কোরবানির গরু পরিবহনে ‘ক্যাটল স্পেশাল’ ট্রেন
দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চল থেকে কোরবানির পশু ঢাকায় আনতে ‘ক্যাটল স্পেশাল’ নামে দুটি বিশেষ ট্রেন প্রস্তুত করেছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ১৭ জুলাই থেকে ট্রেন দুটি কোরবানির পশু পরিবহন শুরু করবে বলে দিন ধার্য রয়েছে। তবে এর আগে বুকিং হয়ে গেলে যেকোনো দিন ট্রেন দুটি চলাচল শুরু করতে পারে বলে রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
বর্তমানে ট্রেন দুটি সম্পূর্ণ প্রস্তুত অবস্থায় পাবনার ঈশ্বরদী জংশন স্টেশনে রয়েছে। দুটি ট্রেনের একটি খুলনা থেকে বেলা একটায় ছেড়ে পাবনার ঈশ্বরদী স্টেশনে হয়ে রাত তিনটায় ঢাকার পৌঁছাবে। অপরটি একইভাবে বিকেল চারটায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে ভোর পৌনে চারটায় ঢাকায় পৌঁছাবে।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন শনিবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ট্রেনটির সুবিধা নিতে বিভিন্ন এলাকায় খামারিদের মধ্যে প্রচারণা চালানো হচ্ছে বলে জানান রেলওয়ের এই কর্মকর্তা।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাবনার পাকশী বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, করোনা মোকাবিলায় দেশে লকডাউন চলায় উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের খামারিদের ঢাকায় কোরবানির গরু পরিবহনের সুবিধার্থে বিশেষ এই ট্রেন দুটি চালু করা হচ্ছে। ট্রেন দুটি থেকে খুলনা, যশোর, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জসহ এই রুটের প্রতিটি স্টেশন এলাকার খামারিরা সুবিধা নিতে পারবেন। বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপর চলাচলের উপযোগী ওয়াগনগুলোকে একত্র করে এই ট্রেনের রেক গঠন করা হয়েছে। ওয়াগনগুলোয় বাঁশের ফ্রেম ব্যবহার করে পশু পরিবহনের উপযোগী করা হয়েছে। প্রতিটি ওয়াগনে ২০টি গরু পরিবহন করা যাবে। খুলনা থেকে প্রতিটি ওয়াগনের জন্য ১৪ হাজার ৬৯০ টাকা ভাড়া দিতে হবে। গরুপ্রতি ভাড়া লাগবে প্রায় ৭৩৫ টাকা। অন্যদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে প্রতিটি ওয়াগনের জন্য ভাড়া দিতে হবে ১১ হাজার ৮৩০ টাকা। গরুপ্রতি ভাড়া লাগবে প্রায় ৫৯২ টাকা।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন জানান, ক্যাটল স্পেশাল ট্রেন সম্পর্কে ইতিমধ্যে খুলনা, যশোর, মোবারকগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা, পোড়াদহ, ঈশ্বরদী, আবদুলপুর, রাজশাহী, উল্লাপাড়া, পাবনার চাটমোহর, ভাঙ্গুরার বড়াল ব্রিজ, লাহিড়ী মোহনপুর, বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব স্টেশনসহ বিভিন্ন স্টেশন এলাকার খামারিদের জানানো হয়েছে। এসব স্টেশন থেকে খামারি ও গরু ব্যবসায়ীরা নির্ধারিত ফরমের মাধ্যমে ওয়াগন বুকিং করতে পারবেন। ইতিমধ্যে রেল বিভাগ খামারি, ব্যবসায়ী, প্রাণিসম্পদ বিভাগ, চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ কর্তৃপক্ষ ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘করোনার এই সময়ে ট্রেন দুটি খামারিদের অনেক উপকারে আসবে বলে আমরা আশা করছি। ফলে ট্রেনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাঁদের সর্বোচ্চ সুবিধা দিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’