করোনার ভ্যাকসিন নিয়েছেন বাংলাদেশের আজিজ
করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করার পাশাপাশি একে নির্মূল করার উপায় খুঁজছে বিশেষজ্ঞরা। বিভিন্ন দেশ ভ্যাকসিন তৈরি ও তার কার্যকারিতা পেতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে চীনের আবিষ্কৃত ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা বিভিন্ন দেশে করা হচ্ছে। বাংলাদেশে এখনো কোনো দেশের ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ না হলেও অনেক প্রবাসী স্বেচ্ছায় এতে অংশ নিচ্ছেন।
চট্টগ্রামের ছেলে সৈয়দ আবদুল আজিজ এমনই একজন। তিনি আরব আমিরাতে করোনার ভ্যাকসিন নিয়েছেন।
করোনা ভাইরাসের প্রকোপ শুরু হলে সৈয়দ আবদুল আজিজ আরব আমিরাতে নানান স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজে অংশ নিয়েছিলেন। এর মধ্যে দেশটিতে করোনা প্রতিরোধের জন্য ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগের খবর তিনি পান। এরপর নিজ ইচ্ছাতেই সেই ভ্যাকসিন নেন তিনি।
সৈয়দ আজিজ আমিরাতের দুবাইতে ব্যবসা করেন। দুবাই থেকে শারজাহ তে গিয়ে তিনি গত ১৬ আগস্ট সিনোফার্মের তৃতীয় ধাপের ভ্যাকসিন নেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিজের আগ্রহ থেকেই নিয়েছি। গত সপ্তাহে করোনাভাইরাসের আক্রান্ত কিনা সে পরীক্ষা করতে হয়েছে। তাতে নেগেটিভ এসেছে। এখন পর্যন্ত দেশটির ১৫ হাজার মানুষ স্বেচ্ছায় এ ট্রায়ালে অংশ নিয়েছেন। ট্রায়ালে অংশ নিতে হলে আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। পুরোপুরি ফিট যারা তারাই ট্রায়ালের এ সুযোগ পাচ্ছে।’
গালফ নিউজ জানিয়েছে, গত ১৭ জুলাই করোনাভাইরাস নির্মূলে ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থানরত বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের ওপর ‘তৃতীয় ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল’ শুরু হয়েছে। এখানে বসবাসকারীরা করোনাকে পরাজিত করতে এ ট্রায়ালে অংশ নিতে বেশ সাড়া দিচ্ছে। ভ্যাকসিনটি চীনের ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সিনোফার্ম চায়না ন্যাশনাল বায়োটেক গ্রুপের আবিষ্কৃত। এখানে অংশ নেওয়া স্বেচ্ছাসেবীদের অবশ্যই ১৮-৬০ বছর বয়সী হতে হবে এবং অতীতে তাদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে চলবে না।
১৬ আগস্ট ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নিয়েছেন সৈয়দ। তিনি বলেন, ‘এর সাত দিন পর চিকিৎসকের কাছে চেকআপের জন্য যেতে হবে। আর ২১ দিন পর আরেকটি ডোজ দেওয়া হবে। তবে একটি চার্ট দেওয়া হয়েছে। এতে আমি কখন কী অনুভব করছি এবং চার বেলা শরীরের তাপমাত্রা লিখে রাখতে হবে। এ ছাড়া প্রতিদিন চিকিৎসক ফোন করে খোঁজ নিচ্ছেন। তারা পুরো সময় মনিটর করছে। এ ছাড়া কোনো ধরনের সমস্যা বোধ করলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসককে জানাতে হবে।’
সৈয়দ আবদুল আজিজের কয়েকজন আত্মীয়ও আরব আমিরাতে এই ট্রায়ালে অংশ নিয়েছেন। তারা এখন পর্যন্ত ভালো আছেন এবং নিজ নিজ আগ্রহ থেকে ভ্যাকসিন নিয়েছেন। আজিজ বলেন, ‘যখন জানতে পারলাম ভ্যাকসিনের ট্রায়াল হবে তখন রেজিস্ট্রেশন করি। তারপর ওরা যাচাই বাছাই করে সিলেক্ট করেছে। ভ্যাকসিন নিয়ে আগ্রহ ছিল। দেখি কী হয় নিলে। আর আমার দুই কাজিনও নিয়েছে। ওরা এখন পর্যন্ত সুস্থ আছে। তাতেও নিজের আগ্রহ বাড়ে। এটা আমার কাছে পজিটিভ একটি বিষয়ই মনে হয়েছে। টেস্টের সময় একটু নার্ভাস ছিলাম। এ ছাড়া আর কিছু মনে হয়নি। ইনজেকশনের মাধ্যমে এ ভ্যাকসিন শরীরে দেওয়া হয়।’