রোহিঙ্গা গণহত্যা ও ধর্ষণ প্রমাণিত দাবি করে মিয়ানমার সরকারকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের মুখোমুখি করার আহ্বান জানানো হয়েছে। এক অনুষ্ঠানে বক্তারা বলছেন, ১১ জুনের মধ্যে বাংলাদেশ সরকার যেন মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে অভিযোগ উত্থাপন করে রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতার বিচারের দাবি জানায়।
গত বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে এক অনুষ্ঠান থেকে এ দাবি জানানো হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা সংসদ এবং কোস্টাল অ্যাসোসিয়েশন ফর সোশ্যাল ট্রান্সফরমেশন ট্রাস্টের (কোস্ট) যৌথ আয়োজনে রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যাযজ্ঞ নিয়ে নির্মিত ডকুমেন্টারি ফিল্ম প্রদর্শনী এবং ইফতার পার্টিতে এ আহ্বান জানানো হয়। রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতার দায়ে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপনের জন্য আন্তর্জাতিক আদালত ১১ জুন সময় বেঁধে দিয়েছে। আর এই সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশ সরকারকে বিষয়টিকে আন্তর্জাতিক আদালতে নিয়ে গিয়ে সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য পরামর্শ দিয়েছেন অনুষ্ঠানের বক্তারা।
বক্তারা বলেন, রোহিঙ্গা সংকট একটি আন্তর্জাতিক সংকট। এ সংকট বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিয়েছে। বিভিন্ন উৎস থেকে প্রমাণিত যে, মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংস গণহত্যা চালিয়েছে। এই নৃশংসতার দায়ে মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি করা সময়ের দাবি।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড রিসার্চ ইন আর্টস অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেসের (কারাস) পরিচালক অধ্যাপক শেখ আব্দুস সালাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক মুফিজুর রাহমান, বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ফাজরিন হুদা, নারী পক্ষের নির্বাহী সদস্য শিরিন হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টেলিভিশন, ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের খণ্ডকালীন প্রভাষক ও রোহিঙ্গাদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ফটোগ্রাফির কাজে নিয়োজিত সাইফুল হক অমি এবং কোস্টের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী প্রমুখ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কোস্টের সোশ্যাল মিডিয়ার সহকারী পরিচালক বারকা উল্লাহ মারুফ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা সংসদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাইফুল্লাহ সাদেক।
আলোচনা পর্ব শুরুর পূর্বে অনুষ্ঠানে রোহিঙ্গা নৃশংসতা নিয়ে নির্মিত তিনটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। ডকুমেন্টারিগুলোর ওপর উপস্থিত দর্শকেরা বিভিন্ন মতামত ব্যক্তও করেন। যেখানে সকলেই একবাক্যে বলেছেন, মিয়ানমার নৃশংসতা চালিয়েছে। এটি মানবাধিকার লঙ্ঘন, এটি ভয়াবহ অপরাধ। মিয়ানমারকে অবশ্যই আন্তর্জাতিক আদালতে নিয়ে গিয়ে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। ১১ জুন এর মধ্যে আন্তর্জাতিক আদালতে বিষয়টি উত্থাপনের যে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে তারও সমালোচনা করে তারা বলেন, ১১ জুনের মধ্যে কেন তুলতে হবে। তার মানে এর মধ্যে তোলা না গেলে তবে কি মিয়ানমারকে আর বিচারের মুখোমুখি করা হবে না, তবে বিশ্ববিবেকের কাছে কি মিয়ানমারকে আর অভিযুক্ত করা যাবে না?