শরীয়তপুরের তিনটি আসনের দুটিতে আওয়ামী লীগের নতুন প্রার্থী। তাঁরা হলেন শরীয়তপুর–১ (সদর-জাজিরা) আসনে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইকবাল হোসেন (অপু) এবং শরীয়তপুর-২ (নড়িয়া-সখীপুর) আসনে দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক (শামীম)। ভোটের মাঠে তাঁদের ব্যস্ত সময় কাটছে। প্রতিদিন বিভিন্ন স্থানে তাঁরা গণসংযোগ ও জনসভায় ভাষণ দিচ্ছেন। তাঁরা বর্তমান সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরছেন। পাশাপাশি তাঁরা এলাকার উন্নয়নে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।
শরীয়তপুর-১ (সদর-জাজিরা) আসনে ইকবাল হোসেনসহ প্রার্থী রয়েছেন ছয়জন। তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী সাবেক সাংসদ ও দলটির জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সরদার নাসির উদ্দিন (কালু)। দেশের বৃহৎ প্রকল্পগুলোর মধ্যে পদ্মা সেতু প্রকল্প অন্যতম। এ প্রকল্পের একটি বড় অংশ রয়েছে জাজিরায়। পদ্মা সেতু ঘিরে সরকারি-বেসরকারি নানা উন্নয়ন কার্যক্রম চলছে। ইকবাল হোসেনের প্রচারণায় থাকছে পদ্মা সেতু নির্মাণের কথা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে শহরের বাড়ি থেকে বের হন ইকবাল হোসেন। জাজিরা উপজেলা সদর, কাজিরহাট বন্দরে গণসংযোগ করেন তিনি। পরে দুপুরে পূর্ব নাওডোবা শাহ আলম মার্কেটে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত পথসভায় বক্তব্য দেন। বিকেলে জাজিরার রুপবাবুর হাটে নাওডোবা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে জনসভায় যোগ দেন।
ইকবাল হোসেন বলেন, পদ্মা সেতু এখন আর স্বপ্ন নয়; বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। শেখ হাসিনার সাহসী পদক্ষেপে নিজস্ব অর্থায়নে সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে। সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হলে এ অঞ্চলের অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটবে। বিষয়টি ভোটাররা বুঝছে পারছেন। সেতু ঘিরে সড়ক যোগাযোগ, শিল্পকারখানা, অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণ করা হবে।
শরীয়তপুর-২ (নড়িয়া-সখীপুর) আসনে এনামুল হকসহ প্রার্থী ছয়জন। তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির জেলা কমিটির সভাপতি সফিকুর রহমান (কিরন)। গত পাঁচ বছরে নড়িয়ায় গৃহহীন হয়েছে অন্তত ২৫ হাজার পরিবার। এ বছর ভাঙনে গৃহহীন হয়েছে ছয় হাজারের বেশি পরিবার। ভাঙন চলাকালে এলাকায় এনামুল হক তৎপর ছিলেন। তাঁর মায়ের নামে প্রতিষ্ঠিত বেগম আশ্রাফুন্নেছা ফাউন্ডশনের উদ্যোগে চার হাজার পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা ও অর্থ সহায়তা দিয়েছেন। এসব বিষয় তুলে ধরে তিনি ভোটারদের সমর্থন চাইছেন। নড়িয়া-সখীপুরের একটি বিরাট অংশ জুড়ে রয়েছে চরাঞ্চল। চরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও সড়ক যোগাযোগের উন্নয়ন করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তিনি।
এনামুল হক গতকাল সকালে সখীপুর বাজারে গণসংযোগ করেন। দুপুরে তিনি আওয়ামী লীগের নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির সঙ্গে সভা করেন। এরপর চরভাঘায় কর্মী–সমাবেশে যোগ দেন। বিকেলে তিনি নড়িয়া পৌরসভার ঘোষপাড়ায় হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
এনামুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘পদ্মা সেতু ঘিরে নড়িয়া-সখীপুরে ব্যাপক উন্নয়নের মহাপরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। আমরা সেসব কথা ভোটারদের কাছে বলছি। আওয়ামী লীগ জয়ী হলে উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। আর পদ্মা নদীর ভাঙন এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের কান্নার কারণ। আমি নড়িয়ার মানুষকে কথা দিয়েছি, তাদের আর চোখের জল ফেলতে হবে না। ভাঙন এলাকার বিলীন হওয়া ভূমি ভরাট করে ক্ষতিগ্রস্তদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের উন্নয়নচিত্র তুলে ধরছি, উন্নয়ন পরিকল্পনার কথা বলছি, প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। আশা করছি ৮০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে আমি বিজয়ী হব।’