আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে গুরুত্ব পেয়েছে রোজিনা ইসলামকে গ্রেপ্তারের খবর
প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় সংবাদ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। ওয়াশিংটন পোস্ট, আল জাজিরা, দ্য হিন্দু, স্ট্রেইটস টাইমস, এবিসি নিউজ, বার্তা সংস্থা এএফপিসহ বেশ কিছু সংবাদমাধ্যম গুরুত্বের সঙ্গে এই সংবাদ প্রকাশ করেছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদন করে পরিচিতি পাওয়া একজন সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঔপনিবেশিক আমলের ‘অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট’ লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস-এপির বরাত দিয়ে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে ওয়াশিংটন পোস্ট।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে করোনাভাইরাস মোকাবিলা বিষয়ে প্রতিবেদনকারী শীর্ষস্থানীয় একজন প্রতিবেদককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় সাংবাদিকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। তাঁরা অবিলম্বে এই প্রতিবেদকের মুক্তি দাবি করেছেন।
কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আল জাজিরায় প্রতিবেদনের শিরোনাম করা হয়েছে, ‘রোজিনা ইসলাম: বাংলাদেশে কোভিড নিয়ে প্রতিবেদন করায় সাংবাদিক গ্রেপ্তার’।
প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনা মহামারির সময় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি নিয়ে খবর প্রকাশ করার পর রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে নথি চুরির অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ঘটনায় দেশটিতে শত শত সাংবাদিক বিক্ষোভ করেছেন।
সিঙ্গাপুরভিত্তিক দ্য স্ট্রেইটস টাইমস রোজিনা ইসলামকে নিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় ঘাটতির জায়গাগুলো তুলে ধরে প্রতিবেদন প্রকাশকারী একজন শীর্ষস্থানীয় সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার বাংলাদেশের শত শত সাংবাদিক বিক্ষোভ করেছেন।
এপির সংবাদ প্রকাশ করেছে এবিসি নিউজ, গালফ নিউজ, দ্য হিন্দু, সিয়াটল টাইমস। টাইমস অব ইন্ডিয়া এএফপির প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া এই সংবাদ প্রকাশ করেছে ডেইলি ফিনল্যান্ড।
এদিকে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংকটের মধ্যে সংবাদমাধ্যমের ওপর দমন-পীড়ন বেড়েছে।
রোজিনা ইসলামকে আজ শাহবাগ থানা থেকে বেলা ১১টার পর পর আদালতে নেওয়া হয়। শুনানি শেষে আদালত রিমান্ড আবেদন নাকচ করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আগামী বৃহস্পতিবার তাঁর জামিনের শুনানি হতে পারে।
পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য গতকাল সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে গেলে রোজিনা ইসলামকে সেখানে পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় আটকে রেখে হেনস্তা করা হয়। একপর্যায়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাত সাড়ে আটটার দিকে তাঁকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। রাত পৌনে ১২টার দিকে পুলিশ জানায়, রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে মামলা হয়েছে। তাঁকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।