ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথটি পুরো ডাবল লাইন হতে বাকি আখাউড়া-লাকসাম ৭২ কিলোমিটার রেলপথ। এ অংশ ডাবল লাইনে উন্নীত করতে চলতি বছরের মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে ঠিকাদার নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে বলে রেলওয়ে উন্নয়ন প্রকল্পের মহাব্যবস্থাপকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।
চিনকি আস্তানা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ৭১ কিলোমিটার ডাবল লাইনের পর গত বৃহস্পতিবার টঙ্গী থেকে ভৈরববাজার পর্যন্ত ৬৪ কিলোমিটার ডাবল লাইনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথটি সম্পূর্ণ ডাবল লাইন হলে ট্রেনগুলোকে চলাচলের জন্য যাত্রার মাঝখানের কোনো স্টেশনে দাঁড়িয়ে অপর দিক থেকে আসা অন্য কোনো ট্রেনকে ক্রসিং দিতে হবে না। এতে সময় কম লাগবে। আবার কোনো এক লাইনে অনাকাঙ্ক্ষিত ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটলে অন্য লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখা যাবে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথটি রেলওয়ের অন্যতম চাহিদাসম্পন্ন রেলপথ। এটি ট্রান্স-এশিয়া রেলওয়ে করিডরে যুক্ত হওয়ার আলোচনায় আছে। আন্তর্জাতিক যোগাযোগের মধ্যে আখাউড়া থেকে ভারতের ত্রিপুরার সঙ্গে যুক্ত হবে এই রেলপথ। তবে বাংলাদেশের আখাউড়া অংশে এখনো এই রেললাইন স্থাপনের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়নি।
পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথটি ৩২৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে ১১৮ কিলোমিটার ডাবল লাইন ছিল। ২০১১ সালে টঙ্গী-ভৈরববাজার পথে ৬৪ কিলোমিটার আর লাকসাম-চিনকি আস্তানা পর্যন্ত ৭১ কিলোমিটার রেলপথে ডাবল রেললাইন নির্মাণ শুরু হয়। গত বছরের ১৮ এপ্রিল ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লাকসাম-চিনকি আস্তানা ডাবল লাইনে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করেন। তখন থেকে এ অংশে ডাবল লাইনে ট্রেন চলাচল করছে। গত বৃহস্পতিবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী টঙ্গী-ভৈরববাজার রেলপথে ডাবল রেললাইন উদ্বোধন করেন।
যোগাযোগ করা হলে আখাউড়া-লাকসাম রেলপথের দায়িত্বে থাকা রেলওয়ের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আখাউড়া-লাকসাম রেলপথের বিদ্যমান রেললাইন বদল করা হয়েছে। ডাবল লাইনের কাজ চলতি অর্থবছরেই শুরু হবে। তিনি আরও বলেন, এই অংশে ডাবল লাইনের নির্মাণ শেষ হলে সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে পৌঁছাতে পাঁচ ঘণ্টা বা তারও কম সময় লাগবে। এখন সময় লাগে প্রায় ছয় ঘণ্টা। এ ছাড়া কোথাও দুর্ঘটনা ঘটলে ট্রেন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হবে না।
রেলওয়ে প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আখাউড়া রেলওয়ে পৌরসভা ও মোগড়া ইউনিয়নের কিছু জায়গা অধিগ্রহণ এবং রেলওয়ের সম্পত্তি দখলমুক্ত করতে হবে। একই অবস্থা লাকসাম পর্যন্ত একাধিক স্থানে। এ জন্য কার্যক্রম চলছে।
আখাউড়া পৌরসভার মেয়র তাকজীল খলিফা প্রথম আলোকে বলেন, পৌর এলাকায় জমি অধিগ্রহণের জন্য রেলওয়ের পক্ষে দুই দফায় যে চিঠি এসেছিল, তার অনুলিপি পৌরসভাকে দেওয়া হয়েছিল। এটি চলমান প্রক্রিয়া। রেলওয়ে পৌরসভার সহায়তা চাইলে নিয়ম অনুযায়ী সহায়তা করা হবে।
যোগাযোগ করা হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইন উন্নয়ন প্রকল্পের মহাব্যবস্থাপক মশিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আখাউড়া-লাকসাম ডাবল রেললাইন নির্মাণে শিগগিরই ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হবে। কাজটি দ্রুত শেষ করার পরিকল্পনা আছে। যেসব এলাকায় জমি অধিগ্রহণ প্রয়োজন, তা করার প্রক্রিয়াও শেষ পর্যায়ে।