করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষা নিয়ে বিশৃঙ্খলা
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর রোগ শনাক্তকরণ পরীক্ষা বাড়াতে হিমশিম খাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা সরকারকে বলেছেন, করোনা সংক্রমণের গতি–প্রকৃতি বুঝতে এবং আক্রান্ত মানুষকে সেবা দিতে দৈনিক কমপক্ষে ১০ হাজার নমুনা পরীক্ষা দরকার। কিন্তু পরীক্ষা বাড়াতে গিয়ে জনবল, নমুনা সংগ্রহ, ল্যাব রক্ষণাবেক্ষণসহ নানা বিষয়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পরিকল্পনা ও সমন্বয়ের ঘাটতির কারণে এমন হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
জানুয়ারির শেষ থেকে দেশে করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষা শুরু করে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। রোগ শনাক্তকরণ পরীক্ষার প্রয়োজন বাড়তে থাকলেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পরীক্ষার আওতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়নি। পরীক্ষার পুরো নিয়ন্ত্রণ থাকে আইইডিসিআরের হাতে। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশসহ (আইসিডিডিআরবি) একাধিক প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দিতে কালক্ষেপণ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
অথচ করোনার বৈশ্বিক মহামারির শুরু থেকে রোগ শনাক্তকরণ পরীক্ষার ওপর জোর দিয়ে আসছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। দ্রুত রোগী শনাক্ত হলে সংক্রমণ পরিস্থিতি সামলে নেওয়া যায়।
গত ৩০ মার্চ থেকে সরকার দেশে ল্যাবরেটরি বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়। ১৭ এপ্রিল দেশে পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল ১৭টি। গত ১৮ দিনে আরও ১৬টি কেন্দ্রে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। বর্তমানে ৩৩টি পরীক্ষাকেন্দ্রে (ল্যাবরেটরি) করোনা শনাক্তের নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে সাভারের প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটসহ ঢাকা জেলায় ১৭টি কেন্দ্র। নারায়ণগঞ্জ ও ফরিদপুর জেলায় একটি করে পরীক্ষাকেন্দ্র রয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগে চারটি, খুলনা বিভাগে তিনটি, রংপুর ও রাজশাহী বিভাগে দুটি করে, বরিশাল, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগে একটি করে পরীক্ষাকেন্দ্র রয়েছে।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৫ হাজার ৭১১ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়লেও মান নিয়ে প্রশ্ন আছে। অনেক কেন্দ্রে নমুনা বাদ দিতে হচ্ছে। দক্ষ টেকনোলজিস্টের অভাবে নমুনা সংগ্রহে ত্রুটি থেকে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতে সংক্রমণের ঝুঁকি ও রোগীর দুর্ভোগ—দুই–ই বাড়ছে।
দেশে করোনা পরীক্ষার ল্যাবরেটরিগুলোর কাজের সমন্বয়ের দায়িত্বে আছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, পরীক্ষা বাড়াতে আপ্রাণ চেষ্টা করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এখন বুথের মাধ্যমে নমুনা সংগ্রহ করা হবে। ঢাকা শহরের সব এলাকার মানুষের জন্য বুথ খোলা হবে অচিরেই।
অনিশ্চিত সেবা
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, দেশে মোট শনাক্ত রোগীর ৫৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ ঢাকা মহানগরের। আর মোট রোগীর ৮৩ দশমিক ৩১ শতাংশই ঢাকা বিভাগে। সে ক্ষেত্রে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এসব এলাকায় রোগী শনাক্ত জরুরি। কিন্তু অতি সম্প্রতি ঢাকা ও ঢাকার আশপাশের মানুষের পরীক্ষাসম্পর্কিত সেবা হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেছে আইইডিসিআরে। প্রতিষ্ঠানটি বাড়িতে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করত। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, ঢাকা শহরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তারা নমুনা সংগ্রহ করবে না। আনুষ্ঠানিকভাবে সেবা বন্ধের ঘোষণাও তারা দেয়নি। মানুষ এখন হয়রান হচ্ছে।
রাজধানীর জুরাইন এলাকার এক দম্পতির করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় গত ১৯ এপ্রিল। স্বামীর বয়স ৬৫ ও স্ত্রীর ৫৫ বছর। বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন তাঁরা। এখন তাঁদের শরীরে ভাইরাস আছে কি না, তা নিশ্চিত হতে ৩ মে বাসায় এসে আবার নমুনা সংগ্রহ করার কথা ছিল। কিন্তু আইইডিসিআরে যোগাযোগ করা হলে তাঁদের জানানো হয়, বাসা থেকে আর নমুনা সংগ্রহ হবে না। নিকটস্থ পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে নমুনা দিয়ে আসতে হবে।
>নমুনা সংগ্রহে বুথ স্থাপন, জনবল নিয়োগ, প্রশিক্ষণসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ দ্রুত নেওয়ার তাগিদ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের।
ওই দম্পতির জামাতা প্রথম আলোকে বলেন, যাঁরা ইতিমধ্যে করোনা পজিটিভ, তাঁদেরকেও সবার সঙ্গে লাইনে দাঁড়িয়ে নমুনা দিতে হবে। যদি তাঁদের মাধ্যমে অন্যরা আক্রান্ত হন, তার দায় কে নেবে? আবার তাঁরা সুস্থ হয়েছেন কিন্তু নমুনা দিতে গিয়ে সেখান থেকে পুনরায় আক্রান্ত হবেন না, তার নিশ্চয়তা কী?
রাজধানীর নিকেতনের এক নারী ব্যাংক কর্মকর্তা জানতে পারছেন না, তিনি করোনামুক্ত হয়েছেন কি না। তাঁর করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় এপ্রিলের মাঝামাঝি। ২৯ এপ্রিল আইইডিসিআরের স্বাস্থ্যকর্মীরা বাসায় এসে নমুনা নেওয়ার সময় বলেছিলেন, দ্রুত ফল জানানো হবে। ব্যাংক কর্মকর্তার পরিবার থেকে প্রতিদিন আইইডিসিআরে ফোন করা হয়। আইইডিসিআরের কর্মীরা দিচ্ছি–দেব করে সময় পার করেন। এরপর ৩ মে আইইডিসিআর জানায়, তারা আর এ সেবা দেবে না।
এ রকম ভুক্তভোগীরা কোথায় যাবেন, তা বুঝতে পারছেন না। অনেকেই গণমাধ্যমে ফোন করছেন সঠিক তথ্য জানার জন্য। গতকাল প্রথম আলোর পক্ষ থেকে আইইডিসিআরের সংশ্লিষ্ট নম্বরে ফোন করা হয়। আইইডিসিআর থেকে জানানো হয়, তারা আর বাড়ি বাড়ি গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করবে না। সংগৃহীত নমুনার ফলাফলের ব্যাপারে জানতে চাইলে লাইন কেটে দেওয়া হয়।
বাড়িতে সেবা দরকার
একজন গণমাধ্যমকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত মাসে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তিনি হাসপাতালে থাকার সময় তাঁর স্ত্রী, শিশুসহ আরও চারজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। তবে বাকি চারজনের চিকিৎসা বাড়িতেই হয়। ওই সাংবাদিক প্রথম আলোকে বলেছিলেন, আইইডিসিআরের চিকিৎসক ও কর্মীদের কাছ থেকে নিয়মিত সহায়তা পেয়েছিলেন ওই চারজন।
বয়স ও শারীরিক সমস্যার কারণে অনেকের পক্ষে সরকারি হাসপাতালে গিয়ে নমুনা দিয়ে আসা সম্ভব নয়। কারণ, নমুনা সংগ্রহে অনেক সময় লাগে। লম্বা সারির কথা ইদানীং অনেকেই শুনেছেন। একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের এই অঞ্চলের প্রধান কর্মকর্তার স্ত্রী করোনায় আক্রান্ত। তিনি প্রথম আলোর কাছে জানতে চেয়েছেন, সরকারের কোন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে স্ত্রীর সংক্রমণ চলে গেছে কি না, তা নিশ্চিত হতে পারবেন।
জনস্বাস্থ্যবিদ ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী কমিটির সদস্য মুশতাক হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সেবার ব্যাপারে মানুষের সঠিক তথ্য দরকার। মহামারির সময় এ কথা আরও বেশি করে সত্য। আইইডিসিআর পরীক্ষা–সংশ্লিষ্ট সেবা দিত। আবার তারা ফোনের মাধ্যমেও চিকিৎসাসেবা দিত। এখন মানুষ কোন হাসপাতাল বা কেন্দ্র থেকে এসব সেবা পাবে, তা জানিয়ে দেওয়া জরুরি।
দক্ষ টেকনোলজিস্টের সংকট
বর্তমানে যে পদ্ধতি (আরটিপিসিআর) ব্যবহার করে শনাক্তকরণের পরীক্ষা করা হচ্ছে, সেটি বেশ জটিল। অধিকাংশ কেন্দ্রে এই পরীক্ষা করার মতো দক্ষ টেকনোলজিস্টের সংকট রয়েছে। সংশ্লিষ্ট পেশাজীবী সংগঠন অভিযোগ করেছে, ১০ বছর ধরে এসব পদে নিয়োগ বন্ধ রেখেছে সরকার।
দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের গবেষণাগারে করোনা নমুনা পরীক্ষা শুরু হয়েছে গত ২৬ এপ্রিল। এই ল্যাবে টেকনোলজিস্ট রয়েছেন ৪ জন। জেলার সিভিল সার্জন আব্দুল কুদ্দুস প্রথম আলোকে বলেন, নমুনা পরীক্ষা করার ক্ষেত্রে প্রশিক্ষিত ও দক্ষ জনবলের অভাব রয়েছে। ল্যাবে নমুনা প্রসেসিং, মিক্সিং এবং পরীক্ষা করার জন্য প্রতিটি বিভাগে ৪ জন করে মোট ১২ জন টেকনোলজিস্ট প্রয়োজন।
রংপুর মেডিকেল কলেজের ল্যাবে প্রতিদিন দুই শিফটে ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। নমুনা সংগ্রহ করা হলেও দৈনিক গড়ে ২০০ থেকে ২৫০টি নমুনা জমে থাকছে। কলেজের অধ্যক্ষ নুরুন্নবী লাইজু বলেন, চারজন টেকনোলজিস্ট দিয়ে দুই শিফটে কাজ করা হয়, যা পর্যাপ্ত নয়। এক দিন পরপর দুজন কাজ করেন। দুই শিফটে কমপক্ষে ৮ জন টেকনোলজিস্ট প্রয়োজন।
বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ল্যাবে টেকনোলজিস্ট ৮ জন। ল্যাবের দায়িত্বপ্রাপ্ত মাইক্রোবায়োলজিস্ট আকবর কবীর বলেন, অন্তত ১৪ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট দরকার।
সংগ্রহ করা নমুনা নষ্ট হচ্ছে
বরিশালে প্রতিদিন ১৬০ থেকে ১৭০টি নমুনা পাওয়া যাচ্ছে। ল্যাবের দায়িত্বপ্রাপ্ত মাইক্রোবায়োলজিস্ট আকবর কবীর বলেন, মাঠপর্যায়ে দক্ষ সংগ্রহকারী না থাকায় অনেক নমুনা বাদ দিতে হচ্ছে। নমুনা সংগ্রহের জন্য ফাইবার ও ভিটিএম টিউব নেই। এখন কটন স্টিক দিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। এতে মাঠপর্যায় থেকে সংগ্রহ করা নমুনা বাদ দেওয়ার সংখ্যা বাড়ছে।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) করোনা শনাক্তের পরীক্ষা শুরু হয় গত ১৭ এপ্রিল। মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইকবাল কবির প্রথম আলোকে বলেন, মাঠপর্যায়ে সংগ্রহ করা নমুনায় বেশ সমস্যা থাকে। কাজ শুরুর আগেই কমপক্ষে ৫ শতাংশ নমুনা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
ঢাকার একটি বেসরকারি ল্যাবের একজন নির্বাহী কর্মকর্তা বলেছেন, দুটি জেলা থেকে আসা নমুনা তাঁরা ব্যবহার করতে পারছেন না। তাঁরা ওই জেলার নমুনার ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে জানিয়েছেন। অন্য একটি সরকারি ল্যাবরেটরির প্রধান ব্যক্তি বলেছেন, ‘নমুনার মান নিয়ে আর কিছুই করার নেই। কারণ, মানসম্পন্ন নমুনা সংগ্রহের লোক মাঠে নেই।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা বলেন, কিছু নমুনা বাদ পড়া একেবারে অসম্ভব কিছু নয়। নমুনার পরিচিতিতে অস্পষ্টতা বা ভুল থাকলে নমুনা বাদ দিতে হয়। তবে এসব ত্রুটি দূর করার চেষ্টা চলছে।
পরীক্ষা করেও কুলানো যাচ্ছে না
সিলেটে ৭ এপ্রিল থেকে পরীক্ষা শুরু হয়। প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০টি নমুনা আসছে। দৈনিক দুই শিফটে ১৮৮টি পরীক্ষা করা হচ্ছে। বাকিগুলো জমা রয়ে যাচ্ছে। সিলেটের পরীক্ষাগারে চাপ থাকায় ৬৬৭টি নমুনা ঢাকায় পাঠিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে।
ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) গত ১ এপ্রিল থেকে নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। শুরুতে একটি আরটিপিসিআর যন্ত্রে এক শিফটে দৈনিক ৯৪ জনের পরীক্ষা করা হতো। বর্তমানে দুটি যন্ত্রে দুই শিফটে ৩৭৬ জনের পরীক্ষা করা হচ্ছে।
বিএসএমএমইউর ভাইরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান সাইফুল্লাহ মুন্সী প্রথম আলোকে বলেন, দুটি মেশিনে দিনে চারবার কোনো দিন পাঁচবার পরীক্ষা করা হচ্ছে। এরপরেও ভিড় সামলানো যাচ্ছে না। পরীক্ষা আরও বাড়াতে হলে দক্ষ জনবল ও নতুন যন্ত্র লাগবে।
জীবাণুমুক্ত করতে বন্ধ থাকছে পরীক্ষা
সংক্রমণের আশঙ্কায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) ল্যাবে গত পাঁচ দিন কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি। ল্যাব জীবাণুমুক্ত করার জন্য বন্ধ রাখা হয় পরীক্ষা। এই ল্যাবে যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা ও নড়াইল জেলা থেকে সংগ্রহ করা নমুনা পরীক্ষা করা হয়।
যবিপ্রবির মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ও জিনোম সেন্টারের সহযোগী পরিচালক অধ্যাপক ইকবাল কবির প্রথম আলোকে বলেন, যাঁরা নমুনা পরীক্ষার কাজটি করেন, তাঁরা সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকেন। তাঁদের নিরাপত্তার জন্য ল্যাবটি ব্লিচিং পাউডার, অ্যালকোহল দিয়ে পরিষ্কার করা হয়েছে।
কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে ২৫ এপ্রিল থেকে নমুনা পরীক্ষা শুরু হয়। তবে ল্যাব রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গত দুই দিন কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি। সংক্রমণের ঘটনা আইইডিসিআরের ল্যাবেও ঘটেছিল। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আরও সতর্কতা, প্রশিক্ষণ ও তদারকি দরকার।
সার্বিক বিষয়ে মন্তব্য জানার জন্য গতকাল তিনজন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা হয়। তাঁদের দুজন সরকার গঠিত বিভিন্ন কমিটিতে আছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই দুই বিশেষজ্ঞের একজন বলেন, নমুনা সংগ্রহে বুথ স্থাপন, জনবল নিয়োগ, প্রশিক্ষণসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ দ্রুত নিতে হবে। অন্যজন বলেন, সংক্রমণের এই স্তরে সময় নষ্ট না করে পরিস্থিতি সামলাতে যত দূর সম্ভব সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
(প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন সংশ্লিষ্ট জেলার নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিরা)