অল্প বয়সে বাবা–মা হারানো সায়মা জাহান বড় হয়েছেন খালার কাছে। ১৩ বছর বয়সে রক্তশূন্যতার লক্ষণ নিয়ে ডাক্তারের কাছে গেলে সায়মার থ্যালাসেমিয়া রোগ ধরা পড়ে। প্রথমবার তাঁকে একসঙ্গে চার ব্যাগ রক্ত নিতে হয়েছিল। হিমোগ্লোবিন ভালো থাকায় এরপর আর রক্ত নিতে হয়নি। এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর বিয়ে হয়ে যায়। দুই বছরের মাথায় গর্ভধারণ করেন সায়মা। তখন থেকে তাঁকে তিন–চার মাস পরপর এক ব্যাগ করে রক্ত নিতে হচ্ছে।
সুস্থভাবে জন্ম নেয় সায়মার কন্যাসন্তান। নাম রাখেন জান্নাতুল ফেরদৌসী। শিশুসন্তানকে নিয়ে পরিবারের সবার সীমাহীন আনন্দ। কিন্তু ছয় মাস বয়সে শিশুটির মধ্যে রক্তশূন্যতার নানা লক্ষণ দেখা দিতে শুরু করে। সন্তানের থ্যালাসেমিয়া রোগের আশঙ্কা আছে জেনেও বাবা-মা তা মেনে নিতে পারছিলেন না। জান্নাতুলের থ্যালাসেমিয়া রোগ ধরা পড়ে। এরপর থেকে প্রতি মাসে এক ব্যাগ করে রক্ত নিতে হচ্ছে তাকে।
সায়মার স্বামী ইব্রাহিম খলিল একটি পোশাক কারখানার কোয়ালিটি ডিপার্টমেন্টে চাকরি করতেন। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে চাকরি হারান। নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে যেন হঠাৎ করেই অভাবের ছায়া অন্ধকারে রূপ নেয়। স্ত্রী ও মেয়ের দুরারোগ্য ব্যাধি, সংসারের প্রাত্যহিক ব্যয়ের বোঝায় দিনগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে যায়। পরিস্থিতি সামলাতে তিনি ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন।
এমন দুঃসময়েই এই পরিবারের সহায়তায় এগিয়ে আসে থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশনের ‘জাকাত ফান্ড’। মা-মেয়ে দুজনেরই চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হচ্ছে জাকাত ফান্ড থেকে। সায়মা বলেন, ‘ফাউন্ডেশন থেকে আমরা সম্পূর্ণ ফ্রিতে চিকিৎসা পাচ্ছি। নিজেকে নিয়ে নয়, আমাদের সবকিছু এখন মেয়েটাকে ঘিরে। যদি মেয়ের ছোট ছোট চাওয়া পূরণ করতে পারি, সে যদি সুস্থ থাকে তাহলেই আমার শান্তি।’
প্রিয় পাঠক, বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশনের ‘জাকাত ফান্ডে’ আপনি আপনার জাকাত দান করে অসহায় থ্যালাসেমিয়া রোগীদের পাশে দাঁড়াতে পারেন।
১.
ব্যাংক অ্যাকাউন্টের নাম: বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশন (জাকাত ফান্ড)
অ্যাকাউন্ট নং: ১০৮১১০০০৩৭৭০৩, ডাচ্–বাংলা ব্যাংক, শান্তিনগর শাখা, ঢাকা।
অন্যান্য ব্যাংকে অ্যাকাউন্টের তালিকা দেখতে ভিজিট করুন।
দাতারা প্রতিষ্ঠানে গিয়েও থ্যালাসেমিয়া রোগীদের চিকিৎসার জন্য জাকাত দিতে পারবেন।
ঠিকানা: ৩০ চামেলীবাগ, শান্তিনগর, ঢাকা-১২১৭।
ফোন: ০২-৮৩৩২৪৮১, ০১৭৫৫-৫৮৭৪৭৯