কিট সংকটে রাজশাহী নগরে র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা হঠাৎ বন্ধ
রাজশাহী নগরে ৬ জুন থেকে পথচারীসহ নগরবাসীকে করোনা পরীক্ষা করানোর জন্য বেশ কিছু পয়েন্টে র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা শুরু হয়। প্রথম দিকে এই পরীক্ষায় মানুষের আগ্রহ কম ছিল। পরে এক সপ্তাহের মধ্যে অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় মানুষের আগ্রহ বেড়ে যায়। প্রথমে পাঁচটি পয়েন্টে শুরু হলেও পরে পয়েন্ট বাড়ানো হয়। তবে গত বৃহস্পতিবার থেকে র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। পরীক্ষা করাতে এসে মানুষ ফিরেও যাচ্ছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কিটের সংকটে পরীক্ষা বন্ধ।
আজ শনিবার সকাল ১০টার সাহেববাজার বড় মসজিদের সামনে বুথে দাঁড়িয়ে ছিলেন নগরের মিজানের মোড় এলাকার আবদুল আওয়াল (৪০)। তিনি এই বুথে গত ১৯ জুন পরীক্ষা করিয়েছিলেন। র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় তাঁর করোনা পজিটিভ ফলাফল আসে। তিনি নগরের বেলদারপাড়া এলাকায় একটি প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা প্রহরীর চাকরি করেন। তিনি বলেন, সকাল ৯টা থেকে এই বুথের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। কিন্তু এখানে কেউ নেই। তাঁর সঙ্গে আরও কয়েকজন ছিলেন। তাঁরা চলে গেছেন। তাঁর চাকরিতে যোগদান করা জরুরি। করোনা নেগেটিভ ফল পেলে তিনি যোগদান করতে পারেন।
একই বুথে মাকে নিয়ে নগরের হোসনীগঞ্জ এলাকা থেকে করোনা পরীক্ষার জন্য এসেছিলেন মো. জুবায়ের (৩০)। তিনিও এর আগে করোনা পরীক্ষা করিয়ে পজিটিভ ফলাফল পেয়েছিলেন। এখন তিনি অনেকটাই সুস্থ। তাঁর মায়েরও করোনা পরীক্ষা করাতে চান তিনি।
নগরের শিরোইল এলাকার সাজ্জাদ হোসেন (৩৮) গতকাল শুক্রবারও কয়েক ঘণ্টা এসে অপেক্ষা করে গেছেন এই বুথে। এসে দেখেন চেয়ার–টেবিল ওলটানো। মনে করেছিলেন, শুক্রবার পরীক্ষা করানো হয় না। তাই তিনি আজ আবার এসেছেন। কিন্তু কারও কোনো দেখা পাচ্ছিলেন না। পরে তিনি জানতে পারেন, এখানে এখন পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজের এক চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, লকডাউন হোক আর যা–ই হোক মানুষকে তবুও করোনার পরীক্ষা করতে দিতে হবে। পরীক্ষা করলে অন্তত বাড়িতে তিনি সতর্ক থাকতে পারবেন। বাড়ির অন্য সদস্যরা নিরাপদে থাকতে পারবেন। এ কারণে পাড়া-মহল্লায় অ্যান্টিজেন পরীক্ষা চালু রাখতে হবে।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এফ এ এম আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, তাঁরা রাজশাহী নগরে প্রায় ২০ হাজার মানুষের পরীক্ষা করিয়েছেন। কিট ফুরিয়ে গেছে বলে পরীক্ষা গত বৃহস্পতিবার থেকে বন্ধ রয়েছে। কিটের জন্য তাঁরা সিভিল সার্জন দপ্তরে চিঠি দিয়েছেন। এখন নগরে কঠোর লকডাউন চলছে। মানুষ ঘরে থেকে জ্বরের চিকিৎসা নিলে এমনিতেই সেরে উঠবেন। জ্বর নিয়ে বাইরে বের হলে আরও অনেকের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন মো. কাইয়ুম তালুকদার বলেন, কিটের ঘাটতি থাকায় রাজশাহী নগরে আপাতত র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। তবে রাজশাহী জেলার উপজেলাগুলোতে কিট থাকায় পরীক্ষা চলছে। তাঁরা কিটের চাহিদা ঢাকায় পাঠিয়েছেন। শিগগিরই কিট পাওয়ার আশা তাঁর।