আপিল বিভাগে আবেদন করতে অনুমতি চান রন ও দিপু, শুনানি ৯ আগস্ট
বেসরকারি খাতের এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) দুজনকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে করা মামলায় সিকদার গ্রুপের এমডি রন হক সিকদার ও তাঁর ভাই দিপু হক সিকদার ২০ জুলাই হাইকোর্টে আগাম জামিন চেয়ে বিফল হন। বেআইনি আবেদন দাখিল ও আদালতের সময় নষ্ট করায় জরিমানা হিসেবে তাঁদের ১০ হাজার পিপিই দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে জমা দিতে সেদিন নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করার অনুমতি চেয়ে আবেদন (অ্যাফিডেভিট দায়েরে অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেছেন দুই ভাই।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রের তথ্য, ২০ জুলাই হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ ও পর্যবেক্ষণের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন (সিএমপি) করার অনুমতি চেয়ে দুই ভাইয়ের পক্ষে গতকাল সোমবার সংশ্লিষ্ট শাখায় একটি আবেদন (অ্যাফিডেভিট দায়েরের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করা হয়। আপিল বিভাগের ভার্চ্যুয়াল চেম্বার কোর্টে আজ মঙ্গলবার আবেদনটি ওঠে। চেম্বার কোর্টের বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান আবেদনটি আগামী ৯ আগস্ট আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দিয়েছেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ।
পরে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম প্রথম আলোকে জানান, দেশের বাইরে থেকে আগাম জামিন আবেদন চলে না বলে হাইকোর্ট তাঁদের (দুই ভাই) আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছিলেন। এই আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করার জন্য তাঁদের আইনজীবী মঙ্গলবার চেম্বার কোর্টে অনুমতি প্রার্থনা করেন। আদালত জানতে চান, দরখাস্তকারী আসামিরা কোথায়? জবাবে তাঁদের আইনজীবী জানান, দেশের বাইরে। তখন আদালত মামলা করার অনুমতি দেননি। পরে দরখাস্তকারীদের আইনজীবী আবেদনটি নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য আরজি জানান। চেম্বার বিচারপতি আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে ৯ আগস্ট শুনানির জন্য পাঠিয়ে দিয়েছেন।
গত ১৯ মে গুলশান থানায় ওই মামলা করে এক্সিম ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়, ৭ মে ঘটনাটি ঘটে। পুরো ঘটনাটি ৫০০ কোটি টাকা ঋণ প্রস্তাব নিয়ে। এই ঋণের বিপরীতে বন্ধকি সম্পত্তি পরিদর্শনের নামে এক্সিম ব্যাংকের দুই কর্মকর্তাকে ডেকে আনা হয়েছিল। এ সময় জামানত হিসেবে ওই সম্পত্তির বন্ধকি মূল্য কম উল্লেখ করেন ব্যাংকটির এমডি ও অতিরিক্ত এমডি। এরপরই গুলি ও মারধরের ঘটনা ঘটে। রন হক সিকদার ও দিপু হক সিকদার ব্যাংকটির এমডির কাছে একটি সাদা কাগজে জোর করে সই নেন। মামলার পর ২৫ মে দুই ভাই নিজেদের মালিকানাধীন আরঅ্যান্ডআর এভিয়েশনের একটি উড়োজাহাজকে ‘রোগীবাহী’ হিসেবে দেখিয়ে ব্যাংককের উদ্দেশে দেশ ছাড়েন।
আইনজীবী সূত্রের তথ্য, ওই মামলায় দুই ভাইয়ের আগাম জামিন চেয়ে ২ জুলাই ই-মেইলের মাধ্যমে হাইকোর্টের একটি ভার্চ্যুয়াল বেঞ্চে আবেদন জমা দেওয়া হয়। আবেদনের ওপর ২০ জুলাই হাইকোর্টে শুনানি হয়। এর আগে ১৯ জুলাই রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, তাঁরা সিঙ্গাপুরে থেকে আগাম জামিন চেয়েছেন। তবে ২০ জুলাই শুনানিতে আবেদনকারীদের আইনজীবী জানান, সব ধরনের অনুমতি নিয়ে তাঁরা ২৫ মে থাইল্যান্ডে যান, সেখানেই আছেন।