আদালতে মিন্নির স্বীকারোক্তি, বাবার দাবি জোরজবরদস্তিতে
বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার ১ নম্বর সাক্ষী এবং তাঁর স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। শুক্রবার বরগুনার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মিন্নি এই জবানবন্দি দেন। এর পরই মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন দাবি করেছেন, নির্যাতন ও জোরজবরদস্তি করে তাঁর মেয়ের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।
বেলা দুইটার দিকে মিন্নিকে আদালতে নেওয়া হয়। আদালত থেকে তাঁকে বের করা হয় সন্ধ্যা সাতটার দিকে। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, রিমান্ডে নেওয়ার তিন দিনের মাথায় স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি।
এ দিকে সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে মিন্নির বাবা মোজ্জাম্মেল হোসেন আদালত প্রাঙ্গণে আসেন। এ সময় তিনি চিৎকার করে বলছিলেন, তাঁর মেয়ে অসুস্থ, গতকাল রাতে একজন পুলিশ সদস্য তাঁর বাসায় গিয়ে চিকিৎসাপত্র নিয়ে এসেছেন। আজকে জোর জবরদস্তি ও নির্যাতন করে তাঁর মেয়ের কাছ থেকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।
মোজ্জাম্মেল হোসেন আরও বলেন, ‘মেয়ে আমার জীবন বাজি রেখে তার স্বামীকে রক্ষা করতে গেছে। এটাই তার অপরাধ? এসব কিছুই শম্ভু বাবুর (স্থানীয় সাংসদ ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু) খেলা। তাঁর ছেলে সুনাম দেবনাথকে সেভ করার জন্য আমাদের বলি দেওয়া হচ্ছে।’
মিন্নিকে যখন আদালত থেকে বের করা হচ্ছিলেন, তখন তাঁকে পুলিশের দুজন নারী সদস্য ধরে ছিলেন। ছোট পিকআপে তোলার সময় মিন্নি কিছু একটা বলার জন্য উদ্যত হয়েছিলেন। কিন্তু পাশে থাকা নারী পুলিশ সদস্য এ সময় মিন্নির মুখ চেপে ধরেন।
এর আগে মঙ্গলবার মিন্নিকে প্রায় ১৩ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ এই মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখায়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির মিন্নিকে ৭ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পরের দিন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বরগুনা থানায় ১২ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। এ ছাড়া সন্দেহভাজন অজ্ঞাতনামা আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়।
এ মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। মামলার এজাহারভুক্ত ৬ আসামিসহ গতকাল পর্যন্ত ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১০ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।