টিসিবির পণ্য ক্রয়
খরচ কমাতে গরমে অপেক্ষা
নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় রংপুর নগরের নিম্ন ও মধ্যবিত্তের অনেকেই ভিড় করছেন টিসিবির ট্রাকের সামনে
প্রচণ্ড রোদ আর ভ্যাপসা গরম। দুপুরে রংপুরের কাচারি বাজার এলাকায় টিসিবির পণ্য কিনতে ট্রাকের সামনে লাইনে দাঁড়ান স্থানীয় বাসিন্দা সুমী রানী। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর কিনতে পারেন দুই লিটার তেল এবং দুই কেজি করে পেঁয়াজ, চিনি ও মসুর ডাল।
ব্যাগ হাতে ফেরার সময় সুমী জানান, যেসব পণ্য কিনেছেন, সেগুলো মিলিয়ে একটি প্যাকেজ। নিতে দাম পড়েছে ৪৮০ টাকা। এসব পণ্য আলাদাভাবে বাজার থেকে কিনতে লাগত প্রায় ৭৪৮ টাকা। সে তুলনায় ২৬৮ টাকা সাশ্রয় হয়েছে তাঁর।
প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০০ টাকা লেগে যায় খাবারেই। কীভাবে সংসার চলছে, শুধু ভগবান জানেন।
নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় রংপুর নগরের নিম্ন ও মধ্যবিত্তের অনেকেই ভিড় করছেন টিসিবির ট্রাকের সামনে। এ কারণে তৈরি হচ্ছে দীর্ঘ সারি। খোলাবাজারের তুলনায় কিছুটা কম দামে পণ্য কিনতে রোদ, গরম উপেক্ষা করে ভিড় করেন মানুষ।
প্রতিদিন নগরের আটটি কেন্দ্রে ন্যায্যমূল্যে এসব পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। টিসিবির ট্রাকের পণ্য বিক্রেতা শহিদুল ইসলাম জানান, বাজারে তেল-পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় ট্রাক আসার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের দীর্ঘ লাইন হয়। ফলে মুহূর্তেই শেষ হয়ে যায় পণ্য। অথচ কিছুদিন আগেও এসব পণ্য নিয়ে বসে থাকতে হতো।
কাচারি বাজারে টিসিবির পণ্য কিনতে আসা লালকুঠি বাজার এলাকার বাসিন্দা জানকি বালা জানান, তিনি কাপড় সেলাইয়ের কাজ করেন। ছেলেমেয়েসহ পাঁচজনের সংসার। প্রতিদিন সংসারে কমপক্ষে দেড় কেজি চাল লাগে। নিত্যপণ্যের সব জিনিসের দাম বেশি। প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০০ টাকা লেগে যায় খাবারেই। জানকি বালা বলেন, কীভাবে সংসার চলছে, তা শুধু ভগবান জানেন।
টিসিবির ট্রাকে ন্যায্যমূল্যে সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১০০ টাকা, চিনি ও ডাল প্রতি কেজি ৫৫ এবং পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৩০ টাকায় বিক্রি হয়। প্যাকেজ হিসেবে এসব পণ্য দুই লিটার ও দুই কেজি করে কিনতে হয়। সব মিলিয়ে দাম পরে ৪৮০ টাকা।
গতকাল রংপুর নগরের খোলাবাজারে এসব পণ্যের মধ্যে সয়াবিন প্রতি লিটার ১৫৫, চিনি প্রতি কেজি ৮৪, মসুর ডাল প্রতি কেজি ৯০ ও বিদেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৪৫ টাকায় বিক্রি হয়। গত মাসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় খুচরা পর্যায়ে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করে সর্বোচ্চ ১৫৩ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন ও পাম ওয়েলের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশের বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে।
ট্রাক আসার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের দীর্ঘ লাইন হয়। ফলে মুহূর্তেই শেষ হয়ে যায় পণ্য।
নগরের সিটি বাজারের মুদিদোকানি রমজান আলী জানান, তেলের বাজার অনেক দিন ধরেই চড়া। এখন সয়াবিন প্রতি লিটার বিক্রি করছেন ১৫০-১৫৫ টাকায়। চিনি ৮৪, মসুর ডালের কেজি প্রকারভেদে ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।