পাঁচ মাস হয়ে গেল। এখনো মেয়ে নাছিমা আক্তারের খোঁজ পাননি রাশিদা বেগম। ডিএনএ পরীক্ষার জন্য রক্ত দিয়ে এলেও কোনো আশার আলো দেখছেন না। মেয়ের কথা মনে করে এখনো প্রতিদিন তিনি কিছু সময় কাটান রানা প্লাজার সামনে।
রাশিদা বেগমের মতো আরও অনেকে সেখানে ভিড় করেন। তাঁদের কেউ সাভারের রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় স্বজন হারিয়েছেন, কেউ বা আহত হয়েছেন, আবার কারও বা স্বজন এখনো নিখোঁজ। গত ২৪ এপ্রিল সকালে কয়েক হাজার মানুষ ভেতরে থাকা অবস্থায় ধসে পড়ে রানা প্লাজা। ওই ঘটনায় নিহত হন এক হাজার ১৩২ জন মানুষ, আহত হয়েছেন সহস্রাধিক। হতাহত ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের বেশির ভাগই পোশাকশ্রমিক। আজ ২৪ সেপ্টেম্বর এ ঘটনার পাঁচ মাস পূর্ণ হচ্ছে।
সরকারি হিসাবে, ভবনধসের পর ঘটনাস্থল থেকে দুই হাজার ৪৩৮ জনকে জীবিত এবং এক হাজার ১১৫ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। জীবিত উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ১৭ জন পরে হাসপাতালে মারা যান। আটকে পড়া ব্যক্তিদের উদ্ধার করতে গিয়ে মারা যান দুজন স্বেচ্ছা উদ্ধারকর্মী।
নিহত শ্রমিক ও উদ্ধারকর্মী মিলিয়ে এক হাজার ১৩৪ জনের লাশের মধ্যে ৮৪৪টি লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ২৯১টি শনাক্ত না হওয়া লাশ দাফন করা হয়েছে রাজধানীর জুরাইন কবরস্থানে।
জাতীয় ফরেনসিক ও ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরির প্রধান শরীফ আকতারুজ্জামান জানান, মোট ৩২১টি লাশের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেছে ল্যাবরেটরি। ৩২১ লাশের মধ্যে আবার কিছু লাশ ডিএনএ নমুনা দেওয়ার পর শনাক্ত হলে জেলা প্রশাসন স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে। বাকি ২৯১টি লাশ জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
ল্যাবরেটরি সূত্র জানায়, দাবিদারদের দেওয়া ডিএনএ নমুনার সঙ্গে লাশগুলো থেকে সংগৃহীত ডিএনএ নমুনা মিলিয়ে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। তবে এত ডিএনএ নমুনা মেলানোর জন্য যে সফটওয়্যার প্রয়োজন, তা এখন তাঁদের হাতে নেই। যুক্তরাষ্ট্র থেকে কয়েক দিনের মধ্যে সেটি পাওয়ার কথা রয়েছে।