সাম্প্রতিক সময়ে রেলে যে বিনিয়োগ হয়েছে, এর সুফল পেতে হলে রেলের কারখানাগুলোকে আধুনিকায়ন করতে হবে। তৈরি করতে হবে দক্ষ জনবল। আর তা না হলে যুগের পর যুগ বিদেশ থেকে ইঞ্জিন–কোচ কিনেই যেতে হবে। রেল নিজে কিছু তৈরি করতে পারবে না।
‘রেল কারখানার আধুনিকায়ন’ শীর্ষক এক অনলাইন আলোচনা সভায় এই অভিমত দিয়েছেন বক্তারা। মঙ্গলবার বিকেলে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এবং ওয়ার্ক ফর আ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্ট এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
রেলের ইঞ্জিন ও কোচ মেরামতের কারখানাগুলোর গুরুত্ব তুলে ধরে সভায় বলা হয়, গত এক যুগে ৩৩০ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মাণ করা হয়েছে। ১১৭টি নতুন ট্রেন চালু হয়েছে। ১০২টি বন্ধ স্টেশন চালু করা হয়েছে। রেলের প্রধান তিনটি কারখানা রয়েছে। এগুলো হচ্ছে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা, পার্বতীপুর কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানা এবং পাহাড়তলী ক্যারেজ ও ওয়াগন কারখানা। এসব কারখানায় প্রায় ৬০ শতাংশ জনবল ঘাটতি রয়েছে। পাশাপাশি বাজেট ঘাটতি, যন্ত্রাংশের স্বল্পতা, আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাব এবং অনিরাপদ কাজের পরিবেশের কারণে কারখানাগুলোর পুরোপুরি সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খান। আলোচনায় অংশ নেন রেলের চিফ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার (পূর্ব) বোরহান উদ্দিন, ওয়ার্ক ফর আ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী, রেলের পার্বতীপুর ডিজেল শপের মিস্ত্রি কামাল উদ্দিন খান, সৈয়দপুর রেল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আবদুর রাজ্জাক। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রকল্প কর্মকর্তা আতিকুর রহমান।
মূল প্রবন্ধে আতিকুর রহমান বলেন, পাহাড়তলী ক্যারেজ ও ওয়াগন কারখানায় ৪৩১টি মেশিনের মধ্যে ২০০টির বেশি মেয়াদোত্তীর্ণ এবং সৈয়দপুর কারখানায় ৭৮৭টি মেশিনের মধ্যে ৪৪৮টি ৬০ বছরের পুরোনো। রেলের মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী ৩০ বছরে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের জন্য ৪৭৪টি ইঞ্জিন, ৫ হাজার ১৪৩টি কোচ ও ৬ হাজার ৪৩৯টি ওয়াগন কেনা হবে। এসব ইঞ্জিন–কোচ সচল রাখতে নতুন কারখানা স্থাপন ও বর্তমান কারখানা উন্নয়নের বিকল্প নেই।
রেলের বোরহান উদ্দিন বলেন, ঢাকার কমলাপুরের কারখানাটি নারায়ণগঞ্জে স্থানান্তর করে সম্প্রসারণ এবং রাজবাড়ীতে একটি বড় কারখানা নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, কারখানার গুরুত্বপূর্ণ কর্মীদের অন্তত ১০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকা দরকার। কিন্তু মাঝখানে দীর্ঘদিন নিয়োগ বন্ধ থাকায় অভিজ্ঞরা অবসরে চলে গেছেন। এখন নতুন নিয়োগ শুরু হলেও সমস্যা মিটছে না।