কাঁচপুর দখলের ঘোষণা থেকে সরে এলেন শামীম ওসমান
কাঁচপুর দখলে রাখার ঘোষণা থেকে সরে এলেন আওয়ামী লীগের বিতর্কিত নেতা ও সাবেক সাংসদ শামীম ওসমান। গতকাল বুধবার নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাবে আয়োজিত জরুরি সংবাদ সমেঞ্চলনে তিনি বলেন, লাঠি নয়, মাথায় সাদা কাপড় পরে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নেবেন তাঁর কর্মীরা। এর আগে তিনি দখলের ঘোষণা দিলে বিএনপি পাল্টা প্রতিরোধের ঘোষণা দেয়।
শামীম ওসমান দাবি করেন, একটি বিশেষ পত্রিকা ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল তাঁর বক্তব্যকে বিকৃত করে প্রচার করছে।
শামীম ওসমান আর বলেন, ‘২৫ অক্টোবর নিয়ে সারা দেশে টান টান উত্তেজনা চলছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব শুধু সরকারের নয়, আমাদেরও। সেদিন কাঁচপুরে আমাদের অবস্থান হবে শান্তিপূর্ণ। আমি নিজে সকাল ১০টা থেকে কাঁচপুরে অবস্থান করব। বিএনপি, জামায়াত, হেফাজত কাউকে আটকানো হবে না। গজারির লাঠি নিয়ে কথা ওঠায় তা বাদ দিয়ে এখন শুধু মাথায় সাদা পতাকা বাঁধা থাকবে।’
খালেদা জিয়াকে জাতির নেত্রী আখ্যায়িত করে শামীম ওসমান বলেন, মিছিল-সমাবেশ করা রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক অধিকার। তাই বিএনপি মিছিল-সমাবেশ করলে তাদেরকে বাধা দেওয়া হবে না। ৮ অক্টোবর থেকে শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশ থেকে ২৫ অক্টোবর শুক্রবার ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ কাঁচপুর সেতু দখলে নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘সেদিন বিএনপি-জামায়াত-হেফাজত-আইভী-রাব্বিদের যাকে পাওয়া যাবে, তাঁকেই পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে দিতে হবে। আপনারা গজারির লাঠির মাথায় সাদা পতাকা বেঁধে নেবেন। সাংবাদিক দেখলে সাদা পতাকা ওপরে তুলে ধরবেন। আর বিএনপি-জামায়াত-হেফাজত-আইভী-রাব্বিদের দেখলে পতাকা নিচে নামিয়ে গজারির লাঠি দিয়ে পেটাবেন।’
শামীম ওসমানের এই বক্তব্যের অডিও, ভিডিও রেকর্ড গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে আছে। এ ছাড়া শামীম ওসমানের বক্তব্য বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। আগের প্রচারিত বক্তব্যের ব্যাপারে গণমাধ্যমে কোনো প্রতিবাদপত্র না পাঠানোর ব্যাপারে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করলে শামীম ওসমান বলেন, ‘প্রতিবাদপত্র পাঠাইনি। তবে প্রতিবাদ জানাতেই সংবাদ সমেঞ্চলন করছি।’
সংবাদ সমেঞ্চলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহীদ, জেলা যুলীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ্ নিজাম, জেলা ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি চন্দন শীল, ফতুল্লা থানার আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল্লাহ, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শিরিন আক্তার, নগর যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী মাহমুদা প্রমুখ।
এর আগে গত মঙ্গলবার সোনারগাঁ থানার বিএনপি ঘোষণা দেয়, শামীম ওসমান ২৫ অক্টোবর কাঁচপুর দখলে নেওয়ার যে ঘোষণা দিয়েছেন, তা তাঁর স্বপ্নই হয়ে থাকবে। ওই দিন বিএনপির হাজার হাজার নেতা-কর্মী কাঁচপুর সেতু এলাকা থেকে শামীম ওসমানকে বিতাড়িত করে রাজপথ দখলে রাখবেন।’
এদিকে জেলা বিএনপি বুধবার সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ২৫ অক্টোবর সিদ্ধিরগঞ্জের কাঁচপুর থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত তারা সমাবেশ করবে। এ সময় তাদেরকে বাধা দিলে প্রতিরোধ করা হবে। বুধবার বেলা দুইটায় সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় এলাকার একটি বাড়িতে জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর আলম খন্দকারের সভাপতিত্বে জেলা বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের এক জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।