শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার প্রধান আসামি শিক্ষার্থী র‌্যাবের হেফাজতে

সাভারে হাজী ইউনুছ আলী কলেজের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় কলেজের সামনে মানববন্ধন করছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। আশুলিয়া, সাভার, ২৯ জুনছবি: শামসুজ্জামান

সাভারের আশুলিয়ায় হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত স্কুলশিক্ষার্থীকে হেফাজতে নেওয়ার কথা জানিয়েছে র‌্যাব।

আজ বুধবার সন্ধ্যার পর গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়। র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখা থেকে পাঠানো এক বার্তায় র‌্যাব এ তথ্য জানিয়েছে। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে অভিযুক্ত স্কুলছাত্রের বাবাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার সহকারী পরিচালক আ ন ম ইমরান খান প্রথম আলোকে বলেন, অভিযুক্ত স্কুলছাত্রকে আজ সন্ধ্যার পর হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।

আশুলিয়া থানা–পুলিশ জানায়, গত শনিবার স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে গুরুতর আহত করে একই প্রতিষ্ঠানের দশম শ্রেণির এক ছাত্র (১৬)। গত সোমবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই শিক্ষক মারা যান।

গত রোববার ওই শিক্ষকের বড় ভাই অসীম কুমার সরকার আশুলিয়া থানায় ওই ছাত্রের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন। ঘটনার পরপরই বিভিন্ন স্থানে আসামি ধরতে অভিযান শুরু করে পুলিশ। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল মধ্যরাতে কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে ওই শিক্ষার্থীর বাবাকে গ্রেপ্তার করে আশুলিয়া থানা–পুলিশ।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. এমদাদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, কুষ্টিয়ার কুমারখালীর একটি ভাড়া বাসা থেকে মামলার প্রধান আসামির বাবাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতিবিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাস করার পর আশুলিয়ায় চিত্রশাইলে হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেছিলেন উৎপল কুমার সরকার।

মামলার এজাহার অনুযায়ী, শনিবার দুপুরে দশম শ্রেণির ওই শিক্ষার্থী ক্রিকেট খেলার স্টাম্প দিয়ে অতর্কিতভাবে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারের ওপর হামলা চালায়। প্রথমে সে শিক্ষকের মাথায় আঘাত করে এবং পরে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে। এ ছাড়া স্টাম্পের সুচালো অংশ দিয়ে পেটের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় উৎপলকে প্রথমে আশুলিয়া নারী ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নেওয়া হয়। আঘাত গুরুতর হওয়ায় পরে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার ভোরে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।