একনজরে বিশ্ব শিশু দিবস
১৯৮৯ সালের ২০ নভেম্বর বিশ্বনেতারা শিশু অধিকার বিষয়ে জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ বাস্তবায়ন করেন। এটি পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যাপকভাবে অনুমোদিত মানবাধিকার চুক্তি।
শিশু অধিকার সনদের আলোকে শিশুদের জন্য এবং শিশুদের নিয়ে বিশ্বব্যাপী ইউনিসেফ বিশ্ব শিশু দিবস পালন করে। এই দিনে ইউনিসেফ শিশুদের সবচেয়ে বড় সমস্যাগুলো সমাধানে সমর্থন আদায় করে, শিশু অধিকার বিষয়ে সচেতনতা বাড়ায় এবং প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহ করে।
ইউনিসেফের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে উদ্যাপিত এই বিশ্ব শিশু দিবসে, শিশুরা তাদের জীবনকে প্রভাবিত করে এমন বিষয়গুলো নিয়ে সোচ্চার হবে এবং তাদের অধিকারের সমর্থনে প্রাতিষ্ঠানিক দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। কারণ, আজও প্রতিটি শিশু তাদের পূর্ণ শৈশব উপভোগ করতে পারে না। অনেকের শৈশবই ক্ষণস্থায়ী।
কোভিড-১৯-এর প্রভাব শিশুদের শিক্ষা, পুষ্টি ও সার্বিক কল্যাণের ক্ষেত্রে অপূরণীয় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ২০২০ সালের প্রথম দিকে এই মহামারি শুরুর পর থেকে স্কুল বন্ধের কারণে বাংলাদেশের ৩ কোটি ৭০ লাখ শিশু এবং সমগ্র এশিয়া মহাদেশের প্রায় ৮০ কোটি শিশুর শিক্ষা ব্যাহত হয়েছে।
ক্রমবর্ধমান দারিদ্র্য, বৈষম্য, সংঘাত, জলবায়ু বিপর্যয় এবং কোভিড-১৯-এর মতো জরুরি স্বাস্থ্য পরিস্থিতি বিশ্বের সবচেয়ে কম বয়সীদের মধ্যে একটি চলমান পুষ্টিসংকট তৈরি করছে। বাংলাদেশে ৬-২৩ মাস বয়সী প্রতি তিনজনের মধ্যে মাত্র একজন শিশুকে ন্যূনতম সুপারিশকৃত পুষ্টি দেওয়া যাচ্ছে।
২০১৩ সালে বাংলাদেশে ১৭ লাখ শিশু শ্রমে নিয়োজিত ছিল। বিশ্বব্যাপী শিশু শ্রমিকের সংখ্যা পৌঁছেছে ১৬ কোটিতে—গত ৪ বছরেই ৮৪ লাখ শিশু যোগ হয়েছে। কোভিড-১৯-এর প্রভাবের কারণে আরও লক্ষাধিক শিশু ঝুঁকিতে আছে।
উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সত্ত্বেও বাংলাদেশ শিশুবিবাহের হার এখনও আশঙ্কাজনক। ৫১ শতাংশ নারী, যাঁদের বয়স বর্তমানে ২০-২৪ বছর, তাঁদের বিয়ে হয়েছিল শিশু বা বাল্যকালে। চলতি দশকের শেষে বিশ্বব্যাপী এক কোটি অতিরিক্ত শিশুবিবাহ হতে পারে, যা এই প্রথা বন্ধে চলমান অগ্রগতির প্রতি হুমকিস্বরূপ।
সরকার, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজের নেতৃস্থানীয়রা শিশু অধিকারের ক্ষেত্রে তাদের প্রতিশ্রুতি অনতিবিলম্বে পূরণ করবে, এটিই শিশুদের প্রত্যাশা। বড়দের নিশ্চিত করতে হবে যেন প্রতিটি শিশুই তাদের পূর্ণ অধিকার ভোগ করে।