে আসতেন? আপনার পরিবারকে যদি কেউ হত্যা করত, আর সেই হত্যাকারীকে যদি কেউ বিচার না করে পুরস্কৃত করে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিত, তাদের আপনি কী করতেন? আমি থাকতে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ভোট দিয়ে সংসদে বসাল। যেখানে আমি বিরোধীদলীয় নেতা ছিলাম, সেখানে বসানো হলো কর্নেল রশিদকে। কে করেছিল? খালেদা জিয়া।’
কোটালীপাড়ায় বোমা পুঁতে রেখে তাঁকে হত্যা প্রচেষ্টার প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যখন বোমা পোঁতে, তার আগে তাঁর (খালেদা জিয়া) বক্তৃতা কী ছিল? শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী তো দূরে থাকুক, কোনো দিন বিরোধী দলের নেতাও হতে পারবে না। সেই কথাও বলেছিল। ভেবেছিল মরেই তো যাব। রাখে আল্লাহ মারে কে, আর মারে আল্লাহ রাখে কে। এখন আমার বেলায় সেটা হচ্ছে রাখে আল্লাহ মারে কে। সেখানে তারপরও খালেদা জিয়ার জন্য এত দয়া দেখাতে আমাকে বলেন। কেউ এই প্রশ্ন করলে আমার মনে হয় আপনাদের একটু লজ্জা হওয়া উচিত। বাপ, মা, আমার ছোট ভাই রাসেলকে পর্যন্ত হত্যা করেছে।
তারপরও আমরা অমানুষ না। অমানুষ না দেখেই তাকে আমরা অন্তত তার বাসায় থাকার, চিকিৎসা করানোর ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আমার এক্সিকিউটিভ ক্ষমতা আমার হাতে যতটুকু আছে। বাকিটা আইনগত ব্যাপার।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্নীতি করে করে এই দেশটাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছে। গ্রেনেড হামলার পর এতজন লোক আহত আমাদের, ২২ জন মানুষ মারা গেছে।
একটি পার্লামেন্টের সেশনে আলোচনা করতে দেয়নি। আমরা এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে পারিনি। এত বড় অমানবিক যে তাকেও আমি মানবিকতা দেখিয়েছি।’