কক্সবাজারের সাগরদ্বীপ কুতুবদিয়ায় খাবার পানির তীব্র সংকট চলছে। উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের ছোট-বড় দুই হাজারের মতো পুকুরে সমুদ্রের লোনা পানি ঢুকে পড়ায় এ সংকট দেখা দিয়েছে। একটি বেসরকারি সংস্থা তিন দিন ধরে উপজেলার দুটি ইউনিয়নে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করলেও অন্য এলাকায় পানির জন্য হাহাকার চলছে।
উপজেলা চেয়ারম্যান এ টি এম নুরুল বশর চৌধুরী বলেন, ২১ মে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর আঘাতে কুতুবদিয়ার প্রায় ২০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। প্রায় ১০ হাজার ঘরবাড়ি বিলীন হয়েছে। জোয়ারের পানিতে ডুবে আছে উত্তর ধুরুং, কৈয়ারবিল, আলী আকবরডেইল, লেমশিখালী, বড়ঘোপ ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার পাঁচ হাজারের মতো ঘরবাড়ি। এসব এলাকার ৯০ শতাংশ নলকূপ ও পুকুরে সমুদ্রের লোনা পানি ঢুকে পড়েছে। এ কারণে খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। মাটির নিচে জমাটবাঁধা পাথরের স্তূপের কারণে উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে নলকূপ স্থাপন সম্ভব হয় না।
গতকাল সকালে উত্তর ধুরুং ইউনিয়নের মনছুরপাড়া ও হাজীপাড়া ঘুরে দেখা গেছে, বেসরকারি সংস্থা কোস্ট ট্রাস্টের সদস্যরা দুর্গত লোকজনের মধ্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করছেন। কোস্ট ট্রাস্টের সমৃদ্ধি প্রকল্পের সমন্বয়কারী মো. ফজলুল হক বলেন, ২৩ মে থেকে তাঁরা উত্তর ধুরুং ও আলী আকবরডেইল ইউনিয়নের মনছুরআলী পাড়া, হাজীপাড়া, আজিমুদ্দিন সিকদারপাড়া, আকবর বলীঘাট, সতর উদ্দিনপাড়ার প্রায় ৮০০ পরিবারের মধ্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করছেন।
কুতুবদিয়া উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কার্যালয়ের মাঠ পরিদর্শক মিজানুর রহমান জানান, উপজেলায় আলী আকবরডেইল, উত্তর ধুরুং, কৈয়ারবিল, লেমশিখালী ও বড়ঘোপ ইউনিয়নের ৬ হাজার ৬৮২টি নলকূপের মধ্যে ২ হাজার ১৪৬টি নলকূপ নষ্ট হয়ে গেছে।
কুতুবদিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক জয়নাল আবেদীন জানান, নলকূপ ও পুকুরের লোনা পানি পান করে উপকূলের অনেকে ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
গতকাল বুধবার বিকেলে কুতুবদিয়ার দুর্গত উপকূল পরিদর্শন করেন কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনের সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক। তিনি বলেন, প্রতিদিন ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে দুবার করে জোয়ারের পানি ঢোকায় উপকূলের বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে।