অভিমত
এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের জন্য খারাপও হতে পারে
গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাব এবং এই বাহিনীর সাবেক-বর্তমান সাতজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা কর্মকর্তাদের মধ্যে র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ এবং র্যাবের বর্তমান মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন রয়েছেন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার বাংলাদেশি এই কর্মকর্তাদের সঙ্গে চীন, মিয়ানমার ও উত্তর কোরিয়ার কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানের ওপর একই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ওয়াশিংটন। এই প্রথম বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞা এবং এর সম্ভাব্য ফলাফল নিয়ে প্রথম আলোকে অভিমত দিয়েছেন ওয়াশিংটনের উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশীয় বিশেষজ্ঞ মাইকেল কুগেলম্যান
যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তে বোঝা যাচ্ছে, বাংলাদেশ নিয়ে ওয়াশিংটনের আর ধৈর্য ধরার সময় নেই। তারা আর বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা মেনে নেবে না। এই ঘটনা ঢাকার জন্য ভাবমূর্তির ক্ষেত্রে বড় এক ধাক্কা। সেটা শুধু একটি গুরুত্বপূর্ণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞার জন্যই নয়, এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ এখন নিজেদের চীন, উত্তর কোরিয়া ও মিয়ানমারের কাতারে দেখবে। এসব দেশের বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ। এই কাতারে আসাটা ভালো কোনো বিষয় নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিশেষ বাহিনীকে নিশানা করা এবং কপটতা করার অভিযোগ উঠবে। এ ক্ষেত্রে পাকিস্তান ও ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা উঠে আসবে।
চূড়ান্তভাবে আমার কাছে মনে হচ্ছে, ওয়াশিংটন এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে নিজেদের স্বার্থরক্ষার জন্য তাদের আর বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ থেকে বিরত থাকার দরকার নেই। তারা আরও জোরালোভাবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে। এটা যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশের সম্পর্কের জন্য ভালো বিষয় নয়।
এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের জন্য খারাপও হতে পারে। বাইডেন প্রশাসন যদি বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পৃক্ততা কমিয়ে আরও বৈরী অবস্থান নেয়, তাহলে তা ঢাকাকে বেইজিংয়ের বলয়ে ঠেলে দিতে পারে। ইতিমধ্যে অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশের ওপর প্রভাব বাড়িয়েছে বেইজিং।