এক ফ্রেমে দুই প্রার্থী
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাদারীপুর–২ ও ৩ আসনের একটি অংশে আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থী একই ফেস্টুন টাঙিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন। মাদারীপুরের মোস্তফাপুর এলাকার সড়ক বিভাজকের ওপর এই অভিনব প্রচারণার দেখা মেলে।
যৌথভাবে ফেস্টুনে প্রচার চালানো এই দুই প্রার্থী হলেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান এবং প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ।
স্থানীয় লোকজন বলছেন, নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর পর থেকেই সড়ক বিভাজকে এই ধরনের প্রচারণা মানুষের মনে কৌতূহলের জন্ম দেয়। মূলত, মাদারীপুর-২ আসনের রাজৈর উপজেলা ও সদরের একটি অংশে নৌমন্ত্রী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অন্য অংশটি পড়েছে মাদারীপুর-৩ আসনে। সদরের সঙ্গে রাজৈরের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা এই মোস্তফাপুর। ফলে, সেখানে দুই প্রার্থী এমন যৌথ প্রচারের কৌশল নিয়েছেন।
মাদারীপুর আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র প্রথম আলোকে জানায়, এবার আওয়ামী লীগ থেকে প্রথমবারের মতো আবদুস সোবহান গোলাপ প্রার্থী হয়েছেন। আর শাজাহান খান ছয়বারের সাংসদ। আবদুস সোবহানের আসনে গতবারের সাংসদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এবারও প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। আলোচনায় ছিলেন সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেনও।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা প্রথম আলোকে বলেন, বাহাউদ্দিন নাছিমের সঙ্গে শাজাহান খানের রাজনৈতিক দূরত্ব রয়েছে। ফলে, গোলাপের সাংসদ হওয়ার পেছনে শাজাহান খান ভূমিকা রেখেছেন বলে এলাকায় আলোচনা রয়েছে। একই ফেস্টুনে যৌথভাবে প্রচার দুজনের মধ্যে ভালো সম্পর্কের ইঙ্গিত।
গতকাল বুধবার দুপুরে মোস্তফাপুর এলাকার একটি চায়ের দোকানে কথা হয় চাঁপাতলী গ্রামের আবদুল হাই জমাদ্দারের সঙ্গে। নিজের ষাট-পঁয়ষট্টি বছরের জীবনে এমন ধরনের পোস্টার-ফেস্টুন তিনি দেখেননি বলে দাবি করেন।
আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ এই সমর্থকের কণ্ঠে এবারের প্রার্থী সম্পর্কে কিছুটা খেদ ঝরল। তিনি বলেন, ‘ভোট নৌকায়ই দিমু। সেদিনের পোলাপাইন প্রোগ্রামে বক্তৃতা দেয়, কিন্তু তৃণমূলে থাকা মোরা কোনো দাম পাই না।’
আবদুল হাই জমাদ্দারের মন্তব্য প্রসঙ্গে খোঁজ নিতে গিয়ে জানা যায়, তিনি মোস্তফাপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রব খানের অনুসারী। ওই আসনের সাবেক সাংসদ আবুল হোসেনের সঙ্গে রব খানের ভালো সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি কোনো একটি অনুষ্ঠানে রব খানকে বক্তৃতা দিতে দেওয়া হয়নি।
অবশ্য, আলোচনার একপর্যায়ে পাশ থেকে অপর একজন বলে উঠলেন, ‘উনি (আবদুস সোবহান গোলাপ) তো সময় পায় নাই। সবার সঙ্গে যোগাযোগ হয়ে ওঠেনি।’
এ সম্পর্কে মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘দলের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের গ্রুপিং থাকলেও নির্বাচনে সবাই নৌকার পক্ষে কাজ করছে, এটাই তার প্রমাণ। মোস্তফাপুর এলাকাটি শহরে ঢোকার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু। এটা দলের পক্ষ থেকে করা হয়েছে।’